নির্মাণত্রুটির কারণে নির্মাণাধীন অর্ধসমাপ্ত সেতু ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে

প্রকাশ : ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৬:২০ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

কুমিল্লার তিতাসের বাতাকান্দি-রায়পুর সড়কের দক্ষিণ আকালিয়া খালের উপর নির্মাণাধীন সেতু ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে। নকশায় ত্রুটি এবং বিম ঢালাইয়ে ভুল ধরা পড়ায় সেতুটি সেতুটি ভাঙা হচ্ছে। এতে সরকারি টাকা অপচয়সহ জনগণের ভোগান্তি দীর্ঘ হচ্ছে।

বুধবার সকালে নির্মাণাধীন সেতুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ৭জন শ্রমিক নির্মাণাধীন সেতুটি যন্ত্রের সাহায্যে ভাঙ্গছেন। পাশেই বাতাকান্দি বাজারের সাপ্তাহিক হাটে নৌকা বিক্রির অংশ। ক্রেতা হিসেবে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, এত ছোট খালে এত বড় সেতুর দরকার ছিল না। এটা ভালো কয়েকদিন পরপর সেতুটি ফেইসবুকে ভাইরাল হয়। 

বলরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের একাধিক সদস্য জানান, ছোট্ট একটি কালর্ভাট হলেই হতো। এত বছর সেতু দরকার ছিল না। এখন শুনতেছি সেতু নির্মাণে নাকি ভুল হয়েছে, তাই ভেঙ্গে ফেলছে। 

উপজেলা প্রকৌশলী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের বাতাকান্দি-রায়পুর সড়কের দক্ষিণ আকালিয়া খালের উপর ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দে ২৮ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৯.১০ মিটার প্রস্থ একটি নতুন সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। খালের উপর অধর্শত বছরের পুরোনো সেতুটি ভেঙে নতুন সেতুর নির্মাণকাজ ২০২৩ সালের ২৩ মার্চ শুরু হয়। ২০২৪ সালের ২২ মার্চ নতুন সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কাজটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় মেসার্স আর আর কনষ্ট্রাকশন। উক্ত সময়ের মধ্যে নির্মাণাধীন সেতুটির ৬০ ভাগ শেষ হয়েছিল। তবে এর মধ্যে ঠিকাদার ১ কোটি ৮০ লাখ টাকার বিল তুলে কাজ ফেলে চলে যান। এরপর থেকে সেতুর কাজ বন্ধ রয়েছে।

এলজিইডির তিতাস উপজেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. শাহনেওয়াজ বলেন, এক বছরের বেশি সময় নির্মাণকাজ বন্ধ থাকায় কাজের চুক্তি বাতিলের জন্য গত জুলাই মাসে ঢাকার প্রধান কার্যালয়ে চিঠি পাঠানো হয়। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতুর নির্মাণকাজের সময় নির্দেশনা অমান্য করে শুধু সেতুর বিম ঢালাই দেয়। নিয়ম হচ্ছে বিম ও ছাদ একসঙ্গে ঢালাই দেওয়া। কিন্তু শুধু বিম ঢালাই দেওয়ায় সেতুর নকশার ত্রুটি ধরা পড়ে এবং ত্রুটিপূর্ণ স্থান পর্যন্ত ভাঙ্গা হচ্ছে। 

উপজেলার দক্ষিণ আকালিয়ার নুরুল হক এবং উলুকান্দির জহিরুল ইসলাম বলেন, সেতু নির্মাণের সময় খাল ভরাট করে রাস্তা বানানোয় খালে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। গত তিন বছর যাবৎ বাতাকান্দি, উলুকান্দি, দক্ষিণ আকালিয়া ও কালাইগোবিন্দপুর এলাকায় পানির অভাবে ফসল উৎপাদন কমে গেছে।  

মেসার্স আর আর কনষ্ট্রাকশন স্বত্বাধিকারী মুকুল মিয়ার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। তবে সহকারী ঠিকাদার জিএম আনিছুর রহমান জুয়েল জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ হবে। বর্তমানে ৯জন সাইডে কাজ করছে। আগামী শুক্রবার থেকে তাদের সাথে আরো ১০জন শ্রমিক যোগ দিবেন। ত্রুটিপূর্ণ অংশ ভাঙ্গা হলে, একসাথে আমরা বিম ও ছাদ ঢালাই দেব। 

এলজিইডির তিতাস উপজেলার প্রকৌশলী মো. খোয়াজুর রহমান বলেন, বেইচ ঢালাইয়ের পর থেকে উপরের অংশ ভেঙ্গে ফেলা হবে এবং আগামী ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পূর্ণ সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করতে হবে। প্রধান ঠিকাদারের সাথে যোগাযোগ না হলেও তাহার প্রতিনিধি সহকারী ঠিকাদার জুয়েল সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। 

আমার বার্তা/এল/এমই