গাজা সিটিতে সবাইকে সন্ত্রাসী বলল ইসরায়েল, নিহত আরও ৫৩
প্রকাশ : ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:২৮ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি হামলা আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত একদিনে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫৩ জন নিহত হয়েছেন।
একইসঙ্গে গাজা সিটিতে অবস্থানরত লাখো মানুষকে শহর ছাড়তে শেষবারের মতো হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইসরায়েল। এমনকি গাজা সিটিতে থেকে যাওয়া সবাইকে “সন্ত্রাসী কিংবা সন্ত্রাসীদের সমর্থক” হিসেবে বিবেচনা করা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গাজায় ইসরায়েলি হামলায় বৃহস্পতিবার ভোর থেকে অন্তত ৫৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। একই সঙ্গে গাজা সিটিতে অবস্থানরত লাখো মানুষকে শহর ছাড়তে ‘শেষ সুযোগ’ দিয়ে হুমকি দিয়েছে ইসরায়েল, না হলে তাদের বিরুদ্ধে সামরিক শক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করা হবে বলে সতর্ক করা হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল ক্যাটজ এক্সে লিখেছেন, গাজা সিটিতে থেকে যাওয়া সবাইকে “সন্ত্রাসী কিংবা সন্ত্রাসীদের সমর্থক” হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
আল জাজিরা বলছে, ইসরায়েলি বিমান ও স্থল হামলায় গাজা সিটি কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন ডজনের পর ডজন মানুষ নিহত হচ্ছে, ভেঙে পড়ছে আবাসিক ভবন ও স্কুল। হাজারো মানুষ বাধ্য হয়ে দক্ষিণের দিকে পালিয়ে যাচ্ছে, তবে পালানোর পথেও হামলার মুখে পড়ছেন তারা।
আল জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার আল-রাশিদ সড়ক দিয়ে ইসরায়েলি সেনারা মানুষকে শহর ছাড়তে বাধ্য করছে, আবার উপকূল ধরে দক্ষিণমুখী হওয়ার পথেও হেলিকপ্টার, ড্রোন ও ট্যাংক দিয়ে তাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। এতে সৃষ্টি হয়েছে চরম আতঙ্ক ও বিশৃঙ্খলা।
তিনি বলেন, “মানুষ গাজা সিটি ছাড়ছে না মূলত ভয় আর ইসরায়েলি সেনাদের ভয়ঙ্কর তৎপরতার কারণে।”
চিকিৎসা সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার গাজা সিটিতে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। দক্ষিণ গাজায় ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে নিহত হয়েছেন আরও ১৩ জন। চলমান দুর্ভিক্ষে খাদ্য সংগ্রহে গিয়ে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা এখন প্রায় ২ হাজার ৬০০, আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৯ হাজার।
আল জাজিরাকে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের এই আগ্রাসনে গাজায় মোট প্রাণহানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৬ হাজার ২২৫ জনে। আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ৬৮ হাজার ৯৩৮ জন। আর এ বছরের মার্চে ইসরায়েল একতরফাভাবে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করার পর থেকে নিহত হয়েছেন ১৩ হাজার ৩৫৭ জন।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ)-এর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেছেন, গাজা সিটিতে থেকে যাওয়া মানুষকে সন্ত্রাসী বা সন্ত্রাসীদের সমর্থক হিসেবে আখ্যা দেওয়া মানে হলো পরিকল্পিত গণহত্যার ইঙ্গিত। এতে নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও যারা শারীরিকভাবে চলাফেরা করতে অক্ষম, তাদের গণহারে হত্যা করা হতে পারে।
আমার বার্তা/এল/এমই