
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, মানবাধিকার একটি মূল্যবান আমানত, সামাজিক সুবিচারের রক্ষাকবচ। কখনো রাজনৈতিক স্বার্থ বা মতের কারণে অন্যের অধিকার হরণ করা যায় না।
বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি।
বিবৃতিতে জামায়াত আমির বলেন, “১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। ১৯৪৮ সালের এই দিনে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়। ১৯৫০ সালে এই দিনটিকে জাতিসংঘ বিশ্ব মানবাধিকার দিবস হিসেবে ঘোষণা দেয়। সেই থেকে বিশ্বজুড়ে এ দিনটি মানবাধিকার দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আজকের দিনে আমরা জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সমগ্র দেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, মানবাধিকার একটি মূল্যবান আমানত, সামাজিক সুবিচারের রক্ষাকবচ। কখনো রাজনৈতিক স্বার্থ বা মতের কারণে অন্যের অধিকার হরণ করা যায় না। সমাজে বিরোধ বা ভিন্নমত থাকতে পারে, তা সত্ত্বেও ভিন্নমতকে অপমান বা হেনস্তা করা এবং নারী ও অসামরিকদের অধিকার লঙ্ঘন করা সম্পূর্ণরূপে অবৈধ ও অনৈতিক। মানবাধিকার কখনো রাজনৈতিক স্বার্থ বা মতের কারণে হরণ করা যায় না। সমাজে বিরোধ থাকলেও, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে অপমান, হেনস্তা, গুম, বিচারহীনতা বা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের শিকার করা সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য।
তিনি বলেন, গাজাসহ পুরো ফিলিস্তিন, কাশ্মির, মিয়ানমার এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে। দুই বর্বর ইসরায়েলি বাহিনী মূলত মুসলিম জাতিগোষ্ঠী চিরতরে নির্মূল করার লক্ষ্যে গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে। খুনি ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলা থেকে নারী-শিশু-বৃদ্ধ, ছাত্র-শিক্ষক, ইমাম-মুয়াজ্জিন, বুদ্ধিজীবী কেউই রেহাই পাচ্ছেন না। যুদ্ধের সকল নিয়ম-নীতি ভূলুণ্ঠিত করে মানবতার দুশমন ইসরায়েলি বাহিনী ঠান্ডা মাথায় প্রায় ৭০ হাজারের বেশি বেসামরিক নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিকে নির্মমভাবে হত্যা এবং ১ লাখ ৭৫ হাজারের বেশি মুসলিমকে আহত করেছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। গাজায় চরম মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। সেখানকার ৮০ ভাগ বসতভিটা মাটির সাথে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। গাজাবাসীর জন্য চিকিৎসা সামগ্রী, ঔষধ, খাদ্য, পানি কোনো কিছুই ঢুকতে দিচ্ছে না মানবতার দুশমন বর্বর ইসরায়েলি বাহিনী। এর নিন্দা জানানোর কোনো ভাষা আমাদের জানা নেই।
তিনি আরও বলেন, কাশ্মির, মিয়ানমারের রাখাইন, লেবানন, ইউক্রেনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে আমরা অনতিবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করে মানবাধিকার সমুন্নত রাখা এবং ফিলিস্তিনের স্থায়ী সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের সকল মানবতাবাদী রাষ্ট্র, প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
আমার বার্তা/এমই

