বীরগঞ্জে ভাঙা সেতুর উপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছেন শতাধিক পরিবার
প্রকাশ : ১০ জুলাই ২০২৫, ২১:২১ | অনলাইন সংস্করণ
মোঃ নুর আলম, বীরগঞ্জ প্রতিনিধি (মাল্টিমিডিয়া):

দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার নিজপাড়া ইউনিয়নের বলরামপুর মন্ডলপাড়ায় অবস্থিত ঢেপা নদীর ওপর নির্মিত একমাত্র সেতুটি বর্তমানে চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
২০১২ সালে নির্মিত এই সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অংশ দেবে গেছে এবং ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। স্থানীয় প্রায় ৮০টি পরিবারের চার শতাধিক মানুষ প্রতিদিন এই সেতুটি ব্যবহার করেন। এছাড়াও প্রায় ৫০০ একর ফসলি জমির কৃষিপণ্য পরিবহনের একমাত্র মাধ্যম এই সেতু।
স্থানীয় বাসিন্দা আবু বক্কর সিদ্দিক (৬০) বলেন, প্রতিদিন এই ভাঙা সেতু দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছি। কৃষিপণ্য বাজারে নিতে সমস্যা হয়। যদি দুর্ঘটনা ঘটে, তার দায় কে নেবে?
একই এলাকার বাসিন্দা আঞ্জুআরা বেগম (৫৫) বলেন, স্কুলের ছোট ছোট বাচ্চারা এই ভাঙা সেতু দিয়ে পারাপার হয়। বৃষ্টি হলে ভয় আরও বেড়ে যায়। আমরা অনেকবার চেয়ারম্যান এবং মেম্বারকে জানিয়েছি।
নয়ন ইসলাম (১৯), স্থানীয় কলেজছাত্র বলেন, এই সেতু আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এখন এমন অবস্থায় আছে যে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমরা দ্রুত নতুন সেতু নির্মাণের দাবি জানাই।
এ বিষয়ে বলরামপুর দাখিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. মমতাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের মাদ্রাসার অনেক শিক্ষার্থী প্রতিদিন এই ভাঙা সেতু দিয়ে যাতায়াত করে। বিশেষ করে বর্ষাকালে সেতুটি আরও বিপজ্জনক হয়ে পড়ে। আমরা সবসময় আতঙ্কে থাকি-না জানি কখন দুর্ঘটনা ঘটে যায়। অভিভাবকরাও চিন্তিত থাকেন। দ্রুত সেতুটি সংস্কার বা পুনঃনির্মাণ হলে শিক্ষার্থীরা নিরাপদে মাদ্রাসা, স্কুলে ও কলেজ যাতায়াত করতে পারবে।
নিজপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান আনিস বলেন,আমি এ বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা প্রশাসন এবং উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা সভায় একাধিকবার জানিয়েছি যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। লিখিতভাবে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও এলজিইডিকে প্রকৌশলী কে জানানো হবে। আমি সবসময় জনগণের পাশে আছি এবং নিরাপত্তা ঝুঁকি এড়াতে সতর্ক থাকার অনুরোধ করছি।
উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি), বীরগঞ্জ জিবরীল আহমেদ বলেন, বলরামপুর মন্ডলপাড়ার ঢেপা নদীর ওপর সেতুটি সম্পর্কে আমাদের অফিসে এখনো পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। তবে যতটুকু জেনেছি, এই সেতুটি এলজিইডির আওতাভুক্ত নয় এবং এটি স্থানীয়ভাবে, সম্ভবত ২০১২ সালে তৎকালীন চেয়ারম্যানের উদ্যোগে নির্মিত হয়েছিল। এ কারণে আমাদের সরাসরি কোনো হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই। তবুও স্থানীয় প্রশাসনের চাহিদা বা নির্দেশনার ভিত্তিতে যদি কোনো প্রকৌশল সহায়তা প্রয়োজন হয়, আমরা অবশ্যই সহায়তা করতে প্রস্তুত।
স্থানীয়দের দাবি, এই সেতুটি দ্রুত মেরামত বা পুনঃনির্মাণ না হলে যে কোনো সময় বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে।