বিগত দুই বছরে ইসরাইলি সেনাদের হাতে প্রাণ গেল ২৩৩ আলেমের

প্রকাশ : ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ১১:২৬ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

গাজা উপত্যকায় গত দুই বছরে ইসরাইলি দখলদার বাহিনীর নির্মম আগ্রাসনে অন্তত ২৩৩ জন মুসলিম আলেম, ইমাম ও ধর্মীয় নেতা এবং ২০ জন খ্রিস্টান ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব শহীদ হয়েছেন। ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের ভাষায়, এটি শুধু একটি সামরিক অভিযান নয়, বরং ফিলিস্তিনি সমাজের নৈতিক ও ধর্মীয় নেতৃত্বকে নিশ্চিহ্ন করার পরিকল্পিত প্রচেষ্টা।

আনাতোলি সূত্রে জানানো হয়, ইসরাইলি বাহিনী ইচ্ছাকৃতভাবে সমাজে প্রভাবশালী ধর্মীয় নেতাদের টার্গেট করছে, যাতে ফিলিস্তিনিদের সাংস্কৃতিক, আধ্যাত্মিক ও জাতীয় ঐক্য ভেঙে দেওয়া যায়।
 
গাজার সরকারি গণমাধ্যম দফতরের পরিচালক ইসমাইল আল-সাওয়াবতা জানান, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া গণহত্যায় ইসরায়েলি হামলায় ২৩৩ জন মুসলিম আলেম এবং ২০ জন খ্রিস্টান ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব নিহত হয়েছেন। একই সময়ে ৮৩৫টি মসজিদ সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস এবং ১৮০টিরও বেশি মসজিদ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া, তিনটি বড় গির্জায় একাধিকবার বিমান হামলা চালানো হয়েছে।
 
সাওয়াবতা বলেন, ‘যেসব ধর্মীয় নেতাকে হত্যা করা হয়েছে, তারা ফিলিস্তিনি জনগণকে ঐক্যবদ্ধ রাখা, ধৈর্য ও সংহতি জাগিয়ে তোলা এবং ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জাতিকে সংগঠিত রাখার কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতেন।’
 
তিনি আরও বলেন, ধর্মীয় নেতাদের ওপর এই হত্যাযজ্ঞের মূল উদ্দেশ্য হলো ফিলিস্তিনি সমাজের মনোবল দুর্বল করা এবং সেই কণ্ঠগুলোকে নীরব করা—যারা দখলদারিত্ব ও অপরাধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়।

নিহতদের মধ্যে রয়েছেন বিশিষ্ট ইসলামি আলেম ও খতিবগণ, ইউসুফ সালামা, আল-আকসা মসজিদের খতিব, ওয়ায়েল আল-জারদ, গাজার আল-উমারি জামে মসজিদের খতিব, ওয়ালিদ আওইজাহ, আন্তর্জাতিক মুসলিম আলেম ইউনিয়নের সদস্য, নায়েল মিসরান, গাজার ধর্মীয় নেতাসহ আরও অনেকেই। 
 
ইসরাইলি বাহিনী খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের উপাসনালয় ও ধর্মীয় নেতাদের প্রতিও কোনো দয়া দেখায়নি। গাজার সেন্ট পোরফিরিয়াস গ্রীক অর্থোডক্স চার্চ, হোলি ফ্যামিলি চার্চ এবং ইভানজেলিক্যাল ব্যাপ্টিস্ট চার্চে একাধিকবার বিমান হামলা চালানো হয়েছে, যেগুলো সেই সময় শরণার্থীদের আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল। এসব হামলায় বহু বেসামরিক মানুষ নিহত ও আহত হয়েছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই নৃশংসতা ইসরাইলি শাসনের এক পরিকল্পিত কৌশল, যার লক্ষ্য ফিলিস্তিনের ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও মানবিক অস্তিত্বকে ধ্বংস করা।

আমার বার্তা/এল/এমই