রাবিতে পোষ্য কোটা ইস্যুতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতি

প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮:৪৯ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটা ইস্যুতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। উপ-উপাচার্য, প্রক্টরসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের মাঝে দফায় দফায় ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবনে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার, শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আল শাহরিয়ার শুভসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদ ও বাতিলের দাবিতে দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে টায়ার পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানান। কিছুক্ষণ পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন প্রশাসন ভবন থেকে বেরিয়ে গাড়িতে উঠতে যান। এসময় শিক্ষার্থীরা অধ্যাপক মাঈন উদ্দীনের গাড়ি আটকে দেন এবং ‘শিক্ষা-ভিক্ষা একসাথে চলে না’ স্লোগানে উপ-উপাচার্যের গাড়ির ওপর টাকা ছুড়তে থাকেন। পরে উপ-উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহাবুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে বাসভবনের দিকে আসেন। শিক্ষার্থীরা উপ-উপাচার্যকে অনুসরণ করে মিছিল নিয়ে উপ-উপাচার্যের বাসভবনের গেইটে তালা ঝুলিয়ে দেন।

পরে বাসভবনে ঢুকতে না পেরে ফিরে আসেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন, প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান। একপর্যায়ে তারা জুবেরী ভবনের দিকে যান। শিক্ষার্থীরাও স্লোগান দিতে দিতে তাদের পেছনে যান। উপ-উপাচার্য ও প্রক্টর জুবেরী ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জের ভেতরে গেলে শিক্ষার্থীরা সেখানে গিয়েও স্লোগান দেন। পরে উপ-উপাচার্য জুবেরী ভবন থেকে আবার প্যারিস রোডে ফিরে আসেন। এসময় উপ-উপাচার্যের সাথে প্রক্টরসহ জুবেরী ভবন থেকে আরও কিছু শিক্ষক ও কর্মকর্তা বেরিয়ে আসেন। এক পর্যায়ে শিক্ষকরা আবার জুবেরী ভবনে ফিরে যেতে যান, এসময় রাস্তা থেকেই তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়।

এক পর্যায়ে জুবেরী ভবনের বারান্দায় আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক এবং ছাপাখানার এক কর্মকর্তা শিক্ষার্থীদের আটকানোর চেষ্টা করলে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এ সময় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীনকে চারপাশ থেকে আটকে দেন শিক্ষার্থীরা। পরে হাতাহাতির একপর্যায়ে উপ-উপাচার্য জুবেরী ভবনের দ্বিতীয় তলায় যেতে গেলে শিক্ষার্থীরা তাকে ভবনের দ্বিতীয় তলার বারান্দায় অবরুদ্ধ করে রাখেন। এরই মধ্যে সেখানে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক কামাল উদ্দিন, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদসহ কয়েকজন শিক্ষক উপস্থিত হন। এসময় শিক্ষকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বাকবিতন্ডা হয়।

ঘটনার একপর্যায়ে বিকেল ৫টার দিকে ঘটনাস্থলে আসে ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা। তারা এসে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে।

সন্ধ্যা ৬ টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা উপ-উপাচার্যাহ শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করছেন। জুবেরী ভবনের পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে আছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, ‘পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীরা উপ-উপাচার্য স্যারকে অবরুদ্ধ করে তাঁর বাসায় তালা ঝুলিয়ে দেয়। পরে আমরা জুবেরী ভবনের লাউঞ্জে বসি। সেখানে শিক্ষার্থীরা আবারও আমাদের বাধা দেয়। আমরা ফিরে গিয়ে পুনরায় আসার পর ভবনে ঢোকার চেষ্টা করলে তারা আবারও বাধা দেয়। এসময় ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে।’ ধাক্কাধাক্কির মধ্যে তার ঘড়ি ও অর্থ কেঁড়ে নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন তিনি।


আমার বার্তা/এমই