জনকণ্ঠের সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও চাকরিচ্যুতি: ডিইউজের উদ্বেগ ও নিন্দাজনকণ্ঠ পত্রিকার একাধিক সাংবাদিকের ওপর বহিরাগতদের হামলা এবং পরবর্তীতে সাতজন সংবাদকর্মীকে আকস্মিকভাবে চাকরিচ্যুত করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)। সংগঠনটি এই ঘটনাকে পেশাগত স্বাধীনতা ও শ্রম অধিকার লঙ্ঘনের দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করে অবিলম্বে চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছে।
সোমবার (৫ মে ) ডিইউজের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান এক বিবৃতিতে বলেন, “জনকণ্ঠ পত্রিকার সংবাদকর্মীদের ওপর বহিরাগতদের দিয়ে হামলা এবং সাতজন সাংবাদিককে হঠাৎ করে চাকরিচ্যুতি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা এবং ন্যায্য শ্রমিক অধিকারের ওপর সরাসরি আঘাত। এ ধরনের ঘটনা কোনোভাবেই বরদাশতযোগ্য নয়।”
ডিইউজের দপ্তর সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস চৌধুরী স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে জানানো হয়, সাংবাদিকদের ভয়ভীতির মধ্যে রেখে কর্মস্থল থেকে বিতাড়ন করা এবং পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়া শুধু সাংবাদিকতার জন্যই নয়, পুরো সমাজ ও গণতন্ত্রের জন্য হুমকি।
ডিইউজে এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে হামলার পেছনের মদদদাতাদের আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে। একইসঙ্গে সাংবাদিকদের চাকরি থেকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত বাতিল করে পূর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ না করে মালিকপক্ষকে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছাতে হবে। সাংবাদিকদের পেশাগত স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার অপরিহার্য অংশ।
বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮) অনুযায়ী, কোনো প্রতিষ্ঠানে কর্মরত স্থায়ী কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করার ক্ষেত্রে তাকে লিখিতভাবে কারণ দর্শানোর সুযোগ দিতে হবে এবং উপযুক্ত শুনানির ব্যবস্থা করতে হবে।
আইনের ধারা ২৬ অনুযায়ী, “একজন কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করার আগে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ যাচাই করে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ প্রদান না করা অবৈধ।”
এ ছাড়া সাংবাদিকতা পেশা ‘গেজেটেড শ্রমিক’ হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় তাদের ক্ষেত্রেও শ্রম আইনের এই সুরক্ষা প্রযোজ্য। হঠাৎ করে চাকরিচ্যুতি কিংবা জোর করে পদত্যাগ আদায় শ্রম আইন পরিপন্থী বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
আমার বার্তা/এমই