ময়মনসিংহে বন্ধুকে কুপিয়ে হত্যার পর তরুণ কুড়াল হাতে থানায়
প্রকাশ : ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৫১ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

ময়মনসিংহের ত্রিশালে বন্ধুর হাতে বন্ধু খুনের এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সরকারি নজরুল একাডেমি মাঠে মুনতাসীর ফাহিম (২২) নামের এক শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে হত্যা করেন তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু অহিদুল ইসলাম অনিক (২২)। হত্যাকাণ্ডের পর রক্তমাখা ‘চায়নিজ কুড়াল’ হাতে নিয়েই থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন অনিক।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, থানা-সংলগ্ন সরকারি নজরুল একাডেমির ভোকেশনাল শাখার দক্ষিণ পাশে পানির ট্যাংকির কাছে ফাহিমকে ধারালো কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন অনিক। ঘটনাস্থলেই ফাহিমের মৃত্যু হয়। পরে রাত ৯টার দিকে অনিক কুড়াল হাতে ত্রিশাল থানায় উপস্থিত হয়ে ডিউটি অফিসারকে জানান, তিনি বন্ধু ফাহিমকে হত্যা করেছেন। পরে থানায় হাজির হয়ে পুলিশকে জানায়, ফাহিম আমার জীবন নষ্ট করে দিয়েছে, তাই তাকে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছি।
পুলিশ তাঁকে হেফাজতে নেয় এবং তাঁর তথ্য অনুযায়ী দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে ফাহিমের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে।
মুনতাসীর ফাহিম ত্রিশাল ইউনিয়নের চিকনা মনোহর গ্রামের বাদল মিয়ার ছেলে। অভিযুক্ত অহিদুল ইসলাম অনিক ত্রিশাল পৌরসভার দরিরামপুর গ্রামের জহিরুল ইসলামের ছেলে।
পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অনিক হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, ফাহিমের সঙ্গে তাঁর পূর্বশত্রুতা ছিল। মাদকাসক্তির কথাও তাঁর বক্তব্যে উঠে এসেছে। এসব তথ্যের সত্যতা যাচাই করা হচ্ছে।
ফাহিমের নানি মাকসুদা আক্তার বলেন, ‘আমার নাতি মালয়েশিয়ায় অনার্সে পড়াশোনা করত। চার মাস আগে দেশে এসেছে। ২৫ ডিসেম্বর তার আবার বিদেশে যাওয়ার কথা ছিল। অনিক পরিকল্পিতভাবে ডেকে নিয়ে তাকে হত্যা করেছে।’
ফাহিমের বাবা রেজাউল ইসলাম বাদল বলেন, ‘আমার ছেলে বিদেশে পড়াশোনা করত। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় দেশে এসেছে। আগামী মাসে মালয়েশিয়ায় ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। কেন তাকে হত্যা করা হলো জানি না। পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে অনিক। বিচার চাই।’
ত্রিশাল থানার ওসি (তদন্ত) শেখ গোলাম মোস্তফা রুবেল বলেন, ‘ফাহিমকে হত্যা করার পর রক্তমাখা কুড়াল হাতে থানায় আসেন অনিক। তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। ব্যক্তিগত বিরোধ থেকেই হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে। তদন্ত চলছে।’
ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনসুর আহাম্মদ বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তার অনিককে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে।
আমার বার্তা/এমই
