ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে ধানের শীষে মনোনয়ন প্রত্যাশী শিপন
প্রকাশ : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪:৪১ | অনলাইন সংস্করণ
সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে সাংবাদিক ও জনতার মুখোমুখি শীর্ষক আলোচনা সভা করেছেন টীম লিডার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা নতুন সদস্য সংগ্রহ ও সদস্য নবায়ন কার্যক্রম-২০২৫ সদস্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপি এবং অরুয়াইল আব্দুস সাত্তার ডিগ্রি কলেজ সভাপতি আহসান উদ্দিন খান শিপন।
তিনি আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি'র) ধানের শীষে মনোনয়ন প্রত্যাশী।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সরাইল জেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে এ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন মোহাম্মদ জামাল। অনুষ্ঠানে স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিক এবং বিভিন্ন চ্যানেল ও মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সুধীজন উপস্থিত ছিলেন।
সভায় আহসান উদ্দিন খান শিপন বলেন, বিগত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল কর্তৃক এই সংসদীয় আসনে দলের প্রাথমিক মনোনয়ন প্রাপ্ত এবং রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক বৈধ ঘোষিত প্রার্থী ছিলাম। পরবর্তীতে দলীয় সিদ্ধান্তে চূড়ান্ত মনোনয়ন প্রাপ্ত প্রার্থীর পক্ষে এই সরাইল-আশুগঞ্জ এলাকায় কাজ করেছি এবং দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করতে আমরা সক্ষম হয়েছিলাম।
এ সময় তিনি সরাইল-আশুগঞ্জকে নতুন করে সাজাতে ২৯ দফা উন্নয়ন পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন , সরাইল ও আশুগঞ্জ দুটি প্রেসক্লাব ভবন নির্মাণ, কুট্টাপাড়া মাঠকে পূর্ণাঙ্গ আধুনিক মানের স্টেডিয়ামে রূপান্তর এবং আশুগঞ্জে একটি আধুনিক স্টেডিয়াম নির্মাণ, ফুটবলসহ অন্যান্য খেলাধুলার উন্নয়নে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করা, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ করে প্রতিটি ঘরে ঘরে নিশ্চিত করা, জাতীয় গ্রীডে সরাইল ও আশুগঞ্জের বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ করা। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে সরাইল-আশুগঞ্জ সীমানায় প্রস্তাবিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপন, আধুনিক ও প্রযুক্তি-নির্ভর কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা। নতুন প্রকল্প গ্রহণ করে সড়ক ব্যবস্থাকে উন্নত করা। অরুয়াইল নদীবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন নদীবন্দরে রূপান্তরিত করা। সরাইল ও আশুগঞ্জে আধুনিক গণগ্রন্থাগার নির্মাণ, আশুগঞ্জ আন্তর্জাতিক নদীবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের বাণিজ্যিক নদীবন্দর হিসেবে গড়ে তোলা। কওমি ও আলিয়া শিক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিক যুগের চাহিদা অনুযায়ী প্রস্তুত। মসজিদ-মাদরাসার ইমাম, মোয়াজ্জিন ও আলেম-ওলামাদের সম্মানজনক বেতন/হাদিয়া নিশ্চিত করা। পাশাপাশি সকল ধর্মাবলম্বীর ধর্মীয় স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা রক্ষা করে সরাইল-আশুগঞ্জকে সম্প্রীতির মডেল অঞ্চলে রূপান্তর। মাদকমুক্ত সমাজ গঠন ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি, নারী শিক্ষার প্রসারে মহিলা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে যুগোপযোগী ও মানসম্মতভাবে গড়ে তোলা। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান রক্ষা ও প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা। বিগত ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন ও জুলাই বিপ্লবের শহীদদের স্মৃতি প্যাণে এবা আন্দোলনকারীদের প্রাপ্য সম্মান দেওয়া। আশুগঞ্জকে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন আন্তর্জাতিক মানের বন্দর নগরী হিসেবে গড়ে তোলা। বিশ্বরোড ফ্লাইওভার এবং ভৈরব সেতুর আশুগঞ্জ অংশ থেকে সোহাগপুর অঞ্চলকে শিল্পাঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলা। আশুগঞ্জ থেকে সরাইলের পানিশ্বর, আজবপুর, পাকশিমুল, অরুয়াইল পর্যন্ত বেড়িবাধ নির্মাণ, সরাইল এবং আশুগঞ্জ অঞ্চলে তিতাস নদী খনন করে নৌ-রোড চালু রাখা। আশুগঞ্জে সবুজ প্রকল্প আবার চালু করা। সরাইল টু অরুয়াইল পর্যন্ত রাস্তাটি আরো প্রশস্তসহ আধুনিক ভাবে নির্মাণ, মলাইশ থেকে শাহজাদাপুরের সড়কটি পরিবেশ উপযোগী হিসেবে নির্মাণ, সরাইল ও আশুগঞ্জের কৃষক, শ্রমিক, মেহনতি মানুষ এবং ব্যবসায়ি সম্প্রদায়ের অধিকার নিশ্চিত করা। যুব সমাজের কর্ম সংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সরাইল ও আশুগঞ্জের আন্তর্জাতিক মানের ইপিজেড নির্মাণ, সরাইল ও আশুগঞ্জকে নিরাপদ ও আধুনিক মানবিক জনপদে রূপান্তর করা, শিক্ষার মান উন্নয়নকল্পে শিক্ষকদেরকে উন্নত প্রশিক্ষণ দেওয়া ও মর্যাদা সমন্ন করা, সরকারি হাসপাতালকে ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক হাসপাতালে রূপান্তর করা। জনগণের চাহিদা অনুযায়ী রাজনৈতিক ও সামাজিক সৌহার্দ পূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে একটি নতুন শান্তিময় সমাজ বিনির্মাণ করা।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় এবং আমি যদি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হই তাহলে জনগণের চাহিদা অনুযায়ী আমার পরিগল্পনা সমূহ ব্যায়বায়নের লক্ষ্যে জনগণকে সাথে নিয়েই কাজ করবো, ইনশাআল্লাহ।
উল্লেখ্য, ঐতিহ্যবাহী সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের নোয়াগাঁও খান বাড়ি'র (পাঠান বাড়ি) সন্তান। তিনি ছেলেবেলা পুরোটা সময়ই এই সরাইল অঞ্চলের মাটি ও মানুষের সাথে কেটেছে। প্রাথমিক শিক্ষা জীবন, নোয়াগাঁও পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক শিক্ষা জীবন কালিকচ্ছ পাঠশালা উচ্চ বিদ্যালয়, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা, সরকারি তোলারাম কলেজ, নারায়ণগঞ্জ, অনার্স ও মাষ্টার্স, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। নোয়াগাঁও ইউনিয়ন-ছাত্রদলের সদস্য হয়ে আমার রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার শুরু ১৯৯০ সাল থেকে। স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে স্কুলে পড়াকালীন সময়েই ছাত্রদলের সদস্য হয়ে মিছিল ও মিটিং এ অংশগ্রহণ করেন।
পরবর্তীতে কলেজ ছাত্রদল এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে তিনি সম্পৃক্ত হই। শুরুতে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজ বিভাগের ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হই (১৯৯৪), এরপর পর্যায়ক্রমে, কবি জসিম উদ্দিন হল শাখা ছাত্রদলের (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হই (১৯৯৯), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সদস্য, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-ক্রীড়া সম্পাদক, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাংস্কৃতিক সম্পাদক, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সমাজ সেবা সম্পাদক, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপিতে এই পর্যন্ত তিনবার সদস্য নির্বাচিত হয়েছে। সরাইল উপজেলা বিএনপিতেও তিনবার সদস্য নির্বাচিত হয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্দেশে দলের বিভিন্ন পর্যায়ে সাংগঠনিক কাজ জেলার টীম লীডারের দ্বায়িত্ব পালন করছে। বর্তমানে দেশব্যাপী বিএনপির নতুন সদস্য সংগ্রহ ও সদস্য নবায়ন কার্যক্রম, ২০২৫, ব্রাহ্মণবাড়িয়া তিনি রাজনৈতিক জীবন কখনোই কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না।
রাজনীতির কন্ঠক পথ বেয়ে দীর্ঘ ৩১ বছর যাবৎ জেল-জুলুম, হুলিয়া, নানাবিধি নির্যাতন সহ্য করে ছাত্র রাজনীতি শেষে এখন বিএনপির রাজনীতিতে তিনি স্বত্রিয় আছে। একেবারে তৃণমূলের সাধারণ পরিবার থেকে উঠে আসা আপনাদেরই সন্তান। সাধারণ মানুষের দুঃখ, কষ্ট, বেদনা এবং স্বপ্ন পূরণের আগ্রহ ও চেষ্টা দেখে দেখে তিনি বড় হয়েছে। তিনি সাধারণ মানুষের মৌলিক প্রত্যাশা পূরণের লক্ষ্যে দীর্ঘ সময় ধরে রাজনীতি করে যাচ্ছে। স্বাধীনতার মহান ঘোষক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বীর উত্তম, আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বলেছেন "জনগণ যদি কোনো রাজনৈতিক দল হয় আমি সেই রাজনৈতিক দলের কর্মী"। তিনি শহীদ জিয়ার রাজনৈতিক আদর্শের একজন কর্মী হিসেবে আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছে এবং আপনাদের কর্মী হিসেবে। বাংলাদেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা, বাংলাদেশের প্রথম মহিলা সরকার প্রধান, তিন তিন বারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী, আপোষহীন মজলুম দেশনেত্রী, বেগম খালেদা জিয়ার আদর্শিক রাজনীতির সারথী হয়ে কাজ করছে দীর্ঘদিন ধরে। প্রিয়নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের নির্দেশে, এই সরাইল-আশুগঞ্জ অঞ্চলে জনগণের দ্বারে দ্বারে, বারে বারে, তিনি বিএনপি প্রণীত জাতির সামনে উপস্থাপিত ৩১ দফা রাষ্ট্র সংস্কার নীতির কার্যক্রম নিয়ে কাজ করছে। ইতিমধ্যে, সরাইল এবং আশুগঞ্জের জনগণ তা অবহিত আছেন।
তিনি স্বপ্ন দেখে এমন এক সরাইল ও আশুগঞ্জ, যেখানে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে, যেখানে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, উন্নয়নসহ সব ভালো কিছুতে সবার অধিকারে থাকবে।
মুখোমুখি শীর্ষক আলোচনা সভায় সাংবাদিক, শিক্ষক, সাধারণ জনগণ, উপস্থিত রাজনৈতিক নেতারা, বিভিন্ন উন্নয়নমুলক প্রশ্ন করলে আহসান উদ্দিন খান শিপন সন্তোষজনক উত্তর দেন। অনুষ্ঠানটির সার্বিক তত্তাবধানে ছিলেন শাহ ওয়ালী উল্লাহ জাবেদ।
আমার বার্তা/মো. রিমন খান/এমই