নৌ মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প থেকে ২৪৮০ কোটি টাকা সাশ্রয়: সাখাওয়াত হোসেন
প্রকাশ : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯:৩৮ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

গত এক বছরে যাচাই-বাছাইয়ের ফলে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রকল্প থেকে ২ হাজার ৪৮০ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের গত এক বছরের অর্জন নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা এ কথা জানান।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, গত এক বছরে মোংলা বন্দরের সম্প্রসারণ প্রকল্প থেকে ২১৪ কোটি টাকা, বিআইডব্লিউটিএ’র (বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ) মিঠামইন প্রকল্প থেকে ২৭০ কোটি টাকা, বিআইডব্লিউটিএ’র ৩৫ ড্রেজার প্রকল্প থেকে এক হাজার ৩০০ কোটি টাকা, মেরিন একাডেমির সিমুলেটর প্রকল্প থেকে ১৩৩ কোটি টাকা এবং পায়রা বন্দরের রামনাবাদ চ্যানেল ড্রেজিং প্রকল্প থেকে ৫৬৩ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে।
তিনি বলেন, এর মানে ২ হাজার ৪৮০ কোটি টাকা সাশ্রয় করে সরকারকে ফেরত দেওয়া হয়েছে। এটা কোনো ছোট পরিমাণ নয়।
মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট কারিগরি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে আলাদা আলাদা কমিটির মাধ্যমে প্রকল্পগুলো যাচাই-বাছাই করে যৌক্তিকতা নিরূপণ পূর্বক অর্থ সাশ্রয় করা সম্ভব হয়েছে বলেও জানিয়েছেন উপদেষ্টা।
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, মিঠামইন প্রকল্পটি ছিল নদীতে পয়সা ফেলার মতো। কিছু অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প নেওয়া হয়েছে কিছু কিছু লোককে সুবিধা দেওয়ার জন্য। একটি বিল, যেখানে দেশি নৌকা ট্রলার চলে, সেটি খনন করার মতো প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা গত এক বছরে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সংস্কার ও বিশেষ কার্যক্রম, ব্যবসা সম্প্রসারণ, প্রবিধান/বিধিমালা/নীতিমালা প্রণয়ন, চুক্তি স্বাক্ষর, রাজস্ব আয় বৃদ্ধি, সরকারি কোষাগারে রাজস্ব জমা, জনবল নিয়োগসহ বিভিন্ন অর্জন তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, গত এক বছরে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ৮ দশমিক ৫ শতাংশ, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের ২০ শতাংশ, বাংলাদেশের স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের ৪ দশমিক ২৬ শতাংশ, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ২৩ শতাংশ, বিআইডব্লিউটিএ’র ৯ দশমিক ৪০ শতাংশ, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের ১০ দশমিক ২০ শতাংশ, চট্টগ্রামের বিএমএ’র ৪৫ শতাংশ রাজস্ব আয় বেড়েছে।
তিনি আরও জানান, গত ৫৪ বছরে প্রথমবারের মতো নৌযান ডাটাবেজ তৈরির লক্ষ্যে নৌশুমারির জন্য বিবিএসের সঙ্গে এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ ৩৬৭টি স্থাপনা উচ্ছেদ করে ৯ দশমিক ৮০ একর জমি দখলমুক্ত করা হয়েছে, যার মূল্য ২৭ কোটি টাকা। এছাড়া কক্সবাজার জেলার বাকখালী নদী থেকে ৪৯৬টি বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা উচ্ছেদ করে মোট ৬৩ একর জায়গা উদ্ধার করা হয়েছে, যার সরকারি মূল্য ৮৬৪ কোটি টাকা এবং জব্দ করা বালুর নিলাম মূল্য এক কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
মোংলা বন্দরে আধুনিক বর্জ্য ও নিঃসৃত তেল অপসারণ ব্যবস্থাপনা প্রকল্প সমাপ্ত হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে পরিবেশ বিপর্যয় থেকে পশুর নদী ও সন্নিহিত সুন্দরবনের পরিবেশ সুরক্ষাসহ বার্ষিক প্রায় ২০ হাজার টন বর্জ্য ট্রিটমেন্ট করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন সাখাওয়াত হোসেন।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থায় গত এক বছরে এক হাজার ৩৫ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, কিছুই করিনি, এই যৎসামান্য করেছি। অত্যন্ত এনকারেজিং, একটা মন্ত্রণালয় এভাবে এক বছরের মধ্যে যদি কাজ করতে পারে, তাহলে যারা পাঁচ বছর থাকবে, আশা করি দেশ আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হবে।
‘ষোলো আনার মধ্যে তো এক আনা হয়েছে। বাকিটা আপনারা বিচার করবেন। আমার মন্ত্রণালয় যে এক বছর বসে থাকেনি, দিনরাত কাজ করেছে।’
এ সময় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ ইউসুফসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আমার বার্তা/এমই