কেন আপিলের সুযোগ হারালেন হাসিনা

প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৫৯ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় দায়ের করা মামলার রায় আজ ঘোষণা করতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। বিচারপতি মোঃ গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ এই ঐতিহাসিক রায় দেবেন বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।

মামলাটিতে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। দীর্ঘ তদন্ত, সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শেষে আদালত আজ রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য করেন।

আইন অনুযায়ী, যে আসামিরা গ্রেফতার আছেন তারা রায় প্রকাশের পর ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করার সুযোগ পাবেন। একইভাবে রাষ্ট্রপক্ষও এই সময়ের মধ্যেই আপিল বিভাগে যেতে পারবে।

তবে পলাতক আসামিদের বিষয়ে আলাদা অবস্থান স্পষ্ট করেন প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হোসাইন তামিম। তিনি বলেন,

“এই মামলার আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান আদালতের অনুপস্থিতিতে বিচারকাজ চলেছে। দণ্ড হলে তারা আপিল করার সুযোগ পাবেন না এটাই আইনের বিধান।”

তিনি আরো জানান, নারী বা পুরুষ আইনি কাঠামোয় রায় প্রদানের ক্ষেত্রে কোনো আলাদা সুবিধা নেই। অপরাধের মাত্রা, প্রমাণ ও আইন অনুযায়ীই শাস্তি নির্ধারণ করা হবে।

মামলার একমাত্র গ্রেফতার আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ‘রাজসাক্ষী’ হিসেবে দেওয়া জবানবন্দিতে তিনি উল্লেখ করেন, গত বছরের ১৮ জুলাই তিনি তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের মাধ্যমে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে “লেথাল উইপন ব্যবহারের সরাসরি নির্দেশ” পেয়েছিলেন।

তার জবানবন্দি অনুসারে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ছত্রভঙ্গ করতেই ওই নির্দেশ দেওয়া হয়। তদন্ত প্রতিবেদনের ভাষ্যমতে, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে এই অভিযানের সময় প্রায় দেড় হাজার নিরস্ত্র মানুষ নিহত হন এবং প্রায় ৩০ হাজার আহত হন।

ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়, রাষ্ট্রীয় উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশেই আন্দোলনকারীদের উপর প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল। হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন ও আঘাতের ঘটনাগুলোকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অন্তর্ভুক্ত করে অভিযোগ গঠন করা হয়।

বহুল আলোচিত এই মামলার রায়কে ঘিরে দেশে-বিদেশে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে। রায় ঘোষণা হলে তা দেশের রাজনীতি ও ন্যায়বিচার ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে বিশ্লেষকদের মত। আজ ট্রাইব্যুনালের আদালতকক্ষেই আনুষ্ঠানিকভাবে রায় পাঠ করা হবে।