কী এমন বলেছেন মাস্ক—যার পর ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক প্রায় শেষ
প্রকাশ : ০৬ জুন ২০২৫, ১৯:৩৩ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের মধ্যে চলমান দ্বন্দ্ব নতুন মাত্রা পেয়েছে। এক্স মাধ্যমে মাস্কের একটি পোস্ট এই দ্বন্দ্বের গভীরতা সম্পর্কে কিছুটা অনুমান করা যেতে পারে। ওই পোস্টে মাস্ক লিখেছেন, ‘সবচেয়ে বড় বোমা ফেলার সময় এসেছে।’ এই পোস্টে তিনি দাবি করেন, আলোচিত জেফরি অ্যাপস্টেইনের ফাইলে ডোনাল্ড ট্রাম্পেরও নাম আছে। আর এই কারণেই ফাইলগুলো প্রকাশ করা হয়নি। সবশেষে তিনি লিখেছেন, ‘দিনটি ভালো কাটুক, ডিজেটি (ডোনাল্ড জুনিয়র ট্রাম্প) !’
বাংলাদেশ সময় আজ শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, এক্সের ওই পোস্টটি ট্রাম্প ও মাস্কের ঘনিষ্ঠদের হতবাক করে দিয়েছে। কারণ তাঁরা ট্রাম্প ও মাস্কের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য নীরবে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। একটি ভেতরের সূত্র জানিয়েছে, দ্বন্দ্ব প্রশমনের জন্য ফোনে যোগাযোগ ও মধ্যস্থতার চেষ্টা চলছিল। কিন্তু মাস্কের ওই পোস্টই যেন সবকিছু নষ্ট করে দিয়েছে।
এর আগে দ্বন্দ্বটা মূলত নীতিনির্ধারণী বিষয় ঘিরে থাকলেও, ওই পোস্টের পর তা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত পর্যায়ে চলে গেছে। ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠদের মতে—মাস্কের ওই মন্তব্যের পর তাঁর আর ফিরে যাওয়ার পথ নেই।
শেষ খবরটি হলো—ট্রাম্প ও মাস্কের মধ্যে একটি ফোনালাপ আয়োজনের চেষ্টা চলছে, যদিও আজ শুক্রবার চলে এলেও তা এখনো হয়নি। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তি বলছেন, দুই পক্ষের কাছের মানুষজন চেষ্টা করলেও এই কল আদৌ হবে কিনা তা এখনো অনিশ্চিত। হোয়াইট হাউস সূত্রে জানা গেছে, ট্রাম্প এখন তাঁর ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল’ পাস করাতেই মনোযোগী।
হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার সারা দিন এক্স ও ট্রুথ সোশ্যাল–এ মাস্ক ও ট্রাম্পের ঝগড়া-বিবাদ নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন। অনেকে এটিকে ‘ডিভোর্স’ বা সম্পর্কচ্ছেদের সঙ্গে তুলনা করেছেন। এক কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেছেন, ‘আমি ভেবেছিলাম এটা আগস্টে হবে, এত তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে ভাবিনি।’
হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলাইন লেভিট এই ঘটনাকে ‘দুঃখজনক পর্ব’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘মাস্ক হতাশ হয়েছেন কারণ বিলটিতে তার প্রত্যাশিত নীতিগুলো নেই। প্রেসিডেন্ট এখন ইতিহাস গড়তে চলা এই বিল নিয়ে মনোযোগী।’
এদিকে জেফরি অ্যাপস্টেইন-সংক্রান্ত অপ্রকাশিত ফাইল কীভাবে মাস্কের হাতে এসেছে বা সেই তথ্যের উৎস কী—সেই বিষয়ে তিনি কোনো প্রমাণ দেননি। উল্লেখ্য, জেফরি অ্যাপস্টেইন ২০১৯ সালে যৌন পাচার মামলায় অভিযুক্ত অবস্থায় কারাগারে আত্মহত্যা করেছিলেন। বিশ্বের বিখ্যাত ব্যক্তিদের কাছে অপ্রাপ্তবয়স্ক সহ বিভিন্ন বয়সী নারীদের সরবরাহ করতেন তিনি।
সিএনএন জানিয়েছে, সপ্তাহজুড়ে ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন তাঁর প্রশাসন থেকে পদত্যাগ করা মাস্ক। এই দ্বন্দ্ব চরমে ওঠে যখন মাস্কের সরকারি চুক্তি বাতিলের হুমকি দেন ট্রাম্প; আর এর জেরে অ্যাপস্টেইন প্রসঙ্গ তোলেন মাস্ক।
ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, ‘ইলন আমার বিরুদ্ধে যেতে চায়, সেটাও ঠিক। কিন্তু তা আগেই করা উচিত ছিল।’ জবাবে মাস্ক ট্রাম্পের ইমপিচমেন্ট দাবি করেন, স্পেসএক্সের ড্রাগন মহাকাশযান বাতিলের হুমকি দেন এবং ট্রাম্পের আরোপিত শুল্কে অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কাও প্রকাশ করেন।
তবে বৃহস্পতিবার রাতে মাস্ক লিখেছেন, ‘ভালো উপদেশ। ঠিক আছে, ড্রাগন ডিকমিশন করব না।’ এই মন্তব্যে তিনি কিছুটা নমনীয় মনোভাব দেখান।
অন্যদিকে, বিলিয়নিয়ার বিনিয়োগকারী বিল অ্যাকম্যান বলেছেন, ‘ট্রাম্প ও মাস্কের উচিত দেশের স্বার্থে মীমাংসায় আসা। আমরা একসঙ্গে অনেক বেশি শক্তিশালী।’ জবাবে মাস্ক বলেছেন, ‘আপনি ভুল বলেননি।’