দীর্ঘ জল্পনার অবসান ঘটিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্ট টুইটার কিনে নিয়েছেন মার্কিন ধনকুবের, ইলেকট্রিক গাড়ি নির্মাতা ও প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক। রেকর্ড ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম এই সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মটি অধিগ্রহণের প্রস্তাবও গ্রহণ করেছে টুইটারের পরিচালনা পর্ষদ।
এরপরই বিভিন্ন বিষয়ে গুঞ্জন ওঠে আকাশে-বাতাসে। প্রশ্ন উঠেছে সদ্য মালিকানা পাওয়া ইলন মাস্কের অধীনে টুইটারের বর্তমান প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পরাগ আগরওয়ালের চাকরি বহাল থাকা নিয়ে। একইভাবে গুঞ্জন ওঠে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের টুইটারে ফেরা-না ফেরা নিয়েও।
মালিকানা পরিবর্তন হওয়ায় সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্লাটফর্মটিতে ফিরতে পারেন বলে আশা করেছিলেন তার ভক্ত-সমর্থকরা। তবে তাদের এই আশায় কার্যত পানি ঢেলে দিয়েছেন সাবেক এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট।
মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি আর টুইটারে ফিরবেন না। মালিকানা পরিবর্তনের পর এখন যদি তার বন্ধ থাকা অ্যাকাউন্টটি খুলেও দেওয়া হয়, তবুও তিনি ফিরবেন না।
যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের প্রতীক ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল ভবনে হামলা ও সহিংসতা চালাতে সমর্থকদের উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে গত বছরের জানুয়ারিতে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও টুইটারে নিষিদ্ধ হন ট্রাম্প। ট্রাম্প সমর্থকদের সেদিনের সেই ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তাসহ পাঁচজন নিহত হয়েছিলেন। এই হামলার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের ভিত কেঁপে উঠেছিল।
এই ঘটনার পর ট্রাম্পের টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়। ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ব্যবহার হওয়া ওই অ্যাকাউন্টটিতে ট্রাম্পের প্রায় নয় কোটি ফলোয়ার ছিলেন। কিন্তু ক্যাপিটল হিলে হামলায় ডোনাল্ড ট্রাম্প উসকানি দিয়েছেন, এমন অভিযোগ তুলে টুইটার কর্তৃপক্ষ বিশ্বের ক্ষমতাধর ব্যক্তিটির অ্যাকাউন্ট চিরতরে বন্ধ করে দেয়।
তবে টুইটারে নিজের বন্ধ অ্যাকাউন্ট ফেরত পেতে গত বছরের অক্টোবরে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সাবেক এই প্রেসিডেন্ট। অবশ্য এতে কোনো ফল হয়নি। এরপর সময় বদলেছে। বদলেছে ট্রাম্পের পরিকল্পনাও। অভিমানী ট্রাম্প এখন নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম নিয়ে কাজ করছেন।
আর এই কারণেই মন নেই টুইটারে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে সোমবার ট্রাম্প জানান, পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী সাত দিনের মধ্যে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে তার নিজের স্টার্টআপ ট্রæথ সোশ্যাল-এ যোগ দেবেন।
ট্রাম্পের ভাষায়, ‘আমি টুইটারে যাচ্ছি না। আমি ট্রæথ-এ থাকব।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইলন টুইটার কিনেছেন কারণ তিনি এটিতে উন্নতি করতে পারবেন বলে আমি আশা করি। তিনি একজন ভালো মানুষ, কিন্তু আমি ট্রæথেই থাকতে যাচ্ছি।’