নরসিংদীতে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুমন হত্যার রেশ কাটতে না কাটতেই মেহেরপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হাসানকে (৪০) গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
মঙ্গলবার দিবাগত ১২টার দিকে নরসিংদী সদর উপজেলার ভগিরথপুর এলাকায় বাবা টেক্সটাইল এর সামনে এ ঘটনা ঘটে। হামলায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুইজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
নিহত মাহবুবুল হাসান নরসিংদী সদর উপজেলার মাধবদী থানাধীন ভগিরথপুর গ্রামের মৃত ইমাম উদ্দিনের ছেলে। তিনি মেহেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
আহতরা হলেন— ভগিরথপুর গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে সাঈদ হাসান পাপ্পু (৩৮) ও ফরহাদ। তাদেরকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে ৮/১০ জনকে নিয়ে নরসিংদী সদর উপজেলার ভগিরথপুর চেয়ারম্যান মার্কেট থেকে বাড়ি ফিরছিলেন মাহবুবুল হাসান। এ সময় আগে থেকে ওত পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা তাঁকে লক্ষ্য করে ককটেল ও গুলি ছোড়ে। এতে মাহবুবুল হাসান ও তাঁর সঙ্গে থাকা দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়। গুলিবিদ্ধ হয়ে মাহবুবুল মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে সন্ত্রাসীরা। পরে স্থানীয়রা আহত মাহবুবুল হাসানকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। গুলিবিদ্ধ ফরহাদ ও সাঈদ হাসান পাপ্পুকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নূরালাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, এই হত্যাকাণ্ড রাজনীতির জন্য অশনিসংকেত। মাহবুবুল এর জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়েই তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা অবিলম্বে এই হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি।
খবর পেয়ে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ছুটে আসেন নিহতের স্বজন, আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীসহ জনপ্রতিনিধিরা। রাজনৈতিক পূর্ব বিরোধের জেরে পরিকল্পিতভাবে এ হত্যার ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে দাবি কর্মী সমর্থক ও স্বজনদের। তারা এ হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে।
নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. আসাদ আব্দুল্লাহ খান বলেন নিহত মাহবুবুল হাসানকে আমাদের এখানে মৃত অবস্থায় নিয়ে আসা হয়। তার ঘাড়ে, পিঠে ও চোয়ালে ধারালো অস্ত্রের কাটা দাগ রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলেই তার মৃত্যু হয়েছে। তবে তাকে গুলি করা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এমন কোন চিহ্ন আমরা দেখতে পাইনি। তবে ময়নাতদন্তের পরেই এ বিষয়ে নিশ্চিত করে বলা যাবে।
রাতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে নরসিংদী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান। এ সময় জেলা পুলিশ ও গোয়েন্দাদের একটি দল তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
নরসিংদী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি তানভীর আহমেদ বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান হত্যার পর পুলিশ ঘটনার তদন্তের পাশাপাশি অপরাধীদের ধরতে তৎপরতা চালাচ্ছে। পরবর্তী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
আমার বার্তা/এমই