চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোতে তিন শিফটে টেস্ট সুবিধা চালুর দাবি
প্রকাশ : ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ১১:২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

দেশের সব সরকারি হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টা রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা চালুর দাবি জানিয়েছে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ফোরাম (এমটিএফ)। সংগঠনটির মতে, চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোতে তিন শিফটে (মর্নিং, ইভিনিং ও নাইট) টেস্ট সুবিধা চালু হলে সরকারি সম্পদের সঠিক ব্যবহার, কার্যকর ব্যবস্থাপনা এবং রোগীদের দ্রুত রোগনির্ণয় ও সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা সহজ হবে।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) রাজধানীর মহাখালীতে ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি) মিলনায়তনে এমটিএফ আয়োজিত ‘জুলাই আকাঙ্ক্ষা ও স্বাস্থ্যখাত সংস্কার’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব দাবি জানান।
এমটিএফ এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. সোহেল রানার সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরামের (এনডিএফ) কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম। প্রধান বক্তা ছিলেন ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী ডা. এসএম খালিদুজ্জামান।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সমাজকর্মী মিজানুর রহমান খান, জুলাই যোদ্ধা রেজাউল করিম শাকিল, ডা. শফিকুল ইসলাম জুয়েল, বৈষম্যবিরোধী জাতীয় মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি মিয়া মু. গোলাম মাওলা, এমটিএফ মহাসচিব রিপন সিকদার প্রমুখ।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এমটিএফের দপ্তর সম্পাদক রফিকুল ইসলাম এবং সঞ্চালনা করেন মু. সোহেল হাওলাদার। প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, চিকিৎসা সরঞ্জামের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে নির্ভুল রোগ নির্ণয়ে বড় ভূমিকা রাখেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, প্যাথলোজিস্ট ও টেকনিশিয়ানরা। সরকারিভাবে পদ সৃষ্টি করে নিয়মিত নিয়োগ দিতে পারলে মেডিকেল টেকনোলজি শিক্ষায় আগ্রহী শিক্ষার্থী বাড়বে।
প্রধান বক্তা ডা. এসএম খালিদুজ্জামান বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা ধরে মেডিকেল জনবলের টিমওয়ার্ক নিশ্চিত হলে সেবা গ্রহীতারা সহজে সেবা পাবে।
সেমিনারে বক্তারা আরও বলেন, সরকারি হাসপাতালে তিন শিফটে সেবা দেওয়া হলেও বহির্বিভাগ এক শিফটে চালু থাকায় সেবা গ্রহীতাদের সময় ও কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়। বাকি দুই শিফটে ভবন ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি অব্যবহৃত থাকে। এতে অনেক রি-এজেন্ট মেয়াদোত্তীর্ণের ঝুঁকিতে পড়ে। ইভিনিং ও নাইট শিফটে পরীক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় রোগীরা বাধ্য হয়ে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ওপর নির্ভর করেন।
বক্তারা বলেন, সব স্তরে তিন শিফটে স্বাস্থ্যসেবা চালু হলে একই ভবন ও যন্ত্রপাতির সর্বোচ্চ ব্যবহার সম্ভব হবে। রোগীরা সুবিধামতো সময়ে পরীক্ষা করাতে পারবেন। এতে প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় সহজ হয়ে চিকিৎসা ব্যয় ও ঝুঁকি দুটোই কমবে।
বক্তারা আরও বলেন, সরকারি হাসপাতালে স্বল্প জনবল থাকার কারণে পরীক্ষার কোয়ালিটি কন্ট্রোল করা সম্ভব হয় না, ফলে ল্যাবরিপোর্টে ফলাফলের পার্থক্য দেখা যায়। খরচ কমিয়ে সেবা বাড়ানো এবং রাজস্ব আয়ের অন্যতম মাধ্যম হতে পারে রোগ নির্ণয় বিভাগে সেবার সময় বৃদ্ধি। কিন্তু দক্ষ জনবল সরকারি খাতে সুযোগ না পেয়ে বেসরকারি খাতে কাজ করছে।
বক্তাদের মতে, তিন শিফটে পরীক্ষার ব্যবস্থা চালু হলে সরকারি সেবার মান ও গতি বাড়বে, রাজস্ব আয় বাড়বে এবং সরকারি খাতে ভর্তুকি কমবে। এজন্য দ্রুত প্যাথলজিস্ট, ডিপ্লোমা ও বিএসসি মেডিকেল টেকনোলজিস্টসহ চিকিৎসা সহায়ক জনবলের পদ সৃষ্টি ও নিয়োগদান জরুরি। একইসঙ্গে মেডিকেল টেকনোলজি কাউন্সিল গঠন, জব রেজিস্ট্রেশন ব্যবস্থা এবং পরিদপ্তর গঠন করে ক্ষেত্রটির যথাযথ তদারকি ও মান নিয়ন্ত্রণের দাবি জানান তারা।
আমার বার্তা/এল/এমই