ডিএনসি নিয়োগ পরীক্ষায় স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণে উল্লেখযোগ্য সাফল্য
প্রকাশ : ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৬:০৮ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) নিয়োগ পরীক্ষায় স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণে উল্লেখযোগ্য সাফল্য - উচ্চ প্রযুক্তির জালিয়াতি প্রচেষ্টা ব্যর্থ
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) দেশের যুবসমাজকে মাদকের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা ও অবৈধ মাদক নির্মূলে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এই লড়াইয়ের অন্যতম ভিত্তি হলো মাঠপর্যায়ের কর্মীবাহিনী - সিপাহী ও ওয়্যারলেস অপারেটরগণ, যারা ডিএনসি’র কার্যক্রমের অন্যতম চালিকা শক্তি। শূন্যপদ পূরণের মাধ্যমে ডিএনসির কার্যক্রম আরও সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে ৬ আগস্ট ২০২৫ খ্রি. তারিখে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) কর্তৃক সিপাহী (১৭তম গ্রেড) পদে ১০৫টি এবং ওয়্যারলেস অপারেটর (১৮তম গ্রেড) পদে ১২টি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সিপাহী পদে প্রায় ২৬,০০০ জন এবং ওয়্যারলেস অপারেটর পদে প্রায় ১১,০০০ জন প্রার্থী আবেদন করেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন ধাপে অনুষ্ঠিত শারীরিক ফিটনেস এবং প্রিলিমিনারি (MCQ) পরীক্ষায় সিপাহী পদে ১,১৫৪ জন এবং ওয়্যারলেস অপারেটর পদে ১২৬ জন প্রার্থী লিখিত পরিক্ষায় অংশগ্রহনের জন্য উত্তীর্ণ হন। ১৮ অক্টোবর ২০২৫ খ্রি. (শনিবার) অনুষ্ঠিত লিখিত পরীক্ষায় সিপাহী পদে ১,০৮২ জন এবং ওয়্যারলেস অপারেটর পদে ১২৪ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। এই পরীক্ষায় অনিয়মের কারণে মোট ১৮ জন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়।
ডিএনসি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বজায় রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতিটি পরীক্ষার ফলাফল একই দিনে প্রকাশ করা হয়, যাতে প্রার্থীদের মধ্যে আস্থা ও ন্যায্যতার পরিবেশ নিশ্চিত থাকে। পাশাপাশি, পরীক্ষার পুরো সময়জুড়ে যেকোনো ধরনের অসদাচরণ বা অনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে উচ্চ প্রযুক্তির সাহায্যে গোয়েন্দা নজরদারি কার্যক্রম জোরদার করা হয়।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ডিএনসি কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার আগেই একটি সংঘবদ্ধ চক্রকে শনাক্ত করে তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণে রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় পরীক্ষাকেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে ৫ জন প্রার্থীকে প্রযুক্তিনির্ভর প্রতারণার সরঞ্জামসহ এবং ১৩ জন প্রক্সি পরীক্ষার্থীকে হাতে-নাতে আটক করা হয়। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক ঘটনাস্থলেই মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে অভিযুক্তদের বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ড প্রদান করা হয়।
উদ্ধারকৃত ডিভাইসগুলো ছিল অত্যাধুনিক স্পাই কমিউনিকেশন ডিভাইস, যা দুটি অংশে বিভক্ত—
১) ইয়ারপিস মাইক্রোফোন: এটি প্রার্থীর কানের ভেতরে স্থাপন করা হয়, যার আকার ৮৫ x ৫০ x ৪.৫ মিলিমিটার এবং ওজন প্রায় ১৮.১ গ্রাম। এটি এক চার্জে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সক্রিয় থাকে।
২) জিএসএম কার্ড (ক্রেডিট কার্ড আকারের ডিভাইস): এই অংশে একটি জিএসএম ডিভাইস ও সিম কার্ড স্থাপন করা থাকে, যা ৮-১০ ফুট দূরত্ব পর্যন্ত ইয়ারপিসের সঙ্গে ব্লুটুথের মাধ্যমে সংযুক্ত থেকে দুই-দিকের গোপন কথোপকথন সম্ভব করে। ডিভাইসটি চালু করার পর মোবাইল বা টেলিফোন থেকে কল করলে এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কল গ্রহণ করতে পারে, ফলে পরীক্ষার্থী বহিরাগত সাহায্য নিতে সক্ষম হয়।
ডিএনসি’র এই পদক্ষেপ প্রমাণ করে যে, প্রতিষ্ঠানটি নিয়োগ পরীক্ষায় দুর্নীতি ও প্রতারণার বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা নীতি অনুসরণ করছে। পরীক্ষার প্রতিটি ধাপে প্রযুক্তি ব্যবহারের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি ও মাঠপর্যায়ের তৎপরতা নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা ও ন্যায়পরায়ণতা আরও সুদৃঢ় করেছে।
ডিএনসি দৃঢ়ভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যে, ভবিষ্যতের সকল নিয়োগ কার্যক্রম একইভাবে স্বচ্ছ, ন্যায্য এবং জালিয়াতিমুক্তভাবে সম্পন্ন করা হবে।
আমার বার্তা/এল/এমই