নয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সমপরিমাণ টাকা প্রণোদনা মডেল চালু
প্রকাশ : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৩১ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

বারবার ক্ষতিপূরণ দিয়েও আস্থা ফেরেনি পুঁজিবাজারে। তবুও ৫ ব্যাংকের পর এবার বন্ধ হতে যাওয়া ৯ ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার চিন্তা করছে সরকার।
২০১০ সাল ছিল শেয়ার বাজার সবেচেয়ে উত্তেজনার নাম। বাজারের ঊর্ধ্বগতির পারদে তাল মেলাতে মানুষ সম্পদ বন্দক আর গয়না বিক্রির টাকা নিয়ে আসে পুঁজিবাজারে। শেষ পর্যন্ত সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসে বিনিয়োগকারীরা।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, মোট ১৬ হাজার ৮৯৪ কোটি টাকার মার্জিন ঋণ দেয়া হয়। যেখানে ১৪২টি ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের প্রায় সাড়ে ৩৫ হাজার বিও অ্যাকাউন্ট নেগেটিভ ইকিউটিতে রয়েছে। মোট ঘাটতি সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি। এমন অবস্থায় সমপরিমাণ টাকা প্রণোদনা মডেল চালু করে সরকার।
একইভাবে বাজার ফেরাতে ১৫ বছর পর আবরো শেয়ারবাজারে পাঁচ ব্যাংকের পর এবার ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাধারণ বিনিয়োগকারীদেরও ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথা ভাবছে সরকার।
নন ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অবসায়নের আওতায় আসছে- ফাস ফাইন্যান্স, আভিভা ফাইন্যান্স, পিপলস লিজিং, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি, প্রিমিয়ার লিজিং, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, জিএসপি ফাইন্যান্স, প্রাইম ফাইন্যন্স। এছাড়া আরো ১১টি দুর্বল প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, ‘অ্যাকাউন্টিং প্রসিডিউর অনুসারে এই শেয়ারগুলো শূন্য হওয়ার কথা, বাংলাদেশ ব্যাংক সেই কাজটি করেছে। সাধারণ মানুষের এটা অমানবিক বলে বিবেচিত হতে পারে, কারণ তারা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সরকার আবার এ বিষয়টি এড্রেস করেছে। একই ঘটনা ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ঘটতে পারে।’
ক্ষতিপূরণের আর্থিক মূল্য যত ক্ষুদ্রই হোক আর্থিক খাত বিশ্লেষকদের মতে, এমন চর্চা শেয়ারবাজার দেখভালের দায়িত্বে থাকা নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যার্থতা চাপা দেয়া। যেভাবে জবাবদিহীতায় আসেনি ২০১০ সালের শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারির পরও।
বিআইবিএম’র সাবেক পরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘যেকোনো মার্কেট ফল করার পেছনে রেগুলেটরের দায়িত্ব রয়েছে। শুধুমাত্র বিনিয়োগকারীরা না, শুধুমাত্র কোম্পানির মালিকরা না, রেগুলেটর কর্তৃপক্ষকেও শাস্তি দিতে হবে। তাহলে এ সব জিনিস কমে যাবে।’
অবসায়নের আওতায় থাকা এনবিএফআই’র প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ থেকে ১২ হাজার কোটি টাকা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মো. আল আমিনের মতে, ঘাটতি বাজেটের দেশে ক্ষতিপূরণের এই অর্থ দিতে হবে কোন খাত থেকে কাটছাট করে অথবা কর থেকে অথবা টাকা ছাপিয়ে, যার মূল্য বৃহৎ অংশের মানুষের যাপিত জীবনে নেতিবাচক প্রভাবে ফেলবে।
বিশ্লেষকদের মতে, শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের ঝুঁকি কমাতে বিনিয়োগকারীদেরই কোম্পানিগুলোর পোফোলিও দেখে বিনিয়োগ করার চর্চা ব্যক্তির ক্ষতি কমাতে পারে।
আমার বার্তা/এল/এমই
