সিঙ্গাপুরে ফিলিস্তিনপন্থী মিছিল করে গ্রেপ্তার হওয়া ৩ তরুণী খালাস পেলেন

প্রকাশ : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১১:১০ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন

ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে প্রেসিডেন্টের কার্যালয় পর্যন্ত পদযাত্রার আয়োজন করেছিলেন তিন তরুণী। তবে বেআইনি তৎপরতার অভিযোগে তাঁদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার তিনজনকেই বেকসুর খালাস দিয়েছেন সিঙ্গাপুরের একটি আদালত। ‘অবৈধ মিছিল’ আয়োজনের জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল। বিচারক রায়ে বলেছেন, তাঁদের কর্মকাণ্ড অভিযোগের সম্পূর্ণ ধারা পূরণ করেনি।

সামাজিক সংগঠক মোসাম্মদ সাবিকুন নাহার, কনটেন্ট ক্রিয়েটর সিতি আমিরাহ মোহাম্মদ আসরোরি এবং কোকিলা আন্নামালাই—এই তিনজনের বিরুদ্ধে গত ফেব্রুয়ারিতে ইস্তানার (প্রেসিডেন্টের কার্যালয়) আশপাশে পুলিশের অনুমতি ছাড়া একটি পদযাত্রা আয়োজনের অভিযোগ আনা হয়েছিল। সেই পদযাত্রায় প্রায় ৭০ জন মানুষ অংশ নেন এবং তাঁরা ফিলিস্তিনি প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবে তরমুজের মতো রং করা ছাতা বহন করেন।

আদালত রায়ে বলেছেন, যদিও নারীরা পদযাত্রাটি আয়োজন করেছিলেন, তবে তাঁরা ‘জানতেন না’ যে ইস্তানার চারপাশের রাস্তাটি একটি সংরক্ষিত এলাকা। বিচারক উল্লেখ করেন, তাঁরা একটি সাধারণ ফুটপাত ব্যবহার করেছিলেন এবং সেখানে কোনো নিষেধাজ্ঞার চিহ্ন ছিল না। বিচারক মন্তব্য করেন, ‘প্রমাণ থেকে স্পষ্ট, তাঁরা তিনজনই আইন ভাঙা থেকে নিজেদের বিরত রাখার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছিলেন।’

দোষী সাব্যস্ত হলে এই তিন তরুণীর প্রত্যেকের ১০ হাজার সিঙ্গাপুরি ডলার পর্যন্ত জরিমানা বা ছয় মাসের কারাদণ্ড হতে পারত।

খালাস পাওয়ার পর অধিকারকর্মী কোকিলা আন্নামালাই বিবিসিকে জানিয়েছেন, এই অপ্রত্যাশিত রায় সিঙ্গাপুরের অধিকারকর্মীদের মধ্যে ‘নতুন শক্তি এবং আশা’ জাগিয়ে তুলবে। তিনি বলেন, তাঁরা সাজার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত ছিলেন এবং খালাস পাওয়াটা ‘আশ্চর্যজনক’। তিনি আরও যোগ করেন, ‘প্রথমত, আমাদের অভিযুক্তই করা উচিত ছিল না।’

এ মামলাটি সিঙ্গাপুরে ব্যাপক মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল। আদালতে শুনানিতে ফিলিস্তিনি পতাকার রঙে পোশাক পরে এবং কেফিয়াহ স্কার্ফ পরে এই তিন তরুণীর উপস্থিতি অনলাইন জগতে ভাইরাল হয়েছিল।

সিঙ্গাপুরে জনসমাবেশের বিষয়ে কঠোর নিয়ম রয়েছে এবং কোনো কারণ প্রচারের জন্য পুলিশি অনুমতি বাধ্যতামূলক। কর্তৃপক্ষ কার্যকরভাবে ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ-সম্পর্কিত সব জনসমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে। কারণ, তাদের মতে, এই ধরনের ঘটনা ‘জনশৃঙ্খলার ঝুঁকি তৈরি করতে পারে’।

যদিও সরকার দাবি করে, এই নিয়মগুলো দেশে শান্তি ও ঐক্য বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয়। সমালোচকেরা মনে করেন, এগুলো বাক্‌স্বাধীনতা দমন করারই কৌশল।

এদিকে সিঙ্গাপুরের প্রসিকিউটরিয়াল অফিস জানিয়েছে, তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে। পুলিশ ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ-সম্পর্কিত অন্যান্য অফলাইন এবং অনলাইন ইভেন্ট নিয়েও তদন্ত শুরু করেছে।


আমার বার্তা/জেএইচ