দুই ঘন্টার আল্টিমেটাম দেওয়ার পর পুলিশের সাথে বৈঠক করেছেন শিক্ষকগণ

প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১৪:৪৩ | অনলাইন সংস্করণ

  মোঃ আল মুমিন:

আজ ৯ই নভেম্বর, ২০২৫ রোজ রবিবার সকাল ১০:০০ টায় সম্মিলিত এনটিআরসিএ নিবন্ধিত নিয়োগ বঞ্চিত শিক্ষক ফেডারেশন এর আয়োজনে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে ১-১২ তম নিবন্ধিত নিয়োগ বঞ্চিত সনদধারী প্রার্থীদের নিয়োগের জন্য “প্রধান উপদেষ্টা নির্বাহী আদেশ চেয়ে প্রজ্ঞাপন জারির দাবীতে” অবস্থান কর্মসূচি ও লংমার্চ কর্মসূচি পালন করেছে।
 

১-১২ তম নিবন্ধিত নিয়োগ বঞ্চিত সনদধারী প্রার্থীদের দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করার জন্য কতৃপক্ষকে দুই ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন সংগঠনের নির্বাহী সদস্য আমির আসহাব। ২ ঘন্টার মধ্যে দাবি মেনে না নিলে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করবেন বলে জানান। 
 

দুই ঘন্টা আল্টিমেটাম দেওয়ার পর ৭ জন সদস্যের প্রতিনিধির সাথে শাহবাগ থানায় বৈঠক করেছেন রমনা জোনের পুলিশের ডিসি মাসুদ আলম। ৭ জন প্রতিনিধি হচ্ছে,  আমির আসহাব, জিএম ইয়াছিন, নিলীমা রাণী চক্রবর্তী, নাসরীন সুলতানা, শাহ আলম, রুহুল আমীন পাখি ও আ: মোমিন পলাশ। রমনা জোনের ডিসির সাথে বৈঠকে ভালো কিছু হলে আন্দোলন স্থগিত করবেন না হলে তাঁরা এখানে রাত্রিযাপন করে আন্দোলনকে সফল করবেন বলে জানান মোঃ আল মুমিন তিনি আরও বলেন, আমরা প্রয়োজনে জীবন দিব তবুও লেখিত প্রজ্ঞাপন না নিয়ে যাব না।

২০২২ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত অদ্যবধি নিয়োগের জন্য আন্দোলন ও সংগ্রাম করে চলেছে। অথচ ২০০ দিনের অনশন আন্দোলন ও সংগ্রামের ফলে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি আশ্বাস দেন, দাবী মানার। পরবর্তীতে আলোচনায় বসে দাবী না মেনে শূন্য হাতে ফিরিয়ে দেন এবং অমানবিক আচরণ করেন ও আমলাতন্ত্র বহাল রাখেন।

২৯ শে সেপ্টেম্বর ২০২৪ আন্দোলনের ফলে শিক্ষা উপদেষ্টা স্বাক্ষাৎ এ মৌখিক আশ্বাস প্রদান করেন। কিন্তু পরবর্তীতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় হতাশায় পড়েন নিবন্ধনধারীরা। এনটিআরসিএ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয় আইন মতামত/ভোটিং নামে সময়ক্ষেপণ ও তাল বাহানা করতে থাকে।

আইন মতামত বন্ধ করে বিশেষ গণ বিজ্ঞপ্তির আইনগত অনুমতির জন্য ২০ শে অক্টোবর আন্দোলন মাধ্যমে আইন উপদেষ্টা স্বাক্ষাৎ চান। আইন উপদেষ্টা স্বাক্ষাৎ এ মৌখিক আশ্বাস প্রদান করেন। আইন মতামত/ ভোটিং শেষ করে ২৩শে ফ্রেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিশেষ গণ বিজ্ঞপ্তির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হলেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

এনটিআরসি চেয়ারম্যান ও সচিব মহোদয় জানান, ১লা জুন আন্তঃমন্ত্রণালয় মিটিং আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। মিটিং শেষে জানানো হয়, কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।

নিবন্ধনধারীরা যে সমস্যার মুখোমুখি, তার সংক্ষিপ্ত চিত্র নিম্নরূপ :

১. এনটিআরসিএ নিয়োগের উদ্দেশ্যে উত্তীর্ণ যোগ্য নিবন্ধিত শিক্ষকদের ইউনিক রোল প্রদান না করে সনদ বাণিজ্য ও নিয়োগ বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে একাধিকবার গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনকৃতদের দিয়ে শূন্যপদ পূরণ না করে উক্ত শূন্যপদ পরবর্তি গণবিজ্ঞপ্তিতে চাহিদা চাওয়া হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে যোগ্য প্রার্থী পাওয়া যাইনি বলা হলেও পরিবর্তিতে তার চেয়ে কম মার্কে বা পোস্ট ব্লক রেখে বা ১-১২ তমদের নিয়োগ কার্যক্রমের বাহিরে রেখে সুবিধামতো প্রার্থীদের সুপারিশ করা হয়েছে।

২. আবেদনকারী প্রার্থীর এক আবেদনে নির্ধারিত ৪০টি চয়েজের বাহিরেও চাকরি করতে ইচ্ছুক হলে তাঁদের জন্য ‘‘ইয়েস অপশন’’রাখা হয়েছিল। কিন্তু যারা ‘‘ইয়েস অপশন’’ প্রদান করেছেন, তাঁদের শুন্যপদে সুপারিশ করা হয়নি-

এমতাবস্থায় :

১. একটি স্বচ্ছ ও স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ায় ১-১২তম ব্যাচের মধ্যে যোগ্য প্রার্থীদের এন্ট্রি-লেভেলে বয়স বিবেচনায় নিয়োগ দান করে বৈধ ও নিবন্ধিত নিয়োগ বঞ্চিত শিক্ষকদের স্বপ্ন পূরণের মাধ্যমে শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতি-কলঙ্কমুক্ত করতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন শিক্ষকগণ।

মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কাছে তাদের একান্ত চাওয়া খুব অল্প সংখ্যক নিয়োগ বঞ্চিতদের বেকারত্বের অভিশাপ, মানবেতর জীবন যাপন, বেঁচে থাকার তাগিদে ন্যায় বিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নির্বাহী আদেশ চাইছে।

আমার বার্তা/আলিমা আফরোজ লিমা/এমই