প্রবাসীদের ভোটের গোপনীয়তা রক্ষায় ডাক বিভাগের ‘থ্রি এনভেলপ সিস্টেম’ বা তিন স্তরের খাম পদ্ধতি কার্যকরভাবে ব্যবহার করা হলে কোনো ধরনের তথ্যফাঁস বা অনিয়মের আশঙ্কা থাকবে না বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
বুধবার (৮ অক্টোবর) আগারগাঁও ডাক ভবনে বিশ্ব ডাক দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রবাসীদের ভোটের গোপনীয়তা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘থ্রি এনভেলপ সিস্টেম’ (তিন খাম পদ্ধতি) অনুসরণ করলে পোস্টাল ব্যালটের গোপনীয়তা রক্ষা করা সম্ভব। প্রথম খামটি ব্যবহার করবে ডাক বিভাগ, দ্বিতীয়টি দূতাবাস এবং তৃতীয়টি থাকবে ভোটের ব্যালট হিসেবে।
তিনি বলেন, ডাক বিভাগকে আধুনিক ও জনগণের আস্থার প্রতিষ্ঠানে রূপ দিতে একটি ডিজিটাল ঠিকানা ব্যবস্থাপনা প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এ ব্যবস্থায় শহর ও গ্রামের বাড়িঘরের জন্য আলাদা করে এরিয়া কোড, স্ট্রিট কোড ও হাউস কোড নির্ধারণ করা হবে। বর্তমানে শহরের বাড়িঘরে নাম্বার থাকলেও তা এলোমেলো এবং অগোছালো। গ্রামের ক্ষেত্রে তো এখনো সুনির্দিষ্ট নম্বর ব্যবস্থা নেই। আধুনিক ঠিকানা ব্যবস্থার মাধ্যমে আমরা দেশব্যাপী একটি ডিজিটাল ম্যাপিং করতে চাই। এতে শুধু ডাক নয়, ই–কমার্স ও আর্থিক সেবাগুলোরও কার্যকারিতা বাড়বে।
ফয়েজ তৈয়্যব জানান, যুক্তরাষ্ট্রের মডেল অনুসরণে প্রতিবছর অটোমেটিক ডিজিটাল অ্যাড্রেস ইনভেন্টরি প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশও ধীরে ধীরে সেই পথে এগোবে, তবে বিদেশি মডেল ‘কপি–পেস্ট’ নয়— বরং দেশের বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পরিকল্পনা করা হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা পাইলট পর্যায়ে শহর ও গ্রামীণ দুই জায়গাতেই কাজ শুরু করব। শহরে জিও–ফেন্সিং ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রতিটি ঠিকানার ভৌগোলিক অবস্থান নিশ্চিত করা হবে। গ্রামে প্রতিটি বাড়ি নয়, বরং কয়েকটি বাড়িকে একত্রে ‘বিট ম্যাপ’ আকারে চিহ্নিত করা হবে।
ডাক বিভাগের আস্থা ও জনপ্রিয়তা ফিরে আনার বিষয়ে ফয়েজ তৈয়্যব বলেন, একসময় মানুষ ডাক বিভাগে নির্ভরশীল ছিল, এখন কুরিয়ার সার্ভিসে ঝুঁকেছে। আমরা আবারও সেই আস্থা ফিরিয়ে আনতে চাই। এজন্য সেবার মান, ট্র্যাকিং ও ডিজিটাল সিস্টেমে জোর দেওয়া হচ্ছে।
ডাক জীবনবীমা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ডাক জীবনবীমা বহু বছর ধরে চালু আছে। এখন আমরা এটাকে নতুনভাবে প্রমোট করতে চাই। কারণ, সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে এখানে প্রিমিয়াম কালেক্ট করা হলেও সেটেলমেন্ট না হওয়ার ঝুঁকি নেই। ডাক বিভাগের কাছে মানুষের ঠিকানার ঐতিহাসিক জ্ঞান ও আস্থা আছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আইসিটি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আব্দুন নাসের খান ও মহাপরিচালক এস এম শাহাব উদ্দীন।
আমার বার্তা/এমই