জকসু নির্বাচনে লড়ছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৩ শিক্ষার্থী
প্রকাশ : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:১২ | অনলাইন সংস্করণ
জবি প্রতিনিধি

আসন্ন ৩০ য়ে ডিসেম্বরের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে লড়ছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৩ মেধাবী শিক্ষার্থী।
জকসু কেন্দ্রীয় সংসদে স্বতন্ত্র থেকে জিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন বাঁধন জবি ইউনিটের সাবেক সভাপতি ও বিএনসিসি এর ক্যাডেট সার্জেন্ট উম্মে মাবুদা।তিনি সমাজকর্ম বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার মহারাজপুরের বাসিন্দা। তার ব্যালট নম্বর ০৮।
মাবুদা বলেন
"ক্যাম্পাসে প্রচারণার তেমন ফ্রুটফুল সিচুয়েশন ছিলো না। কোনো ন্যাশনাল মিডিয়া নাই। ব্যালট নং দেয় নির্বাচনের ১২ দিন আগে৷ ১৫ তারিখ থেকে প্রচারনা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ব্যালট নং দেওয়া হয়েছে ১৮ তারিখ। ১৯,২০ তারিখ শুক্রবার ও শনিবার। ২১-২৪ তারিখ ৪ দিন ক্যাম্পাস অন। ২৫ তারিখ ক্রিস্টমাস। ২৬,২৭ তারিখ আবারও শুক্রবার, শনিবার। নির্বাচনের আগে ২ দিন (২৮-২৯) তফসিল অনুযায়ী বন্ধ। টোটাল সময় পাওয়া যায় ৪ দিন৷ মানে এটা কি প্রহসন না? যাইহোক, এখানে পলিটিকাল মারপ্যাঁচ চলতেসে এতটুকু বুঝতেসি। আমরা সাধারণরা সবসময় সাধারণই থেকে যাই। মাথার উপর কারা যেন তাল ভেঙে খায়।
স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করে, মিডিয়া ফোকাস কম পাওয়া সত্ত্বেও সাড়া বেশ ভালো পেয়েছি। মানুষের জন্য ৪টা বছর ভলান্টারিজম করে গেছি৷ প্রতি মাসে ৩০/৪০/৫০ ব্যাগ করে ব্লাড ম্যানেজ করেছি। কখনও জকসু হবে ভেবে এসব করি নাই। ২টা সংগঠনে নেতৃত্ব দিসি। এখন আসলে বাকিটা ভোটারদের ইভ্যালুয়েশন। সর্বোপরি, শিক্ষার্থী সংসদ শিক্ষার্থীদের জন্যই হওয়া উচিত, কোনো পলিটিকাল পার্টির আতুড়ঘর হওয়ার জন্য না।"
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে কেন্দ্রীয় সংসদে স্বতন্ত্র থেকে নির্বাহী সদস্য প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন মো.সিহাব আলী,
তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ গোমস্তাপুর উপজেলার নয়াদিয়াড়ী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী। তার ব্যালট নম্বর ২৭।
সিহাব বলেন
"জুলাই গণঅভ্যুত্থান, লং মার্চ টু যমুনা, সচিবালয়, শিক্ষাভবন ঘেরাও,হল আন্দোলন সহ দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসের নানা আন্দোলন সংগ্রাম ও শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলাম,আছি ও ভবিষ্যতেও থাকবো ইনশাআল্লাহ। "
সিহাব বিশ্ববিদ্যালয় ও এর বাইরের বিভিন্ন সংগঠন যেমন বিএনসিসি এর ক্যাডেট কর্পোরাল, বাঁধনের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সবার দেশ পত্রিকার ক্যাম্পাস রিপোর্টার,বিডি ক্লিন পুরান ঢাকা জোন,ক্যারিয়ার ক্লাব,মুট কোর্ট সোসাইটি, বসুন্ধরা শুভসংঘ,রেড ক্রিসেন্ট ইয়ুথ,ঢাকা জেলা, কনসার্স কনজুমার্স সোসাইটি এর
সদস্য হিসেবে কাজ করছেন।
সিহাব আরও বলেন,
"বিভিন্ন সংগঠনের
সাথে যুক্ত থাকার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে জবিয়ানদের সমস্যা সমাধান করব ইনশাআল্লাহ। এছাড়া আমি এখন পর্যন্ত কোন ধরনের রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত না থাকায় দলীয় সিদ্ধান্ত ও চাপের বাইরে থেকে শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করে যেতে চায়।"
তিনি আরো বলেন" ৩০ ডিসেম্বর জকসু নির্বাচন,স্বতন্ত্র থেকে আমার অগাধ টাকা ও কর্মী না থাকলেও সততা ও ভলেন্টিয়ার কাজ করার মানসিকতা আছে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে খুব ভালোই সাড়া পাচ্ছি, আসা করি প্যানেল দেখে ভোট নয়, যোগ্যতাই হোক পরিচয় এই ম্যান্ডেটকে সামনে রেখে শিক্ষার্থীরা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে"
এছাড়া জকসুর হল সংসদ নির্বাচনে নির্বাহী সদস্য পদে শিবির সমর্থিত অদম্য জবিয়ান ঐক্য প্যানেল থেকে লড়ছেন শিবগঞ্জের সায়মা খাতুন। তিনি ২০২৩-২৪ সেশনের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী।
সায়মা বলেন,
"রক্ত দিয়ে জুলাই কেনা,
জুলাই মানে মুক্তি,
স্বৈরাচারের পতন করা,
ভালো থাকার চুক্তি,
মেয়েরা নির্ভয়ে,নিশ্চিন্তে ক্যারিয়ার ও দেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে পারে, হলে এমন একটি সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করাই আমার অঙ্গীকার "
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব চাঁপাইনবাবগঞ্জ এর সভাপতি আসিফ ইসলাম বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও হল সংসদ নির্বাচনে চাঁপাইনবাবগঞ্জের তিনজন শিক্ষার্থী প্রার্থী হওয়াটা আমাদের জেলার জন্য গর্ব ও আনন্দের বিষয়। দেশের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ এ নির্বাচনে আমাদের শিক্ষার্থীরা অংশ নিচ্ছে। এটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা, মেধা ও নেতৃত্বের প্রতি আস্থার প্রতিফলন। তাদের এ পদচারণা ভবিষ্যতের জাতীয় নেতৃত্ব গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। আমি প্রত্যাশা করি তারা জেলার সুনাম অক্ষুণ্ন রেখে সৎ ও যোগ্য নেতৃত্বের দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।”
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব চাঁপাইনবাবগঞ্জ এর সাধারন সম্পাদক রায়হান ইসলাম বলেন
“ দীর্ঘ ৩৮ বছর পর জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তাই শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস ও উৎসাহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এবারের জকসু নির্বাচনে সকল শিক্ষার্থী প্রথমবারের মত ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। নতুন প্রজন্মের ভোটাররা আগ্রহের সঙ্গে অংশগ্রহণ করতে প্রস্তুত। আশা করি, এই নির্বাচন শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণতান্ত্রিক চেতনা জাগ্রত করবে এবং সুষ্ঠু ও প্রাণবন্ত নির্বাচন হবে।”
