ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা-১ কূপের তৃতীয় স্তরেও গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে। গতকাল সোমবার সকাল থেকে তৃতীয় স্তরের ডিএসটির (ড্রিল স্টেম টেস্ট) কাজ শুরু হয়েছে। এদিন সকাল ৭টায় ৩২৫০ থেকে ৩২৫৪ মিটার মাটির গভীরে আগুন প্রজ্বলনের মাধ্যমে গ্যাস উত্তোলনের এই পরীক্ষা শুরু করা হয়।
ধারণা করা হচ্ছে- এই কূপ থেকে দৈনিক ২০ মিলিয়ন বা ২ কোটি ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন যাবে এবং কূপটিতে ২০০ বিসিএফ বা তারও বেশি পরিমাণ গ্যাসের মজুত রয়েছে।
এর আগে কূপটিতে গত ২৮ এপ্রিল পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম ডিএসটির কার্যক্রম সফলভাবে শুরু করা হয় এবং ৭ মে দ্বিতীয় ডিএসটি শুরু হয়। গতকাল সোমবার তৃতীয় স্তরের টেস্ট শুরু হলো। গত ৯ মার্চ সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের মালের হাট সংলগ্ন এলাকায় ইলিশা-১ কূপের খনন কাজ শুরু হয়।
বাপেক্সের মহাব্যবস্থাপক (ভূ-তাত্ত্বিক বিভাগ) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, গতকাল সোমবার সকালে আমাদের তৃতীয় ডিএসটি সফলভাবে শুরু করা হয়েছে। মাটির নিচে গ্যাসের প্রেসারও বেশ ভালো রয়েছে। প্রথম দিন গ্যাসের প্রেসার রয়েছে ৩৪০০ পিএসআই।
এই পরীক্ষামূলক গ্যাস উত্তোলন মোট ৭২ ঘণ্টা চলবে। গ্যাসের লাইনগুলো পরিষ্কার হচ্ছে। তাই এই প্রেসার আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পরবর্তীতে চূড়ান্ত পর্যায়ে গ্যাস উত্তোলনের লক্ষ্যে কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।
বাপেক্স সূত্রে জানা যায়, নতুন এ গ্যাস ক্ষেত্রের কূপ নিয়ে জেলায় মোট তিনটি গ্যাস ক্ষেত্রের ৯টি কূপ রয়েছে। এগুলো হলো বোরহানউদ্দিন উপজেলার শাহাবাজপুর গ্যাস ক্ষেত্র ছয়টি কূপ, সদরের ভেদুরিয়া ইউনিয়নের ভোলা নর্থের দুটি ও সর্বশেষ ইলিশা গ্যাস ক্ষেত্রের ইলিশা-১ কূপ।
যা থেকে দৈনিক মোট ১৮০ থেকে ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলনের সক্ষমতা রয়েছে। এছাড়া নতুন এ গ্যাস ক্ষেত্র হতে যাচ্ছে দেশের ২৯তম গ্যাস ক্ষেত্র।
জানা যায়, ১৯৯৪-৯৫ সালে ভোলার শাহবাজপুরে প্রথম গ্যাসের সন্ধান মেলে। এরপর থেকে এখানে আরও গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়।
একের পর এক গ্যাসের সন্ধান মেলায় নতুন করে সম্ভাবনা দেখছে ভোলাবাসী। তবে এই গ্যাস সরবরাহ নিয়ে নানা জটিলতার কথাও বলা হয়। অবশ্য সরকার এই গ্যাস ভোলাসহ আশপাশের এলাকায় বিতরণের কথা জানিয়েছে।
এদিকে ভোলাবাসী প্রত্যাশা করছে, নতুন গ্যাস ক্ষেত্র পাওয়ার ফলে একদিকে যেমন জেলার অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে, অন্যদিকে বিপুল সংখ্যক বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হবে। গৃহস্থালীর কাজেও ঘরে ঘরে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার দাবি ভোলাবাসীর।
এবি/ওজি