কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের ছাতারপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক সহিদুল হক (৫৭) কে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে মারধরের ঘটনার প্রতিবাদ ও জড়িতদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিদ্যালয়ের অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীরা।
গতকাল ১৯ জুলাই বুধবার দৌলতপুর উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের ছাতারপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় চত্ত্বরে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মচারী এবং অভিভাবকসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অংশ নেয়।
নির্যাতিত শিক্ষকের ছেলে তানভীর মাহমুদ বাদি হয়ে ৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৩-৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে মামলা করেছে দৌলতপুর থানায়।
শিক্ষক নির্যাতনের প্রতিবাদের এই মানববন্ধন সমাবেশে ছাতারপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিয়াজুল ইসলাম বলেন, গত ১৮ জুলাই মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার সময় ছাতারপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক সহিদুল হক (৫৭) বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে বসে ছিলেন। এসময় বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা তহমিদুর রহমানের নির্দেশে অভিভাবক সদস্য জয়নাল আবেদিন এবং বিদ্যালয়ের সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী আশিক ইসলাম শিক্ষক সহিদুল ইসলামের উপর দেশীয় অস্ত্র ও রড দিয়ে হামলা চালায়। এসময় তাকে মাথায় গুরুত্বভাবে রক্তাক্ত করে আহত করেন। হামলায় আহত শিক্ষক সহিদুলকে তার সহকর্মীরা রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করে।
নির্যাতিত জ্যেষ্ঠ্য সহকারী শিক্ষক সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সম্প্রতি বিদ্যালয়ে ৪টি শুন্যপদে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগদানকে কেন্দ্র করে ম্যানেজিং কমিটি আমার উপর ক্ষুব্ধ হন। তারই জেরে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে আমার উপর এই হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে’। বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভপতি তহমিদুর রহমানের নেতৃত্বে বিদ্যালয়ের কর্মচারীসহ আরও ২-৩ জন লাঠি লোহার রড ও দেশীয় অস্ত্রসহ আমার উপর অতর্কিত হামলা করে মারধর করে। আমি এই নির্মম নির্যাতনের বিচারসহ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি তহমিদুর রহমানের অপসারণ দাবি করছি।
সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক নূরে আলম ফরহাদ, অফিস সহকারী শিবলী আল ফারুকী, আরমান আলী, শিক্ষার্থী সাজ্জাদ মাহমুদ লিমন, জেনিফা তাসনিম, সোহানুর রহমনার, মায়া খাতুন প্রমুখ।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম জানান, স্কুল শিক্ষকের উপর হামলা ও মারধরের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার এজাহার নামীয় প্রধান আসামী বিদ্যালয়ের সভাপতি তহমিদুর রহমানকে গ্রেফতার করেছি। বাঁকীদেরও গ্রেফতারে পুলিশী অভিযান চলছে।
এবি/টিএ