জয়, পুতুল ও ববিসহ ৮ জনের নামে মামলার অনুমোদন
প্রকাশ : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৬:৩৭ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় অর্থের ক্ষতি সাধন এবং মানিলন্ডারিং এর অভিযোগে সজিব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, রেদওয়ান সিদ্দিক ববি ও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (৫ নভেম্বর) দুদকের মহাপরিচালক মো আক্তার হোসেন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, আওয়ামী লীগের গবেষণা শাখা সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) নামে ১৫ কোটি টাকা আত্মসাত, ৪৩৯ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেন এবং ৩৬ কোটি টাকার কর ফাঁকির অভিযোগে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা, এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলা অনুমোদন করেছে কমিশন।
মামলার আসামি- ১. সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয়, চেয়ারম্যান ও ট্রাস্টি, সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই), এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা; ২. সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, ভাইস চেয়ারম্যান ও ট্রাস্টি, সিআরআই; ৩. রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, ট্রাস্টি, সিআরআই; ৪. নসরুল হামিদ বিপু, ট্রাস্টি, সিআরআই; ৫. শাব্বির বিন শামস, নির্বাহী পরিচালক, সিআরআই; ৬. রওশন আরা আক্তার, সদস্য (কর আপিল), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), ঢাকা; ৭. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, সাবেক চেয়ারম্যান, এনবিআর ও সাবেক সিনিয়র সচিব, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ এবং ৮. আ হ ম মুস্তফা কামাল, সাবেক অর্থমন্ত্রী।
দুদকের অভিযোগ
দুদক জানায়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অসৎ উদ্দেশ্যে জনকল্যাণের নামে গঠিত সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) নামক একটি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে প্রাপ্ত অর্থের অপব্যবহার করেছেন।
তারা আয়কর আইনের ক্ষমতার অপব্যবহার করে কর মওকুফ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে ব্যক্তিগতভাবে এবং একে অপরকে অন্যায়ভাবে লাভবান করেছেন। জনকল্যাণমূলক কাজে অর্থ ব্যয় না করে, সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধন না থাকা সত্ত্বেও এসআরও জারি করে কর সুবিধা গ্রহণ ও প্রদান করেছেন।
দুদকের অনুসন্ধান অনুযায়ী, আসামিরা অবৈধভাবে চাপ প্রয়োগ করে অনুদান গ্রহণের মাধ্যমে সিআরআই-এর হিসাবে ২৩টি কোম্পানি থেকে ৪৫ কোটি ৩৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকা নিয়েছেন। ২০১৩-১৪ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত তাদের মোট আয় ছিল ১০০ কোটি ৩১ লাখ ৪০ হাজার ৪৮৬ টাকা। এর মধ্যে গ্রহণযোগ্য ব্যয় বাদ দিয়ে হিসাব অনুযায়ী থাকা উচিত ছিল ৭০ কোটি ৮০ লাখ ৪২ হাজার ৩৯০ টাকা, কিন্তু প্রকৃত স্থিতি পাওয়া গেছে ৫৫ কোটি ১১ লাখ ৮২ হাজার ৮৯৬ টাকা।
অর্থাৎ, ১৫ কোটি ৬৮ লাখ ৫৯ হাজার ৫২১ টাকা আত্মসাত করা হয়েছে।
তাছাড়া ২৫টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে মোট ৪৩৯ কোটি ৬ লাখ ৭৯ হাজার ৪৮০ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এছাড়া আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর শিডিউল ৬, পার্ট-বি, ১১(বি) ধারা ভঙ্গ করে ৩৬ কোটি ৫২ হাজার ৭৪২ টাকা কর প্রদান না করে সরকারের ক্ষতি সাধন করা হয়েছে।
দুদক জানায়, আসামিরা অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে হস্তান্তর করেছেন। ফলে দণ্ডবিধি, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজুর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
আমার বার্তা/এমই
