শহীদ আবরার ফাহাদের আত্মত্যাগে গণঅভ্যুত্থানের সিঁড়ি তৈরি হয়েছে

প্রকাশ : ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৯:১২ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ : ফাইল ছবি

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ছয় বছর আগে ছাত্রলীগের নির্যাতনে প্রাণ হারানো বুয়েট শিক্ষার্থী শহীদ আবরার ফাহাদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের সিঁড়িগুলো নির্মিত হয়েছে। 

মঙ্গলবার (০৭ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটোরিয়ামে ‘মতপ্রকাশ থেকে মৃত্যু: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফ্যাসিবাদের বিস্তার ও প্রতিরোধ’ শিরোনাম জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। 

সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা আমাদের সিঁড়ি নির্মাণ করেছি শাপলা চত্বরের শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে এবং আবরার ফাহাদের মতো শহীদদের আত্মত্যাগকে বর্তমানে গঠনকৃত রাজনৈতিক সংগ্রামের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিবেচনা করার আহ্বান জানান। তিনি ইতিহাসভিত্তিক বিশ্লেষণের গুরুত্বে জোর দিয়ে বলেন, বিষয়টি মাত্র আঞ্চলিক হেজিমনি বা আগ্রাসন হিসেবে এক শব্দে বিশ্লেষণ করা যাবে না; এটি বিশদ ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে দেখতে হবে।

তিনি বলেন, ব্রিটিশ শোষণ থেকে শুরু করে পরবর্তী সময়ে পূর্ববঙ্গের রাজনৈতিক ইতিহাস– ১৯০৫-এর ভঙ্গভঙ্গ, ১৯১১-এর ভঙ্গভঙ্গ রদ এবং পরে লাহোর প্রস্তাব, সব মিলিয়েই ভাগাভাগি ও শোষণের ধারাকে প্রভাবিত করেছে। তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত রাজনীতির ধারায় বিদেশি আধিপত্যবাদের নানামুখী ইতিহাস দেখা যাবে এবং দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অবনতিও নিজেদের মধ্যে বিশ্লেষণ করা দরকার।

সালাউদ্দিন বলেন, পৃথিবীর প্রত্যেক দেশে পার্শ্ববর্তী যে সব বৃহৎ শক্তির দেশ আছে, তাদের একটি পরিকল্পনা থাকে। দুর্বল প্রতিবেশী দেশে সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিকভাবে আধিপত্য বিস্তারের কৌশল নিয়ে সতর্কবার্তা দেন তিনি।

তিনি বলেন, বিদেশি প্রভাবশালী শক্তির পক্ষে অনুকূল শাসকগোষ্ঠী সৃষ্টির মাধ্যমে এ ধারা কার্যকর করার চেষ্টা চালানো হয়েছে এবং এতে তারা আংশিক সফলও হয়েছে।

বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, শুধু মাঠে স্লোগান তুলে বা রাজনীতি করে ‘খারাপ পলিটিক্স’ ধ্বংস করা যাবে না বরং শিকড় থেকে বদল আনতে হবে; রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন করে ‘ভাল রাজনীতি’ প্রতিষ্ঠাই একমাত্র কার্যকর উপায়। তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদের শেকড় তুলতে হলে জনগণের সামনে ভালো রাজনীতির উপস্থাপন করতে হবে।

আলোচনা সভায় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ২০১৯ সালে গভীর রাতে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল এবং তখনকার প্রতিবাদ সত্ত্বেও সহায়ক ব্যবস্থা নিতে পারা যায়নি। 

আবরারের মৃত্যুর পরপরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল ও প্রতিবাদ হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি জানান, আজও ছাত্ররূপে তাদের রাজপথে থাকার প্রতিশ্রুতি অটুট রয়েছে এবং সোশ্যাল মিডিয়ার প্রচারণার বিরুদ্ধে তারা সরাসরি গণআন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার তাগিদ দেন।

এছাড়াও বক্তারা আবরার ফাহাদের স্মরণে আন্দোলন ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।


আমার বার্তা/এমই