নরসিংদীর দুর্গম চরাঞ্চল রায়পুরায় মেঘনার পানি বৃদ্ধি ও পানির তীব্র স্রোতে নদীতীরবর্তী কয়েকটি গ্রামে আবারও ভাঙনের হুমকিতে দিনাতিপাত করছে নদীপাড়ের কয়েকশত পরিবার।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার নদীবেষ্টিত দুর্গম চরাঞ্চল মির্জারচর ইউনিয়নে মির্জারচর, কান্দাপাড়া, তাতাপাড়া, শান্তিপুর বাজার পর্যন্ত মেঘনায় পানির তীব্র স্রোতে তীরবর্তী কয়েক কিলোমিটার এলাকায় আবারও ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা ডাম্পিং কাজে নিয়জিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজে ধীরগতি ও গাফিলতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, ইউনিয়নের মির্জারচর, তাতাপাড়া, ধান্দাপাড়া, শান্তিপুর বাজার পর্যন্ত নদী তীরবর্তী এলাকায় বেশ কয়েকটি গ্রামে গ্রাম প্রতিরক্ষা বাঁধ না থাকায় বছরের পর বছর শুষ্ক ও বর্ষা মৌসুমে মেঘনায় বিলীন হয়েছে বসত-ভিটা, হাট-বাজার, ফসলী জমি, মসজিদ, কবরস্থান, মাদরাসা, ঈদগাঁ, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। ফের ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ, মাদরাসা কবরস্থানসহ কয়েকশত পরিবারের বসত-ভিটা। হুমকিতে দিনাতিপাত করছেন কয়েকশত পরিবার।
নদী ভাঙন রোধে ৪শ ২০ মিটার অংশে জিও ব্যাগ ডাম্পিং এর জন্য টেকভে ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে গত বছর ২০ সেপ্টেম্বর মাসে ২ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ে কাজের দায়িত্ব দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। চলতি বছরের জুলাই মাসে কাজটি সম্পূর্ণ করার কথা থাকলেও এখনো ৫০ শতাংশ কাজ বাকি রয়েছে। ফলে ওই অংশেও ভাঙ্গন অভ্যাহত রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল হোসেন বলেন, মেঘনা নদী বেষ্টিত মির্জারচরের নদী তীরবর্তী এলাকা বিলীন হয়েছে। নদী ভাঙনে অনেক পরিবার বাস্তুহারা হয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়ে বসবাস করছে। আবারও ভাঙনের হুমকিতে কয়েকশত পরিবার। যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দ্রুত প্রতিরক্ষা বাঁধ চাই। না হলে আগামীতে কয়েকটি গ্রাম বিলীন হয়ে যাবে।
মির্জারচর ইউপি চেয়ারম্যান আফরোজা আক্তার বলেন, ইতোপূর্বে এলাকায় নদী ভাঙনে ফসলি জমি, মসজিদ, কবরস্থান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিলিন হয়েছে। দ্রুত প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা নদী তীরবর্তী মানুষের দাবি। তা না হলে শত শত পরিবার বাস্তুহারা হয়ে পড়বে। জিও ব্যাগ ডাম্পিং কাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানসহ দ্রুত প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণে যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছি।
টেকভে ইন্টারন্যাশনাল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মো. সাইম বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান হত্যাসহ নানান প্রতিকূলতার কারণে কাজে ধীরগতি হয়। কাজের সময় বাড়িয়ে নিতে আবেদন করা হবে। আসা করি দ্রুত কাজটি সম্পন্ন করতে পারবো।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী বিজয় চন্দ্র শংকর জানান, টেকভে ইন্টারন্যাশনাল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বলছে তাদের কাজ চলমান রয়েছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাঙন হতে পারে। ভাঙন রোধে কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য আমাদের পক্ষ থেকে বার বার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বলা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আজগর হোসেন বলেন, বিষয়গুলো নিয়ে প্রতিনিয়ত জেলা মিটিংয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হচ্ছে। এসব এলাকায় প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমেই ভাঙন রোধ করা সম্ভব।
এবি/ জেডআর