মানুষ মানুষের জন্য। মানুষের কল্যাণের জন্যেই মানুষ। সব মাখলুক বা সৃষ্টিজীবকে বানানোই হয়েছে এই মানুষের কল্যাণের জন্য। উপকারের জন্য। মানুষ যদি বিপন্ন হয়, ক্ষতিগ্রস্ত হয় তার পাশে দাঁড়াতে হয়। এমন করে দাঁড়াবার প্রশিক্ষণ দিয়েছেন আমাদের প্রিয় নবীজী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু। সাহাবায়ে কেরাম পরোপকারের এই মানসিকতাই লালন করতেন। মহান আল্লাহ তায়ালা মানবজাতির পরিচয় এভাবে তুলে ধরেছেন, ‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি, মানুষের কল্যাণের জন্য তোমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে।’ (সূরা আল ইমরান : আয়াত ১১০)
মহানবীর এই শিক্ষার জ্বলন্ত উদাহরণ শাইখ আহমদুল্লাহ। আস্সুন্নাহ পরিবারের দাঈদের নিয়ে এবার ঝাঁপিয়ে পড়েছেন সিলেটে বন্যার্তদের মাছে। বন্যার্তরা এবার সঙ্গ পেয়েছেন আলেমদের। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দাঈ ও স্বেচ্ছাসেবি আলেমগণ বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। দেশের মানুষদের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশংসার শেষ ছিলো না।
নৌকায় ত্রাণের প্যাকেট সাজিয়ে আসসুন্নাহ ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবাীরা বন্যার্তদের কাছে ছুটে গিয়েছেন। তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। কার কি সমস্যা জানবার চেষ্টা করেছেন। বন্যার্ত মানুষের খোঁজ নিয়ে তাদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেয়া হয়েছে নানা রকম খাদ্য।
আমরা জানি, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে গোটা বিশ্বেই অর্থনৈতিক মন্দা তৈরি হয়েছে। দেশে বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম। এরই মাঝে সিলেটে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ বন্যা। বন্যায় সহায়-সম্পত্তি হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়ে হাজার হাজার পরিবার। নিজেদের দায়িত্ববোধ থেকে এই অসহায়দের পাশে দাঁড়াচ্ছে দেশের আলেম সমাজ।
সুন্নাহ ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সিলেটের গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, কোম্পানিগঞ্জ ও জৈন্তাপুরে দুই সহস্রাধিক বন্যা দুর্গত পরিবারের হাতে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন জরুরি ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছে। আলহামদু লিল্লাহ। এর মধ্য দিয়ে আপাতত খাদ্য সামগ্রী বিতরণ সম্পন্ন হলো।
তারা জানিয়েছেন, আবারও ইন-শা-আল্লাহ সাধ্যানুযায়ী বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ভিটেহারা ও ঘর-বাড়িহারা পরিবারের পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
এখন থেকে বন্যা তহবিলে যেসব অনুদান আসবে, তা বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসন কার্যক্রমে এবং সম্ভাব্য পরবর্তী বন্যা দুর্যোগের সময় দুর্গতদের জন্য ত্রাণ কার্যক্রমে ব্যয় করা হবে ইন-শা-আল্লাহ। মহান আল্লাহ সবার নেক প্রচেষ্টা কবুল করুন।
জানা যায়, সিলেটের বন্যাদুর্গতদের মাঝে আলেমদের বেশকিছু সেবা সংস্থা সহায়তার কাজ করে যাচ্ছে। এ সংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে স্বনামধন্য সেবা সংস্থা ‘আসসুন্নাহ ফাউন্ডেশন।’ সংস্থাটি এ পর্যন্ত কয়েক হাজার পরিবারকে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছে। এর মধ্যে চাল, মসুর ডাল, আলু, চিড়া, লবন, খেজুর,
সয়াবিন তেল, মরিচের গুড়া, হলুদের গুড়া, ধনিয়ার গুড়া, সাবান, ওরস্যালাইন, পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য।
এ ছাড়াও আল খায়ের ফাউন্ডেশন, হাফেজ্জী সেবা ফাউন্ডেশন, পিপলস ইমপ্রুভমেন্ট সোসাইটি অফ বাংলাদেশ (পিসব), বাসমাহ ফাউন্ডেশন, মানবিক টিম সিলেট, ফেসবুক গ্রুপভিত্তিক একটি সেবামূলক সংগঠন ‘উই আর বাংলাদেশ (ওয়াব)’, নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার মানবতার কল্যাণে নিয়োজিত সামাজিক সংগঠন ইউসুকা ফাউন্ডেশন, সাদাকা ফাউন্ডেশন ইউকেসহ আরও অনেক সংগঠন ও ব্যক্তিবর্গ।