নিখোঁজের দুইদিন পর ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী নয়ন চন্দ্র নাথের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল ৭টার দিকে ফরিদপুর সদর উপজেলার মুন্সিবাজার এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত নয়ন ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার আজিজপুর গ্রামের মৃত দিলীপ চন্দ্র নাথের ছেলে। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন তিনি।
গত ৩ নভেম্বর থেকে শুরু হয় পঞ্চম বর্ষের শেষ পেশাগত মেডিকেল পরীক্ষা। এ পরীক্ষায় ছয়টি লিখিত পরীক্ষা হওয়ার কথা। নয়ন তিনটি পরীক্ষায় অংশ নেন। গত বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) ছিল চতুর্থ পরীক্ষা। সকাল ১০টা থেকে পরীক্ষা শুরু হয়। কিন্তু নয়ন অন্তত এর সোয়া এক ঘণ্টা আগে ছাত্রাবাস থেকে বের হয়ে যান। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তার সহপাঠীরা বিষয়টি শনাক্ত করেছেন। এরপর থেকে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। নয়নের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ এস এম খবিরুল ওইদিন বিকেলে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকাল ৭টার দিকে ফরিদপুর সদর উপজেলার মুন্সিবাজার এলাকায় বাইপাস সড়কের পাশে একটি করাত কলে কাঠের সঙ্গে গলায় রশি দেয়া অবস্থায় নয়নের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পায় এলাকাবাসী। পরে এলাকাবাসী তার সহপাঠীদের খবর দিলে তারা গিয়ে মরদেহটি শনাক্ত করেন।
নয়নের সহপাঠীরা বলেন, নয়নের ইচ্ছে ছিল সার্জারি চিকিৎসক হওয়ার। কিন্তু ডান হাতের দুটি আঙুল যুক্ত থাকায় তিনি সার্জন হতে পারবেন না বলে জানান চিকিৎসকেরা। এ কথা শোনার পর নয়ন বেশ কিছুদিন ধরে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশের সেকেন্ড অফিসার এসআই বিল্লাল হোসেন জানান, পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলার প্রস্তুতি চলছে।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ এস এম খবিরুল বলেন, এটি একটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার পর এমন ঘটনা আর ঘটেনি। আমরা শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে শক্তি অর্জন করার শিক্ষা দিয়ে আসছি। তারপরও এ জাতীয় ঘটনা মেনে নেয়া যায় না।
আমার বার্তা/১৬ নভেম্বর ২০১৯/রহিমা