
শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি. আর. আবরার জানিয়েছেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা বন্ধের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা সরকারি কর্মচারী আচরণবিধি লঙ্ঘনের শামিল। এ কারণে তাঁদের শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
সোমবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে (বাসস) দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, “মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ আন্দোলনের নামে যা করছেন, তা সরকারি আচরণবিধি লঙ্ঘন। এর জন্য আপনাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। সরকার ইতিমধ্যে তার অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে।”
তিনি বলেন, “বার্ষিক পরীক্ষায় যে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে—কোথাও পরীক্ষা হচ্ছে, কোথাও হচ্ছে না—এটা একেবারেই অনভিপ্রেত ঘটনা।”
শিক্ষক-নেতৃবৃন্দের নবম গ্রেডে উন্নীত হওয়ার দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি অন্যায় ও অযৌক্তিক। “চাকরিতে যোগ দেওয়ার সময় তাঁরা জানতেন তাঁদের পদ দশম গ্রেডে। সেখান থেকে নবম গ্রেড চাওয়া চাকরির শর্তের সঙ্গে যায় না। এটি অন্যায্য দাবি।”
তিনি আরও বলেন, নবম গ্রেড হলো বিসিএস অ্যাডমিন ক্যাডারের প্রবেশধারার গ্রেড। তাই এটি শুধু শিক্ষকদের সঙ্গে সমাধানের বিষয় নয়, বরং আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয়ের বিষয়। “এই গ্রেডে যে কেউ চাইলেই যেতে পারে না,” মন্তব্য করেন তিনি।
ড. আবরার অভিযোগ করেন, আন্দোলনকারীরা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন, যা শিক্ষক হিসেবে চরম অনৈতিক আচরণ। “দিন দুয়েক আগে তারা দাবি তুলেছেন—যখন বার্ষিক বা টেস্ট পরীক্ষা চলছে। শিক্ষার্থীদের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা গুরুতর অনৈতিকতা।”
তিনি বলেন, “আমরা তাদের অযৌক্তিক দাবি প্রত্যাখ্যান করছি। আগামীকাল থেকেই পরীক্ষা নিতে হবে। অন্যথায় সরকারি কর্মচারী আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে শাস্তি অনিবার্য।”
শিক্ষা উপদেষ্টা জানান, সরকার পরীক্ষার বিষয়ে কঠোর অবস্থানে আছে। “পরীক্ষায় কোনো আপস হবে না। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের চাপ কমাতে পরীক্ষা সময়মতো নেওয়া জরুরি।”
তিনি আরও জানান, বিভিন্ন জেলার প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে—ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকরা পরীক্ষায় অংশ নিতে আগ্রহী, তবে অল্প সংখ্যক শিক্ষক পরীক্ষা নিচ্ছেন না। “আমি বলব, শিক্ষকরা আগামীকাল থেকেই তাদের স্কুলে পরীক্ষা নেবেন। নাহলে তাঁরা শাস্তির সম্মুখীন হবেন,” যোগ করেন শিক্ষা উপদেষ্টা।
আমার বার্তা/জেএইচ

