চলতি বছরের জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরু হয়েছিল সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক এ আন্দোলন দমনপীড়নের মাধ্যমে থামানোর চেষ্টা হয়। রাজনৈতিক তৃতীয় পক্ষ আখ্যা দিয়ে এ আন্দোলনের যৌক্তিকতাও দাবিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়। পরে শিক্ষার্থীরা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মতো একটি মঞ্চ গড়ে তোলে। এ মঞ্চ দফায় দফায় তাদের দাবি জানায়। কিন্তু সাবেক সরকার তখনও দমনপীড়নের পথেই চলতে থাকে। বলপ্রয়োগ করে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা অব্যাহত রাখে।এক পর্যায়ে এ আন্দোলন এক দফায় গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। ফলে সরকারকে পদত্যাগ করতে হয়। সেনা মধ্যস্থতায় অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর তাদের কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে। তাদের সামনে রয়েছে অসংখ্য চ্যালেঞ্জ এবং দায়িত্ব। দায়িত্ব নেওয়ার পর তাদের সামনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় রয়েছে যেদিকে মনোযোগ গভীর করার কোনো বিকল্প নেই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখনও পুরোপুরি কার্যকর হয়নি সংবাদমাধ্যমে তা বলা হয়েছে। জননিরাপত্তা এখনও দেশের অনেক স্থানেই নিশ্চিত করা যায়নি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিশেষ করে পুলিশের প্রতি জুলাই ও আগস্টে জনআস্থার সংকট দেখা দিয়েছে। তাদের প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বটে তবে তাদের কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়েই প্রতিষ্ঠিত করতে হবে আস্থা। ইতোমধ্যে পুলিশ বাহিনীতে সংস্কারের কিছু দাবি উত্থাপিত হয়েছে। সেগুলোর অনেক কিছু বাস্তবায়নে দীর্ঘ সময় প্রয়োজন। তবে এ মুহূর্তে যেগুলো বাস্তবায়নযোগ্য সেদিকে মনোযোগ দেওয়া জরুরি। আমরা দেখছি, অনেক স্থানেই শিক্ষার্থী এমনকি এলাকার মানুষ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সজাগ রয়েছে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেভাবে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে সাধারণ শিক্ষার্থী বা মানুষের পক্ষে তা অনেকাংশে সম্ভব নয়।
ফলে অনেক স্থানে বিশৃঙ্খলার শঙ্কাও থেকে যায়। এসব শঙ্কা দূর করার স্বার্থেই জননিরাপত্তার দিকে মনোযোগ বাড়াতে হবে। আমাদের বিচারব্যবস্থা অনেকাংশেই স্থবির হয়ে পড়েছিল এই জনঅভিযোগ এড়ানো যাবে না। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজও অনেকাংশে আটকে থাকে। তখন বিচায়ালয়ে সুষ্ঠু বিচার কার্যক্রম করাও কঠিন হয়ে পড়ে। অনেক স্থানে আদালত এখনও চালু হয়নি। শুধু তাই নয়, বেশ কিছু স্থানে অবকাঠামোয় ভাঙচুর হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আদালত বা বিচার বিভাগের অবকাঠামো কার্যোপযোগী করা জরুরি। তা ছাড়া অনেক স্থানে সরকারি আইনজীবীরা এখনও কাজে যুক্ত হননি। তাদের ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে হবে। অনেক বিচারকার্য দীর্ঘায়িত হচ্ছে। মামলাজটের বিষয়টি আমাদের অজানা নয়। শুধু জুলাই ও আগস্টে নানা অপরাধের বিচারকার্যই নয়, তার আগের স্বাভাবিক বিচার কার্যক্রম স্বাভাবিক করারও উদ্যোগ নিতে হবে। ২৫ আগস্ট জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, 'গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করা হবে এবং ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ নিশ্চিত করা হবে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানকে সফল পরিণতি দিতে প্রশাসন, বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনব্যবস্থা, আইনশৃঙ্খলা খাত এবং তথ্যপ্রবাহে প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পূর্ণ করে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করা হবে। এর লক্ষ্য হবে দুর্নীতি, লুটপাট ও গণহত্যার বিরুদ্ধে একটি জবাবদিহিতামূলক রাজনৈতিক বন্দোবস্তের সূচনা।’ তবে বিচার বিভাগের সংস্কার ও দ্রুত কার্যকর করার উদ্যোগ না নিলে এ কাজ অনেকটা কঠিন হয়ে উঠবে। বিগত সরকারের আমলেই আমাদের অর্থনীতি অনেকটাই ধীরগতির হয়ে পড়ে। রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে নেওয়া অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন, খেলাপি ঋণ, রপ্তানি আয় হ্রাস পাওয়া, আর্থিক খাতের দুরবস্থা, রিজার্ভ সংকট ইত্যাদি বিষয় রয়েছে। আর্থিক খাতে দুর্নীতি নতুন কিছু নয়।
শুধু তাই নয়, বাজারে অনিয়ম-বিশৃঙ্খলার পেছনে দায়ী সিন্ডিকেট বা চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। কোনো পক্ষই যেন নতুন করে আবার এ সিন্ডিকেট গড়তে না পারে সেদিকে মনোযোগ বাড়াতে হবে।সরকারি- বেসরকারি প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা শনাক্ত করতে হবে। তাদের আলোচনার মাধ্যমে সংকট চিহ্নিত করার পাশাপাশি সমাধানের পরামর্শ খুঁজে বের করতে হবে। সমন্বিতভাবে যখন এমন উদ্যোগ নেওয়া হবে তখন আমাদের অর্থনীতি আবার গতি ফিরে পাবে। একটি কথা মনে রাখতে হবে, অন্তর্বর্তী সরকার স্বল্পসময়ের জন্য দায়িত্ব পালন করবে। তাদের পক্ষে বড় সময় পাওয়া সম্ভব নয়। পরে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে নতুন যে সরকার আসবে তাদের জন্য একটি মঞ্চ গড়ে যেতে হবে। এ মুহূর্তে বিভিন্ন খাতে সংস্কার করতে হবে। স্বচ্ছতা-জবাবদিহি নিশ্চিত করার মাধ্যমে আর্থিক প্রতিষ্ঠান যখন সুসংহত করা হবে তখন নতুন সরকারের জন্য কাজ করা সহজ হবে। সংস্কারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপগুলো নিয়ে ভাবতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার পর অনেকেই নানা দাবিদাওয়া নিয়ে সোচ্চার হয়ে উঠছেন। বৈষম্যের শিকার অনেকেই তাদের দাবিদাওয়া নিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠছেন। তাদের দাবি যৌক্তিক হলেও এ মুহূর্তে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে উত্থাপন করা ঠিক নয়। কারণ বিগত সরকারের সব অসঙ্গতি অল্প কিছুদিনে অন্তর্বর্তী সরকার সমাধান করতে পারবে না। বরং এসব দাবিদাওয়া উত্থাপনের ফলে অন্তর্বর্তী সরকার এ মুহূর্তে জরুরি যে বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করবে তার পথে বাধা তৈরি হচ্ছে। মনে রাখতে হবে, সদ্য সরকার পতনের পর আকস্মিকভাবে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। প্রশাসন থেকে শুরু করে প্রতিটি ক্ষেত্রে এখনও অন্তর্বর্তী সরকার সমন্বয় করতে পারেনি এবং এজন্য তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে তাদের কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। কারণ দায়িত্বে থাকা উপদেষ্টারা এখনও দাপ্তরিক ফাইলপত্র আর বিগত সরকারের অর্ধসমাপ্ত কাজ পুরোপুরি বুঝে উঠতে পারেননি।
এজন্য তাদের অন্তত কিছুদিন সময় দিতে হবে। দুর্নীতি নির্মূল করার বিষয়টি এখন প্রথম গুরুত্বপূর্ণ কাজ। দাপ্তরিক নথি ঘেঁটে কোথায় দুর্নীতি হয়েছে, এখনও দুর্নীতি চলছে এসব সমীক্ষা খুঁজে বের করা কিছুদিনের কাজ নয়। এর জন্য অনেক সময় দেওয়া জরুরি। সংস্কার শুরু করার আগেই যদি বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দাবিদাওয়া উঠে আসতে শুরু করে তখন অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। দেখা যাচ্ছে প্রায় প্রতিদিনই নানা দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করছে বিভিন্ন সংগঠন। অন্তর্বর্তী সরকার চাকরিজীবী, পেশাজীবী, ব্যবসায়ী, শ্রমজীবীসহ নানা স্তরের মানুষের বিভিন্ন দাবির মুখে রয়েছে। নতুন এই সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর নিজ নিজ দাবি আদায়ে রাস্তায় নামেন তাঁরা। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে সচিবালয়, প্রেস ক্লাব, শাহবাগ ও প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের আশপাশ ঘিরে বিভিন্ন কর্মসূচি থাকায় এসব এলাকায় পথচারী এবং যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়। এছাড়াও বিভিন্ন অফিসে নিজ নিজ দপ্তরে বিক্ষোভ, সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে এসব দপ্তরের সার্বিক কাজ ব্যাহত হচ্ছে। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর মাত্র তিন সপ্তাহ ধরে দায়িত্ব নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এই অল্প সময়ের মধ্যে তারা কিছু কাজ গুছিয়ে ওঠার আগেই পেশাজীবীসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ নিজ নিজ দাবিতে নানা কর্মসূচি দিতে থাকেন, যা এক ধরনের চাপের মধ্যে ফেলে বর্তমান সরকারকে। এক সপ্তাহ আগে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে প্রতিদিন সচিবালয়ে, আমার অফিসের আশপাশে, শহরের বিভিন্ন স্থানে সমাবেশ করা হচ্ছে। গত ১৫ বছরের অনেক দুঃখকষ্ট আপনাদের জমা আছে। সেটা আমরা বুঝি। কিন্ত আমাদের যদি কাজ করতে না দেন, তাহলে এই দুঃখ ঘোচানোর সব পথ বন্ধ হয়ে থাকবে। আপনাদের কাছে অনুরোধ, আমাদের কাজ করতে দিন।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দাবিদাওয়া নিয়ে মাঠে নামে একাধিক গ্রুপ। গত ২০ আগস্ট কিছু এইচএসসি পরীক্ষার্থী সচিবালয়ে ঢুকে স্থগিত পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানায়। তারা সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের ১৮ তলায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে উঠে যায়। শিক্ষার্থীরা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ দপ্তরের সামনে অবস্থান নেয়। এ সময় সচিবালয়ের সব প্রবেশপথ আটকে দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে তাদের দাবি মেনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিলের ঘোষণা দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার পর থেকে জোরালো হয় অন্যদের আন্দোলন। তারা মনে করে, চাপ দিলেই দাবি আদায় সম্ভব। গত কয়েক দিনে অন্তত অর্ধশত গ্রুপ দাবি আদায়ে সভা-সমাবেশ করে। এর মধ্যে চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তর বা জাতীয়করণের দাবিই বেশি। যেহেতু এসব দাবি পূরণে বড় অঙ্কের আর্থিক বিষয় রয়েছে, তাই এ ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে হুট করে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়। সবচেয়ে বড় ঘটনা ঘটে আনসারদের বিষয়টি। আনসার সদস্যরা তাঁদের চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে সচিবালয়ের আশপাশে অবস্থান নিয়ে পুরো এলাকা বন্ধ করে দেন। এমনকি সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও ঢুকতে ও বের হতে বাধা সৃষ্টি করেন। এক পর্যায়ে ওই দিন রাতে তাঁরা বেশ কয়েকজন উপদেষ্টাকেও সচিবালয়ে অবরুদ্ধ করে ফেলেন। এর মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একধিক সমন্বয়ক ছিলেন। খবর পেয়ে শিক্ষার্থীরা সেখানে গেলে সংঘর্ষে ৫০ জনেরও বেশি আহত হন। পরে সেনাসদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরি-কাম- প্রহরী পদটি জাতীয়করণসহ তিন দফা দাবি আদায়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি করেন তাঁরা। ওই দিন কয়েক হাজার লোকের সমাগমে প্রেস ক্লাবের আশপাশের সড়ক বন্ধ হয়ে যায়।
অন্তর্বর্তী সরকার চাইলেও এখন সব ধরনের দাবি মেনে নিতে পারবে না। আমাদের অর্থনীতির অবস্থা অনেক খারাপ। এখন উচিত আমাদের সম্মিলিতভাবে অন্তর্বর্তী সরকারকে নানা ক্ষেত্রে সহায়তা করা। যেমন বন্যা পরিস্থিতিতে সারা দেশের মানুষ একত্র হয়ে যে সমন্বয় দেখিয়েছে তা দীর্ঘদিন দেখা যায়নি। এ উচ্ছ্বাসটি জিইয়ে রাখতে হবে। এভাবে অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য কাজ করাও সহজ হবে। দেশে আস্তে আস্তে রেমিট্যান্স আসতে শুরু করেছে। বিভিন্ন জায়গায় পুনর্গঠনের কাজে এ অর্থনৈতিক গতি কাজে লাগাতে হবে। কিন্তু সবার দাবিদাওয়া মেনে নেওয়া বা এসব নানা অসমাপ্ত বিষয় আবার পুনরুজ্জীবিত করার সুযোগ তো অন্তর্বর্তী সরকারের নেই। ফলে মানুষকেও সচেতন হতে হবে। হ্যাঁ, সবারই অধিকার আছে। বৈষম্যের বিরুদ্ধেই তো আন্দোলন হয়েছে। সামনে যেন তা না হয় সেদিকেই সবার মনোযোগ থাকা জরুরি। অতীতের দায়ভার যাদের তাদের সে দায় এ নতুন সরকারের ওপর চাপালে তা আমাদেরই ক্ষতি ডেকে আনবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জানেন, বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ক্ষোভ, দুঃখ, বঞ্চনা আছে। তাঁদের কণ্ঠ তো রোধ করা যাবে না। তাঁদের বলতে দিতে হবে। আর সরকারের সামনেও সুযোগ, গণমানুষের সমস্যা শোনার। কিন্তু তাঁরা যেভাবে রাস্তায় নেমে আন্দোলনের মাধ্যমে তাঁদের কথাগুলো বলছিলেন, তা আসলে সরকারের জন্য চাপে পরিণত হয়। এই চাপ বা জবরদস্তি থেকে সবাইকে সরে আসতে হবে। ধৈর্য ধারণ করতে হবে। এত তাড়াহুড়া করলে হবে না। গত পনের বছরের জমানো জটিলতা এক দুই মাসেই সমাধান করা যায় কি না সেটাও বিবেচনায় রাখুন এবং তাদেরকে সময় দিন।নতুন অন্তর্বর্তী সরকারকে সংস্কার করার কাজে সহযোগিতা করুন এবং ধৈর্য ধারণ করে তাদেরকে সময় দিন। এতে আপনারা যেমন উপকৃত হবেন সাথে সাথে দেশ ও দেশের মানুষ উপকৃত হবে।
লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট, যুক্তরাজ্য।
আমার বার্তা/জেএইচ