বাংলাদেশ ব্যাংক নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণের সুদ হার ১১ শতাংশ এবং আমানতের সুদ হার ৭ শতাংশ বেঁধে দিয়েছে। গত সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রজ্ঞাপনে এ নির্দেশনা দেয়া হয়, যা জুলাই থেকে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়। দেশের সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের কাছে এ সংক্রান্ত পত্র পাঠানো হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিদ্যমান বাজার হারের সঙ্গে সামঞ্জস্য না রেখে, তুলনামূলক উচ্চ সুদ বা মুনাফায় আমানত গ্রহণের ফলে অযৌক্তিকভাবে প্রতিষ্ঠানগুলোর তহবিল ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর প্রভাবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে উচ্চ সুদ বা মুনাফার হারে গ্রাহকের অনুক‚লে ঋণ বা লিজ বা বিনিয়োগ সুবিধা প্রদান করতে হচ্ছে। এতে ঋণগ্রহীতাদের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে। এ ছাড়া খেলাপি ঋণের পরিমাণ ও হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলশ্রæতিতে উৎপাদনসহ সামগ্রিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
এমন অবস্থায় আমানত সংগ্রহের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সুদ বা মুনাফার হার ৭ শতাংশ এবং ঋণ বা বিনিয়োগের সুদ বা মুনাফার কার্যকর হার ১১ শতাংশ নির্ধারণ করা হলো।
ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণের বিপরীতে ১২ শতাংশের বেশি সুদ আদায় করতে পারবে না। যদিও ব্যাংকের সর্বোচ্চ সুদ নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানেরও ঋণের সর্বোচ্চ সুদ হার বেঁধে দিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ গত রোববার এই বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। তবে ব্যাংকের সর্বোচ্চ সুদ ৯ শতাংশ হলেও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে তা হবে আরও ৩ শতাংশ বেশি। কারণ, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ঋণ দেয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো।
গত ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ক্রেডিট কার্ড ছাড়া ব্যাংকের সব ধরনের ঋণের সুদ হার ৯ শতাংশ বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে নতুন ও পুরোনো সব ধরনের ঋণে সুদ হার হয় ৯ শতাংশ। আর গত বছরের আগস্টে মেয়াদি আমানতের সুদ হার গড় মূল্যস্ফীতির চেয়ে কম না হওয়ার শর্ত দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে আমানতের সর্বনি¤œ সুদ হার হয় প্রায় ৬ শতাংশ।
তবে অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা সুদ হার বেঁধে দেয়া নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায়। সুদ হার বাজার ব্যবস্থার ওপর ছেড়ে দেয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন। এখন উল্টো আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সুদ হার বেঁধে দিতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।