নারী সংস্কার কমিশন ও মৈত্রীযাত্রার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন

প্রকাশ : ২২ মে ২০২৫, ১৮:৫৮ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল ও নারীর ডাকে মৈত্রী যাত্রার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) নারী শিক্ষার্থীরা। নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের পেশকৃত প্রস্তাবনার অধিকাংশই ইসলাম ধর্ম জাতিসত্তার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এটা নারীদের মর্যাদা খর্ব করে বলে আয়োজকরা মন্তব্য করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে ‘স্বরূপ ইসলামিক কালচারাল অর্গানাইজেশন’ ব্যানারে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

কর্মসূচিতে ‘নারী পুরুষ বাইনারি এই শর্তেই দেশ গড়ি’, ‘যৌনকর্মী স্বীকৃতি দান, মায়ের জাতির অপমান’, ‘সম অধিকার নয়, চাই ন্যায্য অধিকার’, ‘নারী পুরুষ একে অন্যের প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, সহযোগী’, ‘পতিতাবৃত্তিকে না বলি’, ‘সমতার নামে নারীর বিকৃতি চলবে না’, ‘নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল চাই, অপসংস্কৃতি চলবে না’, ‘স্যা নো টু এলজিবিটি অ্যাজেন্ডা’  ইত্যাদি স্লোগান দেন। প্রতিবাদ সমাবেশে এসব দাবি সম্বলিত ফ্যাস্টুন দেখা যায়।

নারী সংস্কার কমিশনের নিন্দা জানিয়ে আয়োজক জান্নাতুল সুমাইয়া সাফি বলেন, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের পেশকৃত প্রস্তাবনার অধিকাংশই ইসলাম ধর্ম জাতিসত্তার সাথে সাংঘর্ষিক। এটা নারীদের মর্যাদা খর্ব করে বলে তিনি দাবি করেন।

পতিতাবৃত্তিকে বৈধতা দিয়ে যৌনকর্মীদের শ্রমজীবী হিসেবে স্বীকৃতি ও মর্যাদা প্রদানের সুপারিশ  প্রকৃতপক্ষে সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়ের একটি ভয়ংকর ব্যবস্থা। ইসলাম ও সুস্থ সমাজ ব্যবস্থা পতিতাবৃত্তিকে পেশা হিসেবে মানে না বরং তা নির্মূল করে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করাই রাষ্ট্রের দায়িত্ব বলে জানান তিনি।

‘নারীর ডাকে মৈত্রী যাত্রার’ সমালোচনা করে সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী আদিবা সালেহা বলেন, মৈত্রী যাত্রায় অংশগ্রহণকারী সংখ্যাগরিষ্ঠ নারীর মধ্যে বাংলাদেশি সংখ্যাগরিষ্ঠ নারীর উপস্থিতি নেই। তারা এলজিবিটি’কে প্রমোট করছে। যা আমাদের মানবসম্প্রদায়ের জন্য একটা বিধ্বংসী মতবাদ।

অথচ ট্রান্সজেন্ডার ধারণা বিকৃত মানসিকতা থেকে উদ্ভূত, মানবকল্যাণেই যার বৈধতা নয় বরং চিকিৎসার প্রয়োজন বলে জানান তিনি।  

নারী সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ও প্রতিবেদন অবিলম্বে প্রত্যাহার করা; ধর্ম, সংস্কৃতি ও জনমতকে অবজ্ঞা করে গঠিত বর্তমান কমিশন বাতিল করে ধর্মীয় ও সামাজিক বাস্তবতায় বিশ্বাসী এবং দেশের অধিকাংশ জনগণের প্রতিনিধিত্ব করেন এমন প্রতিনিধিদের নিয়ে কমিশন পুনর্গঠন করা; পতিতাবৃত্তি নির্মূলের কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া, সংশ্লিষ্ট নারীদের মানবিক ও হালাল উপায়ে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা; ধর্মীয় বিধানসমূহকে সংবিধানের আলোকে রক্ষা করে নারী উন্নয়নের একটি ভারসাম্যমূলক ও সমাজবান্ধব রূপরেখা প্রণয়ন করার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে এই চার দফা দাবিও তুলে ধরেন তারা।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ১৮ নভেম্বর অন্তর্বর্তী সরকার ‘নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন’ গঠন করেন। এই কমিশনের লক্ষ্য আইনি, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কাঠামোয় নারীদের প্রতি বিদ্যমান বৈষম্য পর্যালোচনা কওে প্রাসঙ্গিক সংস্কার প্রস্তাবনা প্রণয়ন করা।

এদিকে, গত ১৬ মে সমতার দাবিতে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত হয় ‘নারীর ডাকে মৈত্রী যাত্রা’ কর্মসূচি।

 

আমার বার্তা/এল/এমই