কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) লোক প্রশাসন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন (২৩) ও তার মা ফাতেমা আক্তার (৫২) হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত, দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
সোমবার দুপুর পৌনে ১টায় কুমিল্লার কান্দিরপাড়ের পূবালী চত্বরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে কুমিল্লা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে যান এবং সড়ক অবরোধ করেন।
এসময় শিক্ষার্থীরা “তুমি কে আমি কে, সুমাইয়া, সুমাইয়া”, “আমার বোন মরলো কেন, প্রশাসন জবাব চাই”, “আমার বোন কবরে, খুনি কেন বাহিরে” ইত্যাদি স্লোগান দেয়।
মানববন্ধনে লোক প্রশাসন বিভাগের ১৪তম আবর্তনের শিক্ষার্থী হাসান অন্তর বলেন, "গতকাল রাতে কুমিল্লায় সুমাইয়া ও তার মাকে ভাড়া বাসায় হত্যা করা হয়েছে। এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আমরা হুঁশিয়ারি দিচ্ছি, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সঠিক তদন্ত না হলে কুমিল্লা শহর অচল করে দেওয়া হবে।"
নিহত সুমাইয়ার সহপাঠী মুনিয়া আফরোজ বলেন, "আমাদের সহপাঠী ও তার মায়ের নির্মম হত্যাকাণ্ডে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। এ ধরনের নৃশংস ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা চাই সুষ্ঠু তদন্ত হোক এবং জড়িত সবাইকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক, যেন আর কোনো পরিবার এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।"
আরেক সহপাঠী হুমাইরা তাসনীম প্রমি বলেন, "এই হত্যাকাণ্ড কেবল একটি পরিবার নয়, পুরো বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের জন্যই বেদনাদায়ক। আমরা বারবার এ ধরনের ঘটনার শিকার হতে চাই না। প্রশাসনকে অনুরোধ করছি সঠিক তদন্ত নিশ্চিত করতে হবে। অপরাধীরা যেই হোক না কেন, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ সাহস না পায়।"
কুমিল্লা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল হক চৌধুরী বলেন, "আমরা দ্রুততম সময়ে দোষীদের সনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনার চেষ্টা করব। ইতোমধ্যে কিছু আলামত পাওয়া গেছে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
উল্লেখ্য, গতকাল (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে কুমিল্লার উত্তর কালিয়াজুড়ি এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে সুমাইয়া এবং তার মায়ের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে ঘটনাটিকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে চিহ্নিত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সুরতহাল প্রতিবেদকের বক্তব্য অনুযায়ী, বিছানায় সামান্য রক্ত এবং গলায় কালো দাগ পাওয়া গেছে।
সুমাইয়ার শরীরের কোথাও রক্তের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে তার মা ফাতেমা আক্তারের চোখ এবং মুখ থেকে রক্ত বের হয়েছিলো। যদি বিষপান করে হত্যা করা হতো তাহলে মুখ থেকে লালা পড়তো।
আমার বার্তা/বুশরা আক্তার/এমই