মিরপুরে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে মানুষের ঢল, ঘাতকদের বিচার দাবি

প্রকাশ : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩:৪৫ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় জাতি স্মরণ করেছে সূর্যসন্তানদের। দিবসটি উপলক্ষে রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) ভোর থেকেই মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও মিছিল নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন।

শ্রদ্ধা নিবেদনকালে তারা বলেন, ১৯৭১ সালের ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ডে জড়িত ঘাতক ও তাদের দোসরদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে এখনও যারা তাদের দোসর হিসেবে সক্রিয় রয়েছে, তাদের অপতৎপরতা বন্ধ করার দাবি জানান তারা।

দেশের ও জাতির শত্রুরা সুযোগ পেলে ঘাতকরা আবারও আঘাত হানতে পারে—তাই তাদের প্রতিহত করা জরুরি বলে জানান বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষেরা।

সকাল সাড়ে ৯টার দিকে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, আমান উল্লাহ আমান, আমিনুল হক, সানজিদা তুলি ও শফিকুল ইসলাম মিল্টনসহ অন্যান্য নেতারা।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মির্জা ফখরুল বলেন, “বাংলাদেশ যখন একটি নতুন অধ্যায়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখছে, ঠিক সেই সময়ে দেশের শত্রুরা হত্যাকাণ্ডে মেতে উঠেছে।” তিনি শহীদ বুদ্ধিজীবীদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম নেতাকর্মীদের নিয়ে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব, উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ও জাতীয় যুবশক্তির আহ্বায়ক তারিকুল ইসলামসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।

নাহিদ ইসলাম বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করেই তারা এগিয়ে যেতে চান। ১৯৪৭, ১৯৭১ ও ২০২৪—সব ঐতিহাসিক লড়াই ও সংগ্রামকে স্বীকৃতি দিয়ে একটি নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।

বেলা ১১টার দিকে জাতীয় পার্টির মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় দলের কেন্দ্রীয় নেতা সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

তিনি বলেন, “শহীদ বুদ্ধিজীবীরা ছিলেন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করতে বিজয়ের প্রাক্কালে পরিকল্পিতভাবে তাদের হত্যা করা হয়েছিল। জাতি চিরকাল তাদের স্মরণ করবে।”

এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তাদের মধ্যে ছিলেন- বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)-এর সভাপতি সাজ্জাদ জহির চন্দন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)-এর সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, বাসদ (মার্কসবাদী)-এর সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণসংহতি আন্দোলন, নাগরিক ঐক্য ও বাংলাদেশ বিপ্লবী পার্টির নেতাকর্মীরা।

অন্যান্যদের মধ্যে জাতীয়তাবাদী যুবদল, মহিলা দল, কৃষক দল, শ্রমিক দল, ছাত্রদল, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব), বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, জাতীয় ছাত্র শক্তি, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি এবং বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)-সহ বিভিন্ন সংগঠন মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

এদিকে, রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানেও সর্বস্তরের মানুষ ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

আমার বার্তা/জেএইচ