সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে ১২- ১৩ বছরের এক কিশোরকে ঘিরে রেখেছে উৎসুক জনতা। কেউ মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করছে। কয়েকজন আবার ছেলেটিকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে, কিছু স্বীকার করানোর চেষ্টা করছে। ভিডিওটি ভালোভাবে লক্ষ্য করলে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে কিশোরটির হাতে ছোট্ট একটি পলিথিনে গোলাপি রঙের ছোট ছোট ট্যাবলেট সাদৃশ্য কিছু একটা রয়েছে। একজন আবার আওনারা গ্রামে মাল নিতে ঢুকতে নিষেধ করছেন। কেউ জিজ্ঞেস করছে কয়টা বড়ি আছে এখানে।
উত্তরে কিশোরের সরল স্বীকারোক্তি "সাতটি" কেউ জিজ্ঞেস করছে এগুলো নিতে তাকে কে পাঠিয়েছে, কেউ আবার জানতে চাচ্ছে কোথা থেকে আনা হয়েছে? উল্লেখ্য, বাবা, মাল বা বড়ি, যে শব্দগুলো এখানে ব্যবহার করা হয়েছে ,জানা যায় সেগুলো আসলে প্রাণঘাতী মাদক ইয়াবার প্রচলিত বিভিন্ন নাম।
পোয়াইল গ্রামের সেলিম তাকে কিনতে পাঠিয়েছে এবং আউনারা গ্রামের কোবাদের ছেলে জালালের নিকট থেকে কেনা হয়েছে, ভিডিওতে এমনটাই বলতে দেখা যাচ্ছে ওই কিশোরকে।
জানা যায় সেলিম উপজেলার পোয়াইল গ্রামের গ্রামের মৃত কউসার মেম্বারের ছেলে এবং আমিনুর রহমান কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি। পরে সেলিমের সাথে ওই কিশোরের মোবাইলে কথোপকথনের একটা কল রেকর্ডিং এ সেলিমকে ঘটনা স্থলে আসতে বলতে দেখা যায় ওই কিশোরকে। ওই কিশোর সেলিমের মাদক ব্যবসায় ক্যারিয়ার হিসেবে কাজ করে বলে অভিযোগ রয়েছে।
মহম্মদপুর থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আদালতে সেলিমের নামে ২০১৮ সালের একটা মাদক মামল রয়েছে এবং বর্তমান সে মামলায় তিনি জামিনে আছেন।
এছাড়া ২০২৪ এর জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনের দাবিতে ছাত্র জনতার আন্দোলন চলাকালে দেশীয় অস্ত্র হাতে পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীদের বিপক্ষে অবস্থান নিতে দেখা গেছে কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক এই নেতাকে। সে কারনে হাসিনা সরকারের পতনের পর পুলিশের হাতে গ্রেফতারও হয়েছিলেন। কিছুদিন কারাবাসের পর এখন তিনি জামিনে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের এই নেতা কাদের ছত্রছায়ায় এ ধরনের কর্মকাণ্ড এখনো চালিয়ে যাচ্ছে, প্রশাসন কেন তার এ আইনবিরোধী কর্মকাণ্ড বন্ধে স্থায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে না, এমন প্রশ্ন সাধারন মানুষের।
এছাড়া, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের এ দোসর সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টিতে ইয়াবার মত প্রাণঘাতী মাদক যুব সমাজের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়ে যুবসমাজকে মেধাশূন্য করে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নেওয়ার পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
এ ধরনের মানুষ সমাজ ও দেশের জন্য ক্ষতিকর। তাই এদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি সচেতন মহলের।