ইসলামের সোনালী ইতিহাস থেকে জানা যায় যে, মুসলমানরা কখনো শত্রুর উপর আক্রমণ করতে যায়নি বরং প্রতিরোধ করতে গিয়েছে। শত্রুপক্ষ রাসুল সা.-এর সাথে নানান রকমের অপরাধ করেছিল, রাসুল সা. চাইলে আল্লাহ তাদেরকে নির্মূল করে দিতে পারতেন। তিনি সবসময় আল্লাহ তায়ালার নির্দেশের বাহিরে কোনকিছু করতেন না। আল্লাহ তায়া’লা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন, ‘আর যদি তোমরা শাস্তি দাও, তবে ঠিক ততটুকু শাস্তি দাও, যতটুকু তোমাদের দেয়া হয়েছে। আর যদি তোমরা সবর কর, তবে তাই তোমাদের জন্য উত্তম। (সূরা নাহল : ১২৬)। আল্লাহ তায়া’লা তাঁর প্রিয় রাসুলকে সম্পূর্ণ প্রতিশোধ গ্রহণ করার অনুমতি দিয়েছেন। তারপরেও তিনি নেননি, যখন তাদের আচরণে এ কথা প্রমাণ হয়ে গেছে যে, তারা কখনো সত্যকে মেনে নেবে না। তারা রাসুল সা.-এর মিশনকে শেষ করে দেওয়ার জন্য উন্মুক্ত তলোয়ার নিয়ে বের হয়ে পড়েছে। আর ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করেছে। এবং কিছু নামধারী মুসলিম কাফিরদের সহযোগিতা করেছে। তখন তিনি আল্লাহর নির্দেশে তাদের ব্যাপারে কঠোরতা অবলম্বন করেন, তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করেন। রাসুল সা. তাদের বিরুদ্ধে তলোয়ার উঠিয়েছেন। কিন্তু সামান্য পরিমাণ বাড়াবাড়ি করেননি, সীমাতিক্রমও করেননি। বরং ইনসাফ ও নৈতিকতার সকল দিক লক্ষ রেখেছেন। আল্লাহ তায়া’লা তাঁর রাসুলকে তাদের সাথে জিহাদ করার অনুমতি দিয়ে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন, ‘কখনো কাফিরদের আনুগত্য করো না। আর এ কুরআনকে সাথে নিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে জিহাদে অবতীর্ণ হও। (আল ফুরকান : ৫২)।
অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ তা’য়ালা কাফিরদের সাথে কঠোরতা অবলম্বন করার ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছেন এভাবেÑ ‘কাফির ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করো এবং তাদের সাথে কঠোরতা অবলম্বন করো। (আত-তাওবাহ : ৭৩)। আল্লাহ তা’য়ালা তাঁর রাসুলকে কাফেরদের সাথে লড়াই করার সময় সীমালঙ্ঘন না করার প্রতি নির্দেশ দেন, পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছেÑ ‘আর তোমরা আল্লাহর পথে সেই সব লোকদের বিরুদ্ধে লড়াই করো, যারা তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে। কিন্তু সীমালঙ্ঘন করো না। আল্লাহ তায়া’লা সীমালঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না। (আল বাকারা : ১৯০)।
যুদ্ধক্ষেত্রে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করার প্রতি আল্লাহ তায়া’লা তাঁর প্রিয় রাসুলকে নির্দেশ প্রদান করেন। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছেÑ ‘কোন বিশেষ দলের শত্রুতা যেনো তোমাদের এতদূর উত্তেজিত না করে দেয় যে, তার ফলে তোমরা ইনসাফ ত্যাগ করে বসবে। ইনসাফ করো, তা তাকওয়ার জন্য অধিক নিকটবর্তী। ( আল মায়েদা : ৮)। একথা সুস্পষ্ট যে যাদের বিরোধিতা ষড়যন্ত্র পর্যন্ত পৌঁছায়নি, অথবা যাদের ব্যাপারে একথা সুস্পষ্ট হয়নি যে তারা ঈমান আনবে নাÑ তাদের ব্যাপারে রাসুল সা. উপরোক্ত নীতি অবলম্বন করেননি।
লেখক : শিক্ষার্থী, মা’হাদুল ইকতিসাদ ওয়াল ফিকহীল ইসলামী, ঢাকা