বাংলাদেশী উদ্যোক্তাদের শ্রীলংকায় তথ্য-প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগের আহ্বান

প্রকাশ : ১৯ জুন ২০২৫, ১৬:২৯ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)-এর সভাপতি তাসকীন আহমেদের নেতৃত্বে শ্রীলংকায় সফররত বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সদস্যবৃন্দ শ্রীলংকার উপ-পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী আরুন হেমাচন্দ্র এবং উপ-অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী ড. হর্ষনা সুরিয়াপেরুমার সঙ্গে কলম্বোতে অদ্য ১৯ জুন, ২০২৫ তারিখে তাদের নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

সাক্ষাৎকালে শ্রীলংকার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরুন হেমাচন্দ্র বলেন, দুদেশের বেসরকারিখাতের সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে আগামীতে শ্রীলংকা এবং বাংলাদেশের মধ্যকার বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে। বাংলাদেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষরের বিষয়ে তিনি জানান, শ্রীলংকা ইতোমধ্যে থাইল্যান্ড এবং সিঙ্গাপুরের সঙ্গে এফটিএ স্বাক্ষর করেছে, বাংলাদেশে সঙ্গে এফটিএ-এর সম্ভাব্য সুফল ও ঝুঁকি নিয়ে বর্তমানে বিশ্লেষণ চলছে। তিনি বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের তাঁর দেশের সম্ভাবনাময় খাতসমূহে বিনিয়োগের আহ্বান জানান এবং এলক্ষ্যে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন।

সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানসমূহে ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ জানান, ভূ-রাজনৈতিক কারণে বর্তমানে বৈশ্বিক বাণিজ্যের ধারা পরিবর্তন হচ্ছে এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে যাচ্ছে। তিনি বলেন, যদিও বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক, তবে প্রযুক্তি, পণ্যের মূল্য সংযোজন এবং উদ্ভাবনের দিক থেকে শ্রীলংকা বেশ এগিয়ে রয়েছে। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যেও প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে, যেখানে দুদেশের বেসরকারিখাতের যৌথ উদ্যোগে ইতিবাচক পরিবর্তন আসতে পারে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন। তিনি আরো বলেন, বন্ধুত্বপূর্ণ উভয়দেশের মধ্যে একটি এফটিএ স্বাক্ষর হলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য এবং জনগনের মধ্যকার সংযোগ আরও সুদৃঢ় হবে। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি জানান, বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো শ্রীলংকার ব্যবসায়িক অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করতে অত্যন্ত আগ্রহী এবং শ্রীলংকার উদ্যোক্তারাও বাংলাদেশে বিনিয়োগে এগিয়ে আসবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। 

ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, বাংলাদেশ ও শ্রীলংঙ্কার অর্থনীতি প্রায় একই ধাঁচের, যেখানে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) বাস্তবিক অর্থে ততটা কার্যকর হবে না, এক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষর হলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আরও ত্বরান্বিত হবে বলে তিনি অভিমত জ্ঞাপন করেন।

ডিসিসিআই’র ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে পৃথক এক বৈঠকে শ্রীলংকার উপ-অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী ড. হর্ষনা সুরিয়াপেরুমা বলেন, আমাদের একসাথে কাজ করার অবারিত সুযোগ রয়েছে, বিশেষকরে তথ্য-প্রযুক্তি ও ডিজিটাল সেবা, ঔষধ, চা, জ্বালানি, আর্থিক সেবা এবং পর্যটন খাত যৌথ বিনিয়োগের জন্য প্রচুর সম্ভাবনাময়। তিনি জানান, শ্রীলংকা  ইতোমধ্যেই একটি উচ্চাভিলাষী ডিজিটাল রোডম্যাপ প্রণয়ন করেছে এবং এই পরিকল্পনার অধীনে আগামী দুই বছরের মধ্যে দেশকে একটি পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল রাষ্ট্রে রূপান্তর এবং প্রতিটি সেবা স্বয়ংক্রিয় করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। তিনি বলেন, শ্রীলংকায় অত্যাধুনিক ডেটা সেন্টার স্থাপনের ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করা হচ্ছে, যেখানে বাংলাদেশের উদ্যোক্তাবৃন্দ এগিয়ে আসতে পারেন। এছাড়াও, তিনি বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের শ্রীলংকার ঔষধ শিল্পে বিনিয়োগের আহ্বান জানান, যাতে দেশটির স্থানীয় চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে। 

ডিসিসিআই’র ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী এবং সহ-সভাপতি মো. সালিম সোলায়মান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।


আমার বার্তা/এমই