বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে কোরআন শেখানোর উদ্যোগ
প্রকাশ : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯:২৫ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে কোরআন শিক্ষা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধ তৈরির লক্ষ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশন পরিচালিত মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্পের আওতায় এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আসছে জানুয়ারিতে শুরু হবে এই কার্যক্রম।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক আরবি ভাষা দিবস-২০২৫ উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চবির আরবি বিভাগ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, আরবি হাজার বছরের ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ ভাষা। এ ভাষা কেবল যোগাযোগের মাধ্যম নয়, এটা সাহিত্য, সংস্কৃতি, দর্শন ও তত্ত্বীয় জ্ঞানের ভান্ডার। এ ভাষার গুরুত্ব, তাৎপর্য ও প্রভাব সবিস্তারে বলার অবকাশ রাখে না। পৃথিবীর ২০টিরও বেশি দেশে প্রধান ভাষা আরবি। বিশ্বের ৪০০ মিলিয়নের বেশি মানুষ এ ভাষায় কথা বলে। এ ভাষার উৎকর্ষ ও সৌকর্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আবরদের চেয়ে অনারব অঞ্চলের মানুষের ভূমিকা কম নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ধর্ম উপদেষ্টা আরও বলেন, আরবি বিভাগে যারা লেখাপড়া করেন তাদের জন্য সারা পৃথিবীতে স্কলারশিপের দরজা খোলা আছে। আরববিশ্ব, তুরস্ক এমনকি ইংল্যান্ডেও আরবিতে পড়ে এমফিল, পিএইচডি, এমএ করার সুযোগ রয়েছে।
উপদেষ্টা আরবি বিভাগের শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আরবিতে পড়ে কেন স্ক্রিপ্ট বাংলায় লিখবেন, এটা অবশ্যই আরবিতে লিখতে হবে। আরবির শিক্ষকরা আরবিতেই থিসিস লিখবে, বাংলায় নয়। আরবি বিভাগের শিক্ষার্থীদের উত্তরপত্র আরবি ছাড়া অন্য ভাষায় গ্রহণ না করার জন্য শিক্ষকদের প্রতি অনুরোধ জানান উপদেষ্টা।
শিক্ষাঙ্গনের রাজনীতির নেতিবাচক প্রভাব উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা আমাদের জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে বাধা। শিক্ষক নেবো আমার দলের, শিক্ষক বানাবো আমার কর্মীকে- এই কালচার পরিহার করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়কে কোনো নির্দিষ্ট দলের রাজনৈতিক কেন্দ্র পরিণত হতে দেওয়া উচিত নয়। শিক্ষাঙ্গনকে দলীয়করণের মানসিকতাকে বদলানোর জন্য শিক্ষকদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
ড. খালিদ বলেন, ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখার মানসিকতা আমাদেরকে পিছিয়ে দিয়েছে। ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে রাখার মানসিকতা ত্যাগ করার অনুরোধ জানান তিনি।
আরবি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন তালুকদারের সভাপতিত্বে এ আলোচনা সভায় গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তৃতা করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। এতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মোঃ কামাল উদ্দিন, কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ ইকবাল শাহীন খান ও রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন। অন্যান্যের মধ্যে জামিয়াতুন নূর আল-আলমিয়াহ বাংলাদেশের পরিচালক ওবায়দুল্লাহ হামযাহ বক্তৃতা করেন।
এ অনুষ্ঠানে আরবি ভাষা ও সাহিত্যে অবদান এবং আরবি শিক্ষায় স্কলারশিপ প্রদান ও আরবি গ্রাজুয়েটদের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখার জন্য ৩২ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
পরে উপদেষ্টা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরিন সায়েন্স ও ফিশারিজ অনুষদ অডিটোরিয়ামে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় স্টুডেন্টস এসোসিয়েশন লোহাগাড়া-সাতকানিয়া(চুসালস) আয়োজিত নবীন বরণ, চাকসু সংবর্ধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন।
আমার বার্তা/এমই
