মায়ের সাথে সন্তানের সম্পর্ক হবে শাশ্বত, চিরস্থায়ী এবং অমর। তবে, মায়ের পর পরই সন্তানের জন্য একান্ত আপনজন হচ্ছেন বাবা। জন্মের পর বচ্চা যখন বুঝতে শিখে, তখন সবার প্রথম সে চিনতে পারে তার মাকে, এবং পর্যায়ক্রমে তার বাবাকে। তাই, বাচ্চার বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে শুধু মায়েরই নয়, বরং, বাবারও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে।
তাই, ছোট বেলা থেকেই মায়ের পাশাপাশি, বাবারও সন্তানের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলা জরুরী। মা-বাবার সংস্পর্শ সন্তানের জন্য একটি নিরাপত্তাবোধ তৈরী করে, এবং এগুলোই সন্তানের বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করে।
সন্তানের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলার বেশকিছু ক্ষেত্র বা পদ্ধতি রয়েছে। বাবাই হতে পারে সন্তানের জন্য একজন ভালো বন্ধু। কারণ, প্রত্যেকটি সন্তানই বাবার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব পোষণ করে। তাই, সন্তানের সাথে বাবার সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য অনুসরণ করতে পারেন কয়েকটি পদ্ধতি।
ছেলে এবং মেয়ের ভিন্নতা না দেখানো:
একটি বাচ্চা ছেলে অথবা মেয়ে হয়ে জন্ম নিবে, এটাই স্বাভাবিক। তাই, বাবা হিসেবে ছেলে বা মেয়ের প্রতি সমান বিচার করা প্রত্যেকেরই কর্তব্য। কোনোরকম খারাপ ধারণা বা ভেদাভেদ সৃষ্টি করা যাবেনা। সন্তান যাই হোক, গড়ে তুলতে হবে দৃঢ় বন্ধন।
বাচ্চার যত্নে অংশ নেওয়া:
মায়ের পরেই বচ্চা যেহেতু বাবাকে বুঝতে বা চিনতে শিখে, সেক্ষেত্রে, মায়ের পাশাপাশি বাবাকে সন্তানের যত্নে অংশ নিতে হবে, এবং এভাবে বাবার সাথে সন্তানের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়। সন্তানকে গোসল করানো, ডায়াপার পরানো গান শোনানো, খেলাধুলা করা ইত্যাদির মাধ্যমে বাবার প্রতি সন্তানের ভালবাসার টান অনুভব করবে। এমনটা মনে করবেন না যে, ছোট হিসেবে সে কিছুই বুঝতে পারেনা। এই ধারণা পুরোটাই ভুল। কারণ, বাচ্চা তার পারিপার্শ্বিক অবস্থা দেখে বুঝতে শিখে, বাবার সংস্পর্শ খুব ভালোভাবেই বুঝতে পারে। তাই, বাবা হিসেবে যতসম্ভব বাচ্চার সংস্পর্শে থাকুন।
বাচ্চার সাথে সময় ব্যয় করুন:
শুধু পছন্দের খাওয়া বা খেলনা কিনে দিলেই কর্তব্য শেষ হয়ে যায় না। প্রয়োজন পরে যথেষ্ট সময় ব্যয় করা। কারণ, বচ্চার মা-বাবার সংস্পর্শে থাকতে চায় সবসময়। আর পিতা হিসেবে বাচ্চার সাথে সুসম্পর্ক স্থাপনের জন্য বাচ্চার সাথে কোয়ালিটি সময় ব্যয় করা প্রয়োজন।
খারাপ ব্যবহার না করা:
বাইরে কার সাথে কি ঝামেলা বা মনোমালিন্য হয়েছে, সেটা বাইরেই ঝেড়ে ফেলে আসবেন। কখনই বাচ্চার সাথে খারাপ ব্যবহার করবেন না। বাচ্চার সাথে খারাপ ব্যবহার বা ভীতিকর পরিস্হিতির সৃষ্টি করা, বাচ্চার সাথে সুসম্পর্ক স্থাপনে ব্যাঘাত ঘটায়। এক্ষেত্রে বাচ্চা অনিরাপত্তাবোধ করবে।
পরিশেষে, বাচ্চার সাথে বাবার সুসম্পর্ক স্থাপনে অত্যন্ত সচেতন হতে হবে। কারণ, বাচ্চার সুন্দর এবং নিষ্চিত ভবিষ্যৎ গঠনে এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর, বাচ্চার সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করাই যদি বাবা হিসেবে আপনার লক্ষ্য হয়ে থাকে, তাহলে বাচ্চার সাথে আপনার সম্পর্ক হোক দৃঢ় এবং সমৃদ্ধ।
আমার বার্তা/এল/এমই