আলিম বিভাগ না থাকায় অনেক শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ছে

প্রকাশ : ১৪ জুন ২০২৩, ১৩:৩৩ | অনলাইন সংস্করণ

  ফজলে রাব্বী এ্যান্টনী, কুড়িগ্রাম

ফাইল ফটো
  • ৩৮ বছর ধরে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে ধরণীবাড়ী মাঝবিল পানাউল্লাহ্ বালিকা দাখিল মাদরাসা

১৯৮৫ খ্রিঃ কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার ধরনীবাড়ী ইউনিয়নে, ধরণীবাড়ী মাঝবিল পানাউল্লাহ্ বালিকা দাখিল মাদরাসাটি আধুনিক মানসম্মত শিক্ষার দৃঢ় প্রত্যয়ে মনোরম পরিবেশে গড়ে উঠেছে।

মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠার শুরুতেই গুরুত্ব দেয়া হয় নিয়ম শৃঙ্খলা ও পড়াশোনার দিকে। আর এতে সাফল্যও এসেছে। কোচিং ছাড়াই প্রত্যেকটি পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে প্রতিষ্ঠানটি কখনও বিভাগীয়, কখনও জেলায় এবং কখনও উপজেলায় ধারাবাহিকভাবে সেরা ফলাফল অর্জন করে আসছে।

মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে আর কখনো পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে। এ মাদরাসায় বহু শিক্ষার্থী বর্তমানে দেশে-বিদেশে যেমন সুনাম অর্জন করেছেন, তেমনি এলাকার মানুষের আস্থাও অর্জন করেছে দ্রুত। এলাকায় শিক্ষা বান্ধব ও সময়োপযোগী মাদরাসা হিসেবে মানুষের এবং ছাত্র-ছাত্রীদের দৃষ্টি কেরে নিয়েছে।

এলাকাবাসির দাবি, মাদরাসাটি আলিম বিভাগ না থাকায় অনেক শিক্ষার্থী দাখিল পাশ করে ঝড়ে পড়ছে। এ মাদরাসা থেকে পড়াশোনা করে বহু ছাত্র-ছাত্রীরা ডাক্তার, শিক্ষক, ইঞ্জিনিয়ারসহ সমাজের উঁচু স্থানে বিরাজ করছেন। প্রতিষ্ঠানটি উপজেলায় শতভাগ উত্তীর্ণ। জেডেসি এবং দাখিল পরীক্ষায় উপজেলায় সর্বোচ্চ জিপিএ-৫ সহ অসংখ ছাত্র- ছাত্রী পাস হওয়ার গৌরব এখনও দখলে এই প্রতিষ্ঠানের।

লেখাপড়ার পাশাপাশি নিয়মিত সংস্কৃতির চর্চার কারণে উপজেলা অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তুলনায় মাদরাসাটি  ব্যাপক পরিচিত লাভ করেছে। বর্তমানে মাদরাসাটি ৫০০ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে রয়েছে ২০ জন অভিজ্ঞ শিক্ষক-শিক্ষিকা। শিক্ষার্থীরা জানান, কঠোর নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলা।

কোচিং ছাড়া নিয়মিত পড়াশোনা ও শিক্ষকদের আন্তরিকতার কারণে প্রতি বছরই ভালো রেজাল্ট করতে সক্ষম হয়েছে। সেই সঙ্গে ধারাবাহিক ফলাফলে তাদের অভিভাবকরাও সন্তুষ্ট।

এলাকাবাসী জানান কোচিং ছাড়া মাদরাসাটি শিক্ষা কার্যক্রম সময় উপযোগী। উপজেলা ভিত্তিক বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়াসহ বিভিন্ন সহশিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেয়ার মাধ্যমে শিক্ষক শিক্ষিকারা আন্তরিকভাবে পাঠদান করেন।  অভিভাবকরা বলেন, মেধা-ভিত্তিক মাধ্যমে মাদরাসাটি’র ধারাবাহিক সাফল্যের জন্য শিক্ষক মণ্ডলীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।

মাদরসাটি’র লেখা পড়ায় ভালো । যুগের সাথে তাল মিলিয়ে নতুন নতুন মেধা-নির্ভর শিক্ষক শিক্ষিকা দিয়ে মাদরসাটি’র প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে। সুপারিনটেনডেন্ট বলেন , শিক্ষার মান নিয়ে কখনো আপস করা হয়নি। নিয়োগের ক্ষেত্রে ডিগ্রিধারী মেধাবীদের অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে অত্যধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা।

মাদরাসার সভাপতি মোঃ শামছুল আলী (সহকারী অধ্যাপক এম এ মতিন কারিগরি ও কৃষি কলেজ) বলেন, অভিজ্ঞ ও নিবেদিত শিক্ষক দ্বারা পাঠদান, পিছিয়ে পড়া ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা, ক্লাস মনিটরিং সেল গঠনের মাধ্যমে নিবিড় পরিচর্যা, দক্ষ ও নির্ভরযোগ্য পরিচালক মণ্ডলী, শিক্ষার যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা মাদরাসাটি বিদ্যমান রয়েছে।

এখানে সাফল্যের অন্যতম কারণ কঠোর নিয়ম শৃঙ্খলার সঙ্গে শতভাগ উপস্থিতি। নিয়মিত ক্লাস ও বছর শেষ হওয়ার আগেই সিলেবাস শেষ করানো। মেধা যাচাইয়ের জন্য নিয়মিত পরীক্ষার ব্যবস্থা করা।

অপেক্ষাকৃত দুর্বল শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার মাধ্যমে সমস্যা চিহ্নিত করা। অতিরিক্ত ক্লাসের মাধ্যমে তাদের সমস্যার সমাধান করা। এখানে কোন কোচিং পড়ানো হয় না। প্রতিষ্ঠানটি আমার বাবা আলহাজ আমির উদ্দিন সরকার তার নিজস্ব জমি ১০১ শতক দানপত্র করে প্রতিষ্ঠা করেন।

আমার বাবা আলহাজ আমির উদ্দিন সরকার এর ইচ্ছায় প্রতিষ্ঠান টিকে আরো উন্নত শিক্ষার দিকে নিয়ে যেতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এলাকায় আলিম মাদরাসা না থাকায় অনেক শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ছে। আমি আলীম বিভাগ খোলার জন্য চেষ্টা করছি। আশা করি দ্রুত সময়ে তা হয়ে যাবে।

এবি/ওজি