বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের নেতৃত্বে ‘জাতীয় নাগরিক কমিটি’ নামের এক প্ল্যাটফর্ম ঘোষণা করা হয়েছে। মুহাম্মাদ নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীকে আহ্বায়ক, আখতার হোসেনকে সদস্য সচিব এবং সামান্তা শারমিনকে মুখপাত্র করে মোট ৫৫ সদস্যের এই জাতীয় নাগরিক কমিটি গঠন করা হয়েছে।
রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে এর ঘোষণা দেওয়া হয়।
কমিটিতে আছেন– ১। আহ্বায়ক- মুহাম্মাদ নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, ২। সদস্য সচিব- আখতার হোসেন, ৩। মুখপাত্র- সামান্তা শারমিন।
সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন– ৪। আরিফুল ইসলাম আদীব, ৫। সাইফ মোস্তাফিজ, ৬। মনিরা শারমিন, ৭। নাহিদা সারোয়ার চৌধুরি, ৮। সারোয়ার তুষার, ৯। মুতাসিম বিল্লাহ, ১০। আশরাফ উদ্দিন মাহদি, ১১। আলাউদ্দিন মোহাম্মদ, ১২। অনিক রায়, ১৩। জাবেদ রাসিন, ১৪। মো. নিজাম উদ্দিন, ১৫। সাবহানাজ রশীদ দিয়া, ১৬। প্রাঞ্জল কস্তা, ১৭। মঈনুল ইসলাম তুহিন, ১৮। আব্দুল্লাহ আল আমিন, ১৯। হুযাইফা ইবনে ওমর, ২০। শ্রবণা শফিক দীপ্তি, ২১। সায়ক চাকমা, ২২। সানজিদা রহমান তুলি, ২৩। আবু রায়হান খান, ২৪। মাহমুদা আলম মিতু, ২৫। অলিক মৃ, ২৬। সাগুফতা বুশরা মিশমা, ২৭। সৈয়দ হাসান ইমতিয়াজ, ২৮। তাসনিম জারা, ২৯। মোহাম্মদ মিরাজ মিয়া, ৩০। মো. আজহার উদ্দিন অনিক।
৩১। মো. মেসবাহ কামাল, ৩২। আতাউল্লাহ, ৩৩। এস. এম. শাহরিয়ার, ৩৪। মানজুর- আল- মতিন, ৩৫। প্রীতম দাশ, ৩৬। তাজনুভা জাবীন, ৩৭। অর্পিতা শ্যামা দেব, ৩৮। মাজহারুল ইসলাম ফকির, ৩৯। সালেহ উদ্দিন সিফাত, ৪০। মুশফিক উস সালেহীন, ৪১। তাহসীন রিয়াজ, ৪২। হাসান আলী খান, ৪৩। মো. আব্দুল আহাদ, ৪৪। ফয়সাল মাহমুদ শান্ত, ৪৫। মশিউর রহমান, ৪৬। আতিক মুজাহিদ, ৪৭। তানজিল মাহমুদ, ৪৮। আবদুল্লাহ আল মামুন ফয়সাল, ৪৯। মো. ফারহাদ আলম ভূঁইয়া, ৫০। এস.এম. সুজা, ৫১। মো. আরিফুর রাহমান, ৫১। কানেতা ইয়া লাম লাম, ৫২। সৈয়দা আক্তার, ৫৩। স্বর্ণা আক্তার, ৫৪। সালমান মুহাম্মাদ মুক্তাদির, ৫৫। আকরাম হুসেইন।
মুহাম্মদ নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক নেতা। ২০২২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর এবি পার্টিতে যোগ দেন তিনি। সর্বশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে সমাজসেবা সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন নাসীরুদ্দীন।
আখতার হোসেন ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক। তিনিসহ কিছু শিক্ষার্থী ২০২৩ সালে ‘গণতান্ত্রিক ছাত্র শক্তি’ নামে একটি ছাত্রসংগঠনের ঘোষণা দেন। গণতান্ত্রিক ছাত্র শক্তি প্রতিষ্ঠার আগে আখতার ছিলেন ডাকসুর সাবেক ভিপি নূরুল হক নূরের সংগঠন ছাত্র অধিকার পরিষদে। পরে সেই সংগঠন থেকে বেরিয়ে নতুন সংগঠন গড়ে তোলেন তারা।
কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সাবেক শিক্ষার্থী এবং নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীদের নেতা হিসেবে পরিচিত।
কমিটির প্রাথমিক কাজ হবে-
১. ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত হওয়া সামষ্টিক অভিপ্রায় ও গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে সমুন্নত রাখা।
২। ছাত্র-জনতার ওপর সংঘটিত নির্মম হত্যাযজ্ঞে জড়িতদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কর্মসূচি গ্রহণ করা।
৩। রাষ্ট্রের জরুরি সংস্কার ও পুনর্গঠন করার লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা ও জবাবদিহিতার পরিসর তৈরি করা।
৪। বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক উদ্যোগের সাথে আলোচনা, মত বিনিময় ও গণমুখী কর্মসূচির মাধ্যমে সর্বস্তরের জনতাকে সংহত করার লক্ষ্যে কাজ করা।
৫। দেশের সর্বস্তরের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় নেতৃত্বকে সংহত করে গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা সমুন্নত করে রাখার লক্ষ্যে ফ্যাসিবাদী কাঠামো ও শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ অব্যাহত রাখা।
৬। জনস্বার্থের পক্ষে নীতি নির্ধারণের লক্ষ্যে বিভিন্ন শ্রেনি-পেশার মানুষ এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে বিষয়ভিত্তিক সংলাপের আয়োজন করা।
৭। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহ পুনর্গঠনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নীতি নির্ধারণী প্রস্তাবনা তৈরি ও সেটা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক পদক্ষপ গ্রহণ করা।
৮। গণপরিষদ গঠন করে গণভোটের মাধ্যমে নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান তৈরির জন্য গণআলোচনার আয়োজন করা।
এর আগে, শনিবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণ ও সহস্রাধিক নিহত ও আহতদের আত্মত্যাগে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটেছে। এর দ্বিতীয় ধাপে তারা নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের লক্ষ্য অর্জন করতে চান। এই কমিটি নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রণয়ন নিয়ে নানা রাজনৈতিক পক্ষ ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক উদ্যোগের সঙ্গে মত বিনিময় করবে। পরে সে অনুযায়ী দেশের জনগণকে সংগঠিত করতে চান তারা।
কেন্দ্রীয় কমিটির পর ৬৪ জেলা, ১২ মহানগর এবং এরপর থানা পর্যায়েও কমিটি হবে। এদিকে, আজ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের সফর শুরু হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে ঢাকা বিভাগের মুন্সিগঞ্জে রয়েছে মতবিনিময় সভা।
আমার বার্তা/এমই