অতিরিক্ত ও নোনা বৃষ্টির কারণে প্রায় ৯০ ভাগ অ্যালোভেরা পাতা নষ্ট
প্রকাশ : ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ১১:১৩ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

চলতি বছরের অতিরিক্ত ও নোনা বৃষ্টির কারণে প্রায় ৯০ ভাগ অ্যালোভেরা পাতা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন নাটোরের ঔষধি গ্রামের অ্যালোভেরা চাষিরা। কৃষি বিভাগ বলছে, এই দুর্যোগে প্রায় ২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
নাটোর সদর উপজেলার লক্ষিপুর খোলাবাড়িয়া ইউনিয়নের ঔষধি গ্রাম। এটি দেশের সবচেয়ে বড় অ্যালোভেরা উৎপাদন এলাকা। তবে চলতি বছর নোনা ও অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে প্রায় ৫০ শতাংশ অ্যালোভেরার গাছের গোড়ায় পচন ধরেছে। এতে ৯০ শতাংশ গাছের পাতা নষ্ট হয়ে গেছে।
অধিকাংশ অ্যালোভেরা নষ্ট হওয়ায় প্রায় ২ হাজার ২০০ চাষি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। কৃষক রহিম বলেন, বাড়ি বাদে ১৫ শতাংশ জমি একমাত্র সম্বল। অ্যালোভেরা চাষে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সংসার চালানো এখন জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।
কৃষক শহিদুল ইসলাম জানান, অ্যালোভেরা উৎপাদন আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে প্রায় ৩ থেকে ৪ মাস সময় লাগবে। এর ফলে মাত্র অ্যালোভেরা চাষের ওপর নির্ভর করে যারা জীবনযাপন করছেন, তাদের জন্য দিন চালানো কঠিন হয়ে যাবে।
কৃষক রশিদ জানান, সেপ্টেম্বরের শুরুতে ১৫ কাঠা জমির অ্যালোভেরার পাতার দাম ছিল প্রায় ২ লাখ টাকা। তবে বিক্রি করতে না পারায় পাতা নষ্ট হয়ে গেছে। সেসব পাতার এখন ৩০ টাকারও কোনো মূল্য নেই।
এলাকার অ্যালোভেরা প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক প্রতিষ্ঠানে প্রায় আড়াই লাখ টাকার পরিমাণে সরবরাহ করা হতো। তবে ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে সরবরাহকারী ও প্রতিষ্ঠান উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ব্যবসায়ী শরিফ জানান, ভালোমানের পাতাগুলো ঢাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করতাম। কিন্তু পাতা নষ্ট হওয়ায় এখন সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
সরবরাহকারী খাদেমুল বলেন, তাইওয়ানের একটি প্রতিষ্ঠানে অ্যালোভেরা পাঠাতাম। সরবরাহ বন্ধ থাকায় প্রতিষ্ঠানটি চুক্তি বাতিল করতে চাচ্ছে। যদি তা হয়, তাহলে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।
কৃষিবিভাগ জানিয়েছে, উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় প্রায় ২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। নাটোর সদর উপজেলার লক্ষিপুর খোলাবাড়িয়া ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, চলতি বছরে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে অ্যালোভেরার গাছের গোড়ায় পচন ধরেছে। এছাড়া গত ২২ সেপ্টেম্বরের নোনা বৃষ্টির কারণে গাছের পাতা নষ্ট হচ্ছে। গাছের অর্ধেক গোড়া এখনও ভালো থাকায় সেগুলো অন্য স্থানে রোপণ করলে গাছগুলো আবার বেঁচে উঠবে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরে ঔষধি গ্রামে ৬৫ হেক্টর জমিতে অ্যালোভেরার চাষ হয়েছে। প্রতিবছর এই গ্রামের মাধ্যমে প্রায় ১৩ হাজার মেট্রিক টন অ্যালোভেরার পাতা উৎপাদিত হয়।
আমার বার্তা/এল/এমই