ভর্তিতে লটারি বাতিলের দাবিতে রাজউক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

প্রকাশ : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১৩:৫৮ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন

স্কুলে ভর্তিতে লটারি পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছেন রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। রোববার (২ নভেম্বর) সকালে কলেজ ক্যাম্পাসে এ বিক্ষোভ করেন তারা।

কর্মসূচি থেকে শিক্ষার্থীরা আগামী ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে পরীক্ষার মাধ্যমে প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে ভর্তির দাবি জানিয়েছেন। এতে কয়েকশ শিক্ষার্থী ও বেশ কয়েকজন অভিভাবক অংশ নেন।

এসময় শিক্ষার্থীদের হাতে ‘লটারি না মেধা, মেধা মেধা’, ‘এডুকেশন ইজ অ্যা রাইট, নট প্রিভিলিজ’, ‘স্টুডেন্ট ডিজার্ভস ফেয়ার এডমিশন’, ‘লেটস ম্যারিট, নট লটারি’সহ বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।

নাজনীন আখতার নামে এক ছাত্রী বলেন, অনেকে বলে থাকেন ভর্তি পরীক্ষা চালু করলে কোচিং বাণিজ্য বাড়বে। আমরা দেখছি এর উল্টো চিত্র। যারা লটারিতে ভর্তি হয়ে আসে, তাদেরকে শিক্ষকরা নানাভাবে কটাক্ষ করেন। ক্লাসে বলা হয়, তোমার রাজউকে পড়ার যোগ্যতা নেই। তুমি লটারি পদ্ধতিতে ভাগ্যক্রমে এখানে ঢুকে পড়েছো। তাছাড়া ক্লাসে অনেক চাপ দেওয়া হয়। বাধ্য হয়ে ওই শিক্ষার্থী শিক্ষকের কাছে সারা বছর প্রাইভেট পড়ে, কোচিং করে। এভাবেই লটারি পদ্ধতিতে কোচিং বাণিজ্য আরও বেশি হচ্ছে। যদি পরীক্ষার মাধ্যমে কেউ ভর্তি হয়, তাহলে তাকে এ ধরনের সমস্যায় পড়তে হবে না। কোচিং-প্রাইভেটেও যেতে হবে না।

আব্দুল্লাহ কাফি নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, লটারি পদ্ধতিতে আমরাও ভর্তি হয়েছি। কোনো সুখকর পরিস্থিতিতে আমরা এখন নেই। প্রতিনিয়ত আমাদের বলা হচ্ছে, তোমরা লটারির মাধ্যমে ভর্তি হয়েছো। আমি নিজেই মনে করি, লটারি পদ্ধতি ভর্তির জন্য কোনো ভালো সিস্টেম নয়। অবশ্যই ভর্তি পরীক্ষা ফিরিয়ে আনা উচিত এবং সেটা এ বছর থেকেই চালু করা হোক।

কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে সংহতি জানান বেশ কয়েকজন অভিভাবক।

ইমদাদুল হক নামে একজন বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যেটা বলছে, তার সঙ্গে আমরাও একমত। আমি আমার মেয়েকে ভর্তি করাবো। আমি চাই, ও মেধার মাধ্যমে রাজউকে ভর্তির সুযোগ পাক। লটারি করে ভর্তি করানোর পদ্ধতি আমরা পছন্দ করছি না।

২০২০ সাল থেকে ভর্তিতে লটারি পদ্ধতি চালু করা হয়। প্রথম দিকে প্রাথমিক পর্যায়ে এটা চালু করা হলেও পরে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তিতে লটারি পদ্ধতি করা হয়। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক চলছে। একপক্ষ লটারিকে ভালো বলছেন, অন্যপক্ষ ভর্তি পরীক্ষার দাবি জানিয়ে আসছেন।

২০২৬ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম সামনে রেখে এবারও লটারি বনাম ভর্তি পরীক্ষা বিতর্ক শুরু হয়েছে। সরকারি মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা লটারি বাতিল চেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপিও দিয়েছেন।

তবে গত ২৯ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে স্কুলে ভর্তি সংক্রান্ত সভায় লটারি পদ্ধতি বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। খুব শিগগির এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হবে। তার মধ্যেই বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লটারি বাতিল করে ভর্তি পরীক্ষা চালুর দাবিতে কর্মসূচি করছেন শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা।

স্কুলের প্রথম থেকে নবম শ্রেণির ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মাধ্যমিক বিভাগ। এ বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ড. খান মইনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল জাগো নিউজকে বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ডাকা সভায় এ নিয়ে একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেটি আনুষ্ঠানিকভাবে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ চিঠির মাধ্যমে জানাবে। চিঠি হাতে পেলে আমরা ভর্তির কার্যক্রম শুরু করবো। এর বাইরে আপাতত কোনো সিদ্ধান্ত বা তথ্য আমার জানা নেই।’