আচার্যকে ছাড়াই আয়োজিত হতে যাচ্ছে কুবির ২য় সমাবর্তন
প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪:৫২ | অনলাইন সংস্করণ
কুবি প্রতিনিধি:

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) দ্বিতীয় সমাবর্তন আগামী ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। এ সমাবর্তনে ২০১৪-১৫ থেকে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন। তবে এই সমাবর্তনে কুবির আচার্য মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু উপস্থিত না থেকে তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে একজন উপদেষ্টা যোগ দিবেন বলে জানা গেছে।
গত ৭ সেপ্টেম্বর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী।
সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দেবেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০২০ সালের ২৭ জানুয়ারি। সে সমাবর্তনে ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এবার ২০১৪-১৫ থেকে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে ফার্মেসি বিভাগে স্নাতক সম্পন্ন করতে পাঁচ বছর সময় লাগায় ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ সমাবর্তনে থাকছেন না।
সমাবর্তনে আচার্য ও আন্তর্জাতিক বক্তা না থাকায় বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-২০১৮ বর্ষের শিক্ষার্থী মামুন মজুমদার বলেন, 'একটা সমাবর্তন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের জন্য বহুল প্রত্যাশিত একটা অনুষ্ঠান। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরের উপস্থিতিও সবাই প্রত্যাশা করে, তার পাশাপাশি সমাবর্তনে আন্তর্জাতিক মানের বক্তার উপস্থিতি অত্যন্ত জরুরি। তাদের বক্তব্য আমাদের শেখায় কীভাবে শিক্ষা, গবেষণা, এবং সৃজনশীলতাকে বিশ্বমানের সঙ্গে সংযুক্ত করা যায়।
এদিকে কুবির দ্বিতীয় সমাবর্তনে কোনো আন্তর্জাতিক মানের বক্তা না থাকার কারণেও শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। তারা মনে করছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ধরনের বড় আয়োজনে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন একজন বক্তার উপস্থিতি না থাকা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে তার অসম্মান। এছাড়াও তারা সমাবর্তনের সভাপতি হিসেবে প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতি চান।
পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৮-২০১৯ বর্ষের শিক্ষার্থী আজাহার মোল্লা বলেন, 'শিক্ষা জীবনের শেষ মুহূর্তে সমাবর্তন প্রতিটি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি স্মরণীয় দিন হয়ে থাকে। এমন একটি আয়োজনে আমরা প্রত্যাশা করি বিশিষ্ট গুনীজন অথবা দেশি-বিদেশি স্কলারের উপস্থিত থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা জীবনে এমন অনুষ্ঠান একবারই আসে। তাই এটাকে জীবনে উৎসাহ একটা মাধ্যম হিসেবে দেখা হয়। তাই আমরা প্রধান উপদেষ্টা বা বিদেশের একজন একাডেমিশায়ান কে চাই।
আইন বিভাগের ২০১৮-২০১৯ বর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রেজাউনুল ইসলাম গণি বলেন, 'আমাদের যখনই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যয়ন শেষ হয় তখন প্রত্যাকেরই একটা আশা থাকে রাষ্ট্রপতির সাথে দেখা করা, তার হাত থেকে মেডেল গ্রহন করা। কিন্তু আমরা দেখলাম যে আমাদের ২য় সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি আসতেছেনা। এজন্য অনেকের সমাবর্তন নিয়ে আশা-আকাঙ্ক্ষা অনেক কমে যায়। এখানে অনেকে হয়ত আসতেও চাইবে না। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকট আশা করবো আমাদের এই সমাবর্তনে প্রধান উপদেষ্টা বা রাষ্টপতিকে দাওয়াত দেওয়া। '
এসব বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী বলেন, “২০২০ সালে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম সমাবর্তন হয়েছিল। এরপর যারা উত্তীর্ণ হয়েছেন, তারা সবাই এবার দ্বিতীয় সমাবর্তনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবেন।” প্রধান উপদেষ্টা ও রাষ্ট্রপতির অনুমতি সাপেক্ষে আমরা এই সমাবর্তনের আয়োজন করেছি। রাষ্ট্রপতি উনার প্রতিনিধি পাঠাবেন বলে জানিয়েছেন। উনি কেন আসবেন না সেটা আমরা অবগত নই। আন্তর্জাতিক মানের বক্তার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী কাউকে পায়নি। আমরা চেষ্টা করবো। যদি ব্যবস্থা করতে না পারি তাহলে মনে হয় সমাবর্তন বন্ধ করে দিতে হবে।
আমার বার্তা/এমই