আন্ডারওয়ার্ল্ডের দ্বন্দ্বে ২ লাখ টাকার চুক্তিতে সন্ত্রাসী মামুন খুন
প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০২৫, ১৪:৫৪ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন

রাজধানীর পুরান ঢাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুন (৫৫)কে হত্যা করার ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে দুইজন পেশাদার শুটার—ফারুক (ওরফে কুত্তা ফারুক) ও রবিন, এবং বাকি তিনজন হলেন ইউসুফ, রুবেল ও শামীম।
ডিবি জানিয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ আন্ডারওয়ার্ল্ডের পরিচিত জুটি ইমন-মামুনের মধ্যে চলমান দ্বন্দ্ব। হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী রনি, যিনি আগে মুদিদোকানির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং বর্তমানে কাফরুলে বসবাসরত একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত। ইমনের পক্ষ থেকে রনি মামুন হত্যার জন্য ২ লাখ টাকা এবং প্রয়োজনীয় অস্ত্র সরবরাহ করেন। উদ্দেশ্য ছিল আন্ডারওয়ার্ল্ডে প্রভাব বিস্তার করা। রনি এখনও পলাতক এবং তাকে ধরার চেষ্টা চলছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে বুধবার ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, গ্রেপ্তার ফারুক ও রবিন পেশাদার শুটার। তাদের কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত দুটি পিস্তল, নগদ অর্থ এবং হত্যার কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।
ডিবি জানিয়েছে, ১০ নভেম্বর ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে দুই অস্ত্রধারী মামুনের ওপর গুলি চালায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে ন্যাশনাল মেডিকেলে নেওয়া হয়, পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সিসিটিভি ফুটেজ এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সিলেট, নরসিংদী ও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের সময় নরসিংদী সদর উপজেলার ভেলানগর এলাকা থেকে ফারুক, রবিন, শামীম ও রুবেলকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা নগদ অর্থ ১ লাখ ৫৩ হাজার ৬৪০ টাকা, যা হত্যার পারিশ্রমিক হিসেবে রনি প্রদান করেছিলেন।
ডিবি জানিয়েছে, হত্যার পর রনির নির্দেশে ব্যবহৃত অস্ত্র ও গুলি রেন্ট-এ-কার চালক রুবেলের কাছে রাখা হয়। পরে রুবেল তা ইউসুফের বাসায় লুকিয়ে রাখেন। ইউসুফ ও রুবেল এই বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
তদন্তে জানা গেছে, মামুন হত্যার পরিকল্পনা দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। পূর্বে একাধিকবার হত্যার চেষ্টা ব্যর্থ হয়। ১০ নভেম্বর মামলার হাজিরার দিনকে বেছে নিয়ে রনি চূড়ান্ত পরিকল্পনা দেন। পরদিন সকালে রবিন ও ফারুক আদালত এলাকায় পৌঁছে গুলি চালান। পরে তারা দ্রুত এলাকা ত্যাগ করে অস্ত্রগুলো রুবেলের কাছে জমা দেন এবং ২ লাখ টাকা পারিশ্রমিক গ্রহণ করেন।
রনি ও সহযোগীদের ধরতে ডিবি অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। ডিবি এই হত্যাকাণ্ডকে আন্ডারওয়ার্ল্ডের পুরোনো দ্বন্দ্বের ধারাবাহিকতা হিসেবে দেখছে, যেখানে মামুন ও ইমন দুজনেই ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের আধিপত্যের লড়াইয়ে যুক্ত ছিলেন।
আমার বার্তা/জেএইচ
