ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক উদ্বোধনের দুই বছরের মাথায় সড়কের অন্তত ২৫ কিলোমিটার এলাকায় বড় বড় খানাখন্দ সৃষ্টি ও সড়ক দেবে গেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকায় অন্তত পাঁচ কিলোমিটার সড়ক দেবে গেছে। এতে ঘন ঘন দুর্ঘটনা এবং যানজটে বসে থেকে হাজার হাজার যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
মহাসড়ক ব্যবহারকারীরা বলছেন, অতিরিক্ত পণ্য পরিবহণের পাশাপাশি নিম্নমানের কাজের কারণে উদ্বোধনের দুই বছরের মাথায় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে দেশের অন্যতম বৃহত্তম এই মহাসড়কে। পরিবহণ নেতারা বলছেন, দুর্ভোগ লাঘবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বারবার জানিয়েও কোনো সুরাহা হচ্ছে না। আর সড়ক বিভাগ বলছে, বৃষ্টির মৌসুম শেষ হলে স্থায়ী সমাধান করা হবে। মহাসড়ক ব্যবহারকারীরা জানান, কয়েক মাস ধরে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কের কালিহাতীর এলেঙ্গা থেকে সদর উপজেলার তারটিয়া পর্যন্ত অন্তত ২৫ কিলোমিটার এলাকায় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে।
এছাড়া মির্জাপুর থেকে গোড়াই পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় পাঁচ কিলোমিটার সড়ক দেবে গেছে। সড়ক বিভাগের পক্ষ থেকে নামেমাত্র সংস্কার করা হলেও কয়েক ঘণ্টা পর আবার তা উঠে গিয়ে মহাসড়ক ব্যবহারকারীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
মহাসড়ক ব্যবহারকারীরা বলছেন, নিম্নমানের কাজ ও ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত পণ্য পরিবহণের কারণে অল্প দিনেই সড়কে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ঘন ঘন দুর্ঘটনার পাশাপাশি গন্তব্যে যেতে কয়েক গুণ বেশি সময় লাগছে। অনেক সময় গর্তে চাকা পড়ে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। দ্রুত টেকসই সংস্কার চান সড়ক ব্যবহারকারীরা।
সরেজমিন মহাসড়কের কান্দিলা, ঘারিন্দাসহ বিভিন্ন এলাকায় খানাখন্দ দেখা যায়। সকালে কাজ করলেও বৃষ্টির কারণে বিকালে আবার গর্তের সৃষ্টি হয়। এদিকে মির্জাপুর বাইপাস থেকে গোড়াই পর্যন্ত অন্তত পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় মূল সড়ক ২-৩ ইঞ্চি করে দেবে গেছে।
বাসচালক আরিফ মিয়া বলেন, চন্দ্রা থেকে কালিহাতীর এলেঙ্গা পর্যন্ত আগে ৮০ থেকে ৮৫ কিলোমিটার বেগে আসতে পারতাম। এখন ভাঙাচোরা ও গর্তের কারণে ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। এতে সময় বেশি লাগার পাশাপাশি গরমে ভোগান্তি পোহাতে হয়।
বাস ট্রাক চালকরা, বেহাল সড়কে গাড়ির স্টিয়ারিংয়ের লক ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটছে। আবার সড়কে পাথর বের হওয়ায় চাকাও ফুটে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত গাড়ির কাজ করাতে হচ্ছে। এই মহাসড়কটি সুবিধার চেয়ে বেশি ভোগান্তি দিচ্ছে।
জেলা সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি বলেন, প্রতিদিন ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে অন্তত ৩০ হাজার যানবাহন চলাচল করছে। খানখন্দের কারণে দুর্ঘটনা বেড়ে চলেছে। সড়ক বিভাগ, জেলা আইনশৃঙ্খলা ও উন্নয়ন কমিটির সভায় একাধিকবার আলোচনা করেও কোনো সুরাহা হয়নি। দ্রুত সড়কটি সংস্কার হলে আমাদের শ্রমিক ও যাত্রীদের জন্য ভালো হয়।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. সিনথিয়া আজমেরী খান বলেন, আব্দুল মোনেম লিমিটেড, ডিয়েনকো ও মীর আক্তার নামের তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কটি নির্মাণে কাজ করেছে। গত দেড় বছরে আব্দুল মোনেম লিমিটেডকে সড়ক সংস্কারের জন্য কোনো বিল দেওয়া হয়নি। সড়কটি সংস্কারের জন্য ঠিকাদারকে বারবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। দেবে যাওয়া অংশ দ্রুত মেরামত না করলে আব্দুল মোনেমের বিরুদ্ধে আর্থিক দণ্ডসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আমার বার্তা/এল/এমই