রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৃথক পাহাড় ধসে মৃত বেড়ে ১০
প্রকাশ : ১৯ জুন ২০২৪, ১৬:৫০ | অনলাইন সংস্করণ
অনলাইন ডেস্ক:

কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা আশ্রয় কেন্দ্র সংলগ্ন পাহাড়ে পৃথক পাঁচটি ভূমিধসের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১০ জনে দাঁড়িয়েছে। তাদের মধ্যে দুজন স্থানীয় বাসিন্দা এবং আটজন রোহিঙ্গা।
পাহাড় ও সাগরসমৃদ্ধ জেলা কক্সবাজারে মঙ্গলবার রাত থেকে টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। কখনও ভারী, আবার কখনও মাঝারি মাত্রার বৃষ্টি ঝরছে। টানা বৃষ্টির প্রভাবে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাঁচটি স্থানে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রাণ হারিয়েছে ১০ জন। তাদের মধ্যে দুজন স্থানীয় বাসিন্দা ও অপর আটজন রোহিঙ্গা।
মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত উখিয়ার ১, ৮, ৯, ১০ ও ১৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসের এসব ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মিজানুর রহমান।
এর মধ্যে ১, ৮ ও ১৪ নম্বর ক্যাম্পে একজন করে; ৯ নম্বর ক্যাম্পে তিনজন এবং ১০ নম্বর ক্যাম্পে চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
১০ নম্বর ক্যাম্পে মৃতরা হলেন- ব্লক ১০ এর আবুল কালামের ছেলে আবু মেহের, লাল মিয়ার ছেলে আবুল কালাম, মতিউর রহমানের মেয়ে সলিমা খাতুন ও শরিফ হোসেনের মেয়ে জয়নব বিবি।
৯ নম্বর ক্যাম্পে পাহাড় ধসে মৃতরা হলেন- চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার কেরানীহাট এলাকার আলী জহুরের ছেলে মো. হোসেন আহমেদ, ওই ক্যাম্পের আই ৪ ব্লকের আলী জোহারের মেয়ে আনোয়ারা বেগম ও আই ৯ ব্লকের মো. জামালের ছেলে মো. সালমান।
৮ নম্বর ক্যাম্পে মারা যায় হারেজ নামে চার বয়সী এক শিশু।
১৪ নম্বর ক্যাম্পে মারা যায় উখিয়ার থাইংখালী এলাকার শাহ আলমের ছেলে আব্দুল করিম। ১২ বছর বয়সী শিশুটি থাইংখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র।
১ নম্বর ক্যাম্পে মারা যান এফ/৫ ব্লকের সুলতান আহমদের মেয়ে পুতনী বেগম।
আরআরআরসি মিজানুর রহমান জানান, বুধবার সকাল ৬টায় ১০ নম্বর ক্যাম্পের বক্ল সি ৩ তে পাহাড় ধসে মাটি চাপা পড়ে চারজনের মৃত্যু হয়। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করে চারজনের মরদেহ উদ্ধার করে।
মঙ্গলবার রাত ৩টায় ৯ নম্বর ক্যাম্পের আই ৪-এ পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। ওখানে উদ্ধার করা হয় তিনজনের মরদেহ।
বুধবার ভোর ৪টার দিকে ৮ ও ১৪ নম্বর ক্যাম্পে পাহাড় ধসে মারা যায় আরও দুজন।
প্রায় একই সময়ে ১ নম্বর ক্যাম্পে পাহাড় ধসে মারা যান একজন।
পাহাড় ধসের পৃথক এসব ঘটনায় কেউ আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
আরআরআরসি জানান, মারা যাওয়া দশজনের মধ্যে দুজন স্থানীয় বাসিন্দা। তাদের মধ্যে ৯ নম্বর ক্যাম্পে মারা যাওয়া চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার হোসেন আহমেদ নানা কারণে ক্যাম্পে অবস্থান করতেন। আর ১৪ নম্বর ক্যাম্পে মারা যাওয়া আব্দুল করিমদের বাড়ি ১৪ নম্বর ক্যাম্পের পাশেই।
ইতোমধ্যে উদ্ধার তৎপরতা শেষ হয়েছে জানিয়ে মিজানুর রহমান জানান, ক্যাম্পে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পাহাড়ের ঢালে বসবাসকারীদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে। আরও কেউ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাদেরও সরিয়ে নেয়া হবে।
এদিকে কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের উপ-সহকারী পরিচালক তোফায়েল আহমদ জানিয়েছেন, মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে ৬৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
আর টেকনাফে মাত্র ৬ ঘণ্টায় ৫৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ডেরে তথ্য জানিয়েছেন স্থানীয় আবহাওয়া অফিসের দায়িত্বরত ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম। তিনি জানান, বুধবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই ৫৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।
আমার বার্তা/এমই