২৫ দিন শিকলে বেঁধে তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, আটক ২

প্রকাশ : ০১ এপ্রিল ২০২৪, ১৩:১০ | অনলাইন সংস্করণ

  অনলাইন ডেস্ক:

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি বাসায় ২৫ দিন শিকলে বেঁধে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার এক তরুণীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার জাতীয় জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে ওই তরুণীকে উদ্ধার করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।

মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান রোববার রাতে যুগান্তরকে বলেন, শনিবার ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধার করা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার তরুণী তিন যুবক ও এক নারীর নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন। তারা হলেন, সান (২৬), হিমেল (২৭), রকি (২৯) ও সালমা ওরফে ঝুমুর (২৮)। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মোহাম্মদপুরের নবীনগরে চার তলার একটি ফ্ল্যাটে টানা ২৫ দিন আটক রাখার এ ঘটনায় ওই নারীর সহায়তা করা এবং ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করার অভিযোগও করা হয়েছে মামলায়।

মামলার এজাহারে ওই তরুণী উল্লেখ করেছেন, বাবা মায়ের বিচ্ছেদ এবং পরে তারা অন্যত্র বিয়ে করায় ওই তরুণী বোনের বাসায় থাকতেন। সে সময় ভগ্নিপতির মাধ্যমে ব্যারিস্টার মাসুদ নামের এক যুবকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে তার মাধ্যমে এক প্রবাসীর স্ত্রী সালমা ওরফে ঝুমুরের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে বোনের বাসা ছেড়ে সালমার সঙ্গে তিনি নবীনগরের ভাড়া ফ্ল্যাটে ওঠেন। পরে ঝুমুরের মাধ্যমে সানের সঙ্গে পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নবীনগরের ওই বাসায় ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রথম ধর্ষণ করেন সান। ২৭ ফেব্রুয়ারি একইভাবে ধর্ষণের পর বিয়ের জন্য চাপ দিলে সান পরিবারের সঙ্গে কথা বলে বিয়ের আশ্বাস দেন। ওই তরুণী বিয়ে না করলে মামলার ভয় দেখালে সান যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।

এরপর ৫ মার্চ দুই বন্ধু হিমেল ও রকিকে নিয়ে বাসায় এসে সান তাকে সারপ্রাইজ দেবে বলে চোখ বন্ধ করতে বলে। সালমা তখন খাবার আনার কথা বলে রুম থেকে বেরিয়ে যায়। সানের কথায় চোখ বন্ধ করলে তারা তিনজন মিলে তার হাত, পা ও চোখ বেঁধে মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে দেয়। পরে সালমার কথায় হিমেলকে পাহারায় রেখে অন্যরা শিকল আনতে যায়। এ সময় একা পেয়ে হিমেল তাকে ধর্ষণ করে।

সেই দিন থেকে শিকল দিয়ে তার হাত ও পা বেঁধে রাখা হয় দাবি করে ওই তরুণী মামলায় অভিযোগ করেন, ৭ মার্চ রকি বাসায় এসে তাকে ধর্ষণ করে। খাবার এবং বাথরুমে যাওয়া সময় বাসায় থাকা সালমা শুধু পায়ের শিকল খুলে দিত। পরদিন সানের ধর্ষণের ভিডিও মোবাইলে ধারণ করেন সালমা। এরপর থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে তিনজন তাকে ধর্ষণ করেন এবং একে অপরের ভিডিও করেন। এ সময় সালমা তাদের সহায়তা করে।

গত ৩০ মার্চ (শনিবার) রাতে বাসায় কেউ না থাকার সুযোগে জানালা দিয়ে চিৎকার করে স্থানীয় এক ব্যক্তির দৃষ্টি কারণ করতে সক্ষম হন ওই তরুণী। পরে ওই ব্যক্তি ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে।

সর্বশেষ খবরে জানা গেছে অভিযুক্তদের মধ্যে দুজনকে আটক করা হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।


আমার বার্তা/জেএইচ