শরীয়তপুরে বিএনপি কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা
প্রকাশ : ১৩ জুন ২০২৫, ১৭:১২ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন

শরীয়তপুরের নড়িয়ায় পূর্ব শত্রুতার জেরে আবু সিদ্দিক ঢালী (৫৫) নামে বিএনপির এক কর্মীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ রয়েছে, সাবেক আইজিপি শহিদুল হক ও তার ভাই সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ইসমাইল হকের লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
শুক্রবার (১৩ জুন) সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার ভোজেশ্বর ইউনিয়নের চান্দনি এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
নিহতের পরিবার, স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চান্দনী এলাকার আবু সিদ্দিক ঢালী ও তার পরিবার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তার ভাই জুলহাস ঢালী ভোজেশ্বর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি। সিদ্দিক ঢালীর সঙ্গে একই এলাকার মিন্টু ছৈয়াল ও তার লোকজনের বিরোধ রয়েছে। মিন্টু ছৈয়াল সাবেক আইজিপি শহিদুল হক ও তার ভাই সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ইসমাইল হকের অনুসারী। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ি ফেরার পথে মিন্টু ছৈয়াল ও তার লোকজন আবু সিদ্দিক ঢালীর ওপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালান। এ সময় হামলাকারী তাকে কুপিয়ে জখম করলে একপর্যায়ে তিনি প্রাণ বাঁচাতে পুকুরে ঝাঁপ দেন। তবে সেখানেও শেষ রক্ষা হয়নি, তিনি সাঁতরে অপর পাশ গিয়ে উঠলে সেখানেও তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করা হয়। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। এরপর শুক্রবার সকালে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
নড়িয়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক শরিফ ওয়াহিদুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, হামলাকারীদের নেতৃত্বদানকারী মিন্টু ছৈয়াল একসময় আওয়ামী লীগের দোসর সাবেক আইজিপি শহিদুল হক ও তার ভাই ইসমাইল হকের পালিত ক্যাডার বাহিনীর সদস্য ছিলেন। আওয়ামী লীগের পতনের পর বিএনপির একটি গ্রুপের ছত্রছায়ায় আধিপত্য বিস্তার ধরে রাখেন। তারাই এ পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে। আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, অপরাধী যেই দলের হোক না কেন তাদের সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাই।
নিহতের ভাই ও ভোজেশ্বর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি জুলহাস ঢালী অভিযোগ করে বলেন, আমার ভাই চান্দনী নদীরপাড় থেকে বাসায় ফিরছিল। একপর্যায়ে মিন্টু ছৈয়ালের বাড়ির সামনে আসলে তার লোকজন আমার ভাইয়ের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় এবং কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে তিনি আজ মারা যায়। যারা আমার ভাইকে হত্যা করেছে তাদের আমরা ফাঁসি চাই।
নিহতের মা আমিরন বিবি বলেন, আমার ছেলেদের মধ্যে আবু সিদ্দিক সহজসরল প্রকৃতির ছিল। যারা আমার ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে তাদের কঠিন বিচার চাই। যাতে আমার মতো আর কারো মায়ের বুক খালি না হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নড়িয়া সার্কেল) ড. আশিক মাহমুদ বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
আমার বার্তা/জেএইচ