নীলা চৌধুরীর দাবি: মর্গে নেয়ার পরও বেঁচে ছিলেন সালমান শাহ
প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৮:২৫ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের মর্গেও বেঁচে ছিলেন চিত্রনায়ক সালমান শাহ। সম্প্রতি এমনই দাবি করেছেন নায়কের মা নীলা চৌধুরী। দীর্ঘ ২৯ বছর ছেলে হত্যার বিচারের দাবি করা এ মা এবার বিশেষ সাক্ষাৎকারে নায়কের মরদেহ ও ময়নাতদন্ত নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দেন।
সুপরিকল্পিতভাবে তার ছেলেকে খুন করেছেন খুনিরা। ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে যখন ওই ফ্ল্যাটে ছুটে যান, দেখেন অন্যদিনের চেয়েও বেশি পরিপাটি ছিল ওই দিনের ফ্ল্যাট। এটা কীভাবে সম্ভব বলে প্রশ্ন ছোঁড়েন সালমানের মা।
আলাপচারিতার এক পর্যায় নীলা চৌধুরী বলেন, ইমনের ফ্ল্যাটের ওই দালানে আজিজ ভাইয়ের একাধিক ফ্ল্যাট ছিল। ছেলের নিথর দেহ যখন দ্রুত হাসপাতালে নিতে চেষ্টা করি তখন আজিজ ভাইয়ের ফ্ল্যাটের রিতা ও ইয়াসমিন নামে দুজন আমার পথ আগলে দাঁড়ায়। বলে, কে তুমি? কোথায় নিয়ে যাচ্ছো ওকে। আমি তখন তাদের বলি, তুমি কে? আমার ছেলেকে আমি নিয়ে যাচ্ছি। তুমি কে কথা বলার?
নীলা চৌধুরী আরও বলেন, লিফট তখন নিচে নামে না। সময় নষ্ট করার চেষ্টা করেছিল তারা। অনেক কষ্টে নিচে আসি। নিচে এসে বাদল খন্দকারকে দেখতে পাই। ওইদিন রাতে অনেক লোক ইমনের ফ্ল্যাটে ছিল। খাওয়া-দাওয়া হয়েছিল। এতো মানুষের ভিড়ে আমার ছেলে আত্মহত্যা করলো কীভাবে?
ক্ষোভ প্রকাশ করে সালমান শাহর মা বলেন, প্রথমে ওর নিথর দেহ নিয়ে হলিফ্যামিলি যাই। আমি একজন রাজনীতিবিদ। আমাকে সবাই চেনে, সম্মান করে। কিন্তু সেদিন আমার ডাকে কেউ সাড়া দেয়নি। জোর করে একজন ডাক্তারকে ডেকে আনি। তিনি বলেন, অ্যাম্বুলেন্স আছে। আপনারা ঢাকা মেডিকেল নিয়ে যান। ওনার ট্রিটমেন্ট এখানে হবে না।
এরপর অভিনেতার মা বলেন, ঢাকা মেডিকেল যখন যাই, তখন ইমনের কোনো কিছু পরীক্ষা না করেই বলা হলো মারা গেছে। ময়নাতদন্ত করার আগে ইসিজি করতে হয়, এক্সরে করতে হয় কিছুই এরা করেনি। মর্গের এক সালমান ভক্ত ওর নিথর দেহ দেখে বলে ‘সালমান তো মরে নাই’। তখন ওকে ওরা বলে তাড়াতাড়ি সেলাই কর, তা না হলে তোর আমার মৃত্যু এভাবে হবে।
চিকিৎসকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি চিকিৎসকদের কাছে জানতে চাই আমার ছেলেকে যখন কাঠের বাক্সে তুললো তখন আমিতো অনেক দূরে। আমাকে ওকে ধরতে দেয়া হয়নি। কিন্তু আমি দেখেছি, সাদা কাপড়ের মধ্যে লাল রক্ত! এটা কেন? মৃত কারো রক্ত কি লাল হয়? কেন পালস চেক না করেই বলা হলো সালমান মারা গেছে? আমার তাই এখনো মনে হয়, মর্গেতেও বেঁচে ছিল আমার ছেলেটা।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর নিউ ইস্কাটন রোডের ইস্কাটন প্লাজার একটি ফ্ল্যাটে মারা যান ঢালিউডের ‘স্বপ্নের নায়ক’ খ্যাত সালমান শাহ। তার মৃত্যুকে স্ত্রী সামিরা হক আত্মহত্যা দাবি করলেও নায়কের মা, বাবা ও পুরো পরিবারের দাবি এটি একটি সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
দীর্ঘ ২৯ বছর মামলা চলমান থাকার পর অভিনেতার মৃত্যু রহস্য জানতে সম্প্রতি সালমান শাহর অপমৃত্যু মামলাটি রূপ নিয়েছে হত্যা মামলায়। এ হত্যা মামলায় সর্বমোট ১১ জনকে আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যার প্রধান আসামি নায়কের সাবেক স্ত্রী সামিরা হক।
আমার বার্তা/এল/এমই
